মঙ্গলবার দুপুরের ওই ঘটনার পর দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয় বলে রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার হারুণ-অর রশীদ।
ওই তরুণীকে পুলিশ দিনভর আটকে রাখলেও সন্ধ্যার পর আইন-সালিস কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামালের হেফাজতে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ওই তরুণীকে আটকের পর তথ্য সংগ্রহে গিয়ে মারধরের শিকার হন তিন সাংবাদিক ও দুই আইনজীবী।
প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবীরা জানান, দুপুরের আগ মুহূর্তে ওই তরুণী একটি মামলা করতে বাবাকে নিয়ে আদালতে এসেছিলেন। আদালতের ফটক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে তাকে পুলিশ আটক করে।
ওমর ফারুক আসিফ নামে এক আইনজীবী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওই তরুণী তার বাবার সঙ্গে মটর সাইকেলে করে এসেছিলেন। তখন আদালত ফটকে পুলিশ তাদের মটর সাইকেল নিয়ে ঢুকতে বাধা দেয়।
“তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে ওই তরুণীকে পুলিশ টেনে-হিঁচড়ে আদালতপাড়ায় পুলিশ ক্লাবে নিয়ে ঢোকায়,” বলেন তিনি।
এরপর পুলিশ ক্লাবে পুলিশ সদস্যরা ওই তরুণীর শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ উঠে। তখন সাংবাদিকরাও সেখানে যান।
বিকালে ওই তরুণীকে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় তিন সাংবাদিক ও দুই আইনজীবীকে লাঠিপেটা করে পুলিশ।
উপকমিশনার হারুণ জানান, শ্লীলতাহানির অভিযোগ তদন্তে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
লালবাগ পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদারকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে। অন্য সদস্য হলেন সহকারী কমিশনার রাজিব আল মাসুদ।
এই ঘটনায় সহকারী উপপরিদর্শক নূরুজ্জামান সরকার ও আমির আফজাল বিপ্লবকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামালের জিম্মায় ওই তরুণীকে ছাড়া হয়েছে বলে উপকমিশনার হারুণ জানান।
শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে মামলা করা হবে কি না- জানতে চাইলে আইন-সালিশ কেন্দ্রের উপ-পরিচালক টিপু সুলতান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “খুব সম্ভবত মামলা করা হবে। তবে আগামীকাল সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।”
এই ঘটনায় পুলিশের মারধরে আহত তিন সাংবাদিক হলেন প্রথম আলোর আদালত প্রতিবেদক প্রশান্ত কর্মকার, কালের কণ্ঠের আদালত প্রতিবেদক এম এ জলিল উজ্জ্বল ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের আদালত প্রতিবেদক তুহিন হাওলাদার।
এছাড়া সাকিব ও রাজু নামে দুই আইনজীবীকে পেটানোর পর পুলিশ তুলে নিয়ে যায় বলে আহত সাংবাদিকরা জানান।
তুহিন হাওলাদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এই ঘটনা জানতে যাওয়া এক সাংবাদিকের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের কারণ জানতে চাইলে পুলিশ সদস্যরা তাদের ওপর চড়াও হয়।
কোতোয়ালি থানার ওসি সালাউদ্দিনের ইশারায় এসআই জামান ও এসআই জাহাঙ্গীর মারধর করেন বলে সাংবাদিকদের অভিযোগ।
এই ঘটনার পরপরই আদালতে কর্তব্যরত সাংবাদিকরা এই বিষয়ে নালিশ নিয়ে মুখ্য মহানগর হাকিম বিকাশ কুমার সাহার কাছে যান। তিনি ঘটনার ব্যাখ্যা শুনতে ওসিসহ পুলিশ কর্মকর্তাদের বুধবার ডেকে পাঠিয়েছেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/
0 comments:
Post a Comment