‘আলসেমি’ আর না

মানুষের নেতিবাচক অভ্যোসগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘আলসেমি’। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ‘আলসেমি’ বংশগতভাবেই অনেকে ধারণ করেন। অনেকে আবার শারীরিক দুর্বলতার কারণেও ‘আলসেমি’ করে কিংবা যারা একটু মোটা তারাও ভোগেন এ ‘আলসেমি’তে।

মনস্তত্ত্ববিদদের মতে, ‘আলসেমি’ ব্যাপারটা মূলত একটা বিদঘুটে মনের ভাব। অলস হওয়ার প্রশ্রয় একবার পেয়ে বসলে ‘আলসেমি’টা স্বভাবে দাঁড়িয়ে যায়। তাই এটা কাটিয়ে উঠতে প্রথমেই যেটা দরকার তা হলো মনের জোর এবং নিজের কর্মক্ষমতার ওপর বিশ্বাস। ‘আমার কিচ্ছু করতে ইচ্ছা করছে না। এখন না, থাকুক। ওটা পরে করব। এখন একটু ঘুমিয়ে নিই।’ এ ধরনের মনোভাবকে ইচ্ছা করলেই দূর করে তাড়িয়ে দেয়া যায়। পুরো ব্যাপারটা আসলে নির্ভর করছে আপনার ওপর।

অনেকক্ষণ পরিশ্রম করার পর খুব বেশি ক্লান্তিবোধ করলে হাতের কাজ রেখে একটু বিশ্রাম নিন। শরীরটাকে এলিয়ে দিতে পারেন বিছানায়। তবে প্রতিদিন এটা করলে ধরে নিতে হবে আপনি ভারি অলস। এতে পড়াশোনা কিংবা কাজের যথেষ্ট ক্ষতি হবে।

আমাদের এই ছোট্ট জীবনে করার মতো কাজ অনেক কিন্তু সময় খুব কম। তাই ‘আলসেমি’ করে সময় নষ্ট করলে এক সময় পস্তাতে হবে। শরীরকে তো একটু-আধটু প্রশ্রয় দেবেন। তবে সেটা খুব বুঝেশুনে। কথায় বলে, ‘শরীরের নাম মহাশয়, যা সওয়াবেন তাই সয়’।

সময় নষ্ট করাকে প্রশ্রয় দিলে ‘আলসেমি’ আপনার অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাবে। আবার মনের জোরে যদি কাজে নেমে পড়তে পারেন, তাহলে দেখবেন ‘আলসেমি’ কোথায় পালাবে।

শুধু পড়াশোনা বা ক্যারিয়ারের ক্ষতি নয়, ‘আলসেমি’ সম্পর্কেরও ক্ষতি করে। এর কারণে নষ্ট হয়ে যেতে পারে কোনো মধুর সম্পর্ক। কারও সঙ্গে দেখা করার জন্যে নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিত হতে না পারলে আপনার প্রতি তার বিরূপ মনোভাব হবে। এছাড়াও এ খেয়ালিপনায় প্রিয়জনের গোমড়া মুখ দেখা অনেকটাই নিশ্চিত। হয়ে যেতে পারে সম্পর্কের সর্বনাশ! তাই সাবধান।

‘কেউ কিছু করছে না। আমি কী করব?’ এসব ভেবে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না। আপনাকে এগিয়ে যেতে হবে নিজের জন্য। এগিয়ে যেতে হবে নিজের শক্তিতে। যদি অসুস্থতা আপনার ‘আলসেমি’র কারণ হয়, তাহলেও ঘাবড়ে যাবেন না। কোনো কাজ করতে চাইলে নিজেকে নিজে উৎসাহ দিন।

মনে রাখবেন, একবার একটা সুযোগ হাতছাড়া হলে দ্বিতীয় সুযোগ কবে পাবেন তার ঠিক নেই। তাই অলসতা কাটিয়ে নতুন উদ্যম ও উৎসাহে জেগে উঠুন এখনি। দেখবেন, আপনার সামনে দাঁড়িয়ে আছে নতুন এক পৃথিবী, যেখানে আপনিই সেরা।

বেঙ্গলিনিউজটোয়েন্টিফোর