হৃৎকোষে আলোর খেলা

হৃৎপিণ্ডের ভেতর কার্ডিওমায়োসাইট নামে যে কোষগুলো আছে, ওগুলোই সবচেয়ে বেশি দায়িত্বশীল। আমৃত্যু পাম্প করাই কোষগুলোর কাজ। আর ওটা বিগড়ে গেলেই দরকার হয় কৃত্রিম পেসমেকারের। স্টেমসেল বিদ্যা খাটিয়ে গবেষণাগারে ওই ধরনের কোষ তৈরি করা যায় ঠিকই, কিন্তু শরীরের ভেতর প্রতিস্থাপন করার আগ পর্যন্ত কোষগুলো অকর্মাই থেকে যায়। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকরা হাতে পেলেন এক মোক্ষম মন্ত্র। গবেষণাগারের ডিশের ওপর কৃত্রিম উপায়ে বেড়ে ওঠা জিনগতভাবে পরিবর্তিত কার্ডিওমায়োসাইট কোষের ওপর নীল রংয়ের আলো ফেলতেই দেখা গেল নির্দিষ্ট বিরতিতে ধুক ধুক করে লাফিয়ে উঠছে কোষগুলো। যেন অদৃশ্য কোনও প্রাণীর হৃৎপিণ্ড পাম্প করছে ওরা! সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে এল একরাশ আইডিয়া। স্টেমকোষের ভেতর চ্যানেলরোডোপসিন-২ নামের একটি প্রোটিন জুড়ে দিলেই তৈরি করা সম্ভব আলোকসংবেদী ওই কোষ। এরপর ক্ষতিগ্রস্ত হৃৎপিণ্ডে প্রতিস্থাপনের পর স্রেফ আলো ফেলেই ওটাকে কাজে লাগানো যাবে। কোনও ঝামেলা দেখা দিলেও ওষুধ হিসেবে কাজ করবে নীল আলোর বিচ্ছুরণ। সারিয়ে তোলা যাবে অ্যারিদমিয়ার মতো প্রাণঘাতি রোগ। এমনকী আলোকসংবেদী পেসমেকারও চলে আসবে খুব তাড়াতাড়ি।

পুরো প্রক্রিয়াটির নাম অপটোজিনেটিক্স। স্ট্যানফোর্ডেই এর জগৎ মূল গবেষকরা হলেন অস্কার আবিলেজ ও কার্ল ডেইজিরথ। তাদের উদ্ভাবিত পন্থায় মানবকোষে আলোর প্রভাব নিয়ে গবেষণা হচ্ছে অনেক আগ থেকেই। ডেইজিরথের মূল বিষয় হলো মস্তিষ্কের কোষ নিউরনে আলো ফেলে সিজোফ্রেনিয়ার মতো রোগ সারাইয়ের ফর্মুলা আবিষ্কার করা। অন্যদিকে আবিলেজ লেগে আছেন হৃৎপিণ্ডের পেছনেই। গবেষণার টেবিলেই তিনিই প্রথম তৈরি করলেনহৃৎ পিণ্ডের এমন একটি সচল কোষ, যার রিমোট কন্ট্রোলার হিসেবে কাজ করবে স্রেফ আলো। সায়েন্স ডেইলি

আমাদের সময়