যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে গতকালও শাহবাগ চত্বর ছিল লোকে লোকারণ্য। সন্ধ্যার পর জনস্রোতে পরিণত হয় পুরো এলাকা। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার মানুষের ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে শাহবাগ চত্বর হয়ে উঠেছিল নতুন এক রণাঙ্গন
ছবি: সাহাদাত পারভেজ
দুপুরের দিকে শাহবাগের নবজাগরণ মঞ্চ থেকে জানানো হলো নাম না-জানা একজন ভিক্ষুকের কথা। সারা দিন বায়তুল মোকাররম এলাকায় ভিক্ষা করে পেয়েছেন ৩৪৫ টাকা। সেই টাকা দিয়ে চিড়া আর গুড় কিনে নিয়ে এসেছেন শাহবাগ চত্বরে। যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা যাতে না খেয়ে থাকেন। মঞ্চ থেকে এই মানুষটিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ঘৃণা জানানো হলো স্বাধীনতাবিরোধীদের, যাঁরা খাদ্যের মধ্যে হেরোইন পাচার থেকে শুরু করে নানাভাবে অবৈধ পথে অর্থ উপার্জন করছেন। কেবল উপার্জনই নয়, এই অর্থ ব্যবহারও হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে।
আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবি জানাতে শাহবাগ চত্বরে অবস্থান নেওয়া শুরু হয়েছিল। সেই আন্দোলন এখন ছড়িয়ে গেছে সারা দেশে ও বিশ্বের নানা দেশে। যেখানে বাংলাদেশের মানুষ আছে, সেখানেই। দাবিও ব্যাপকতা পেয়েছে। এখন কেবল ফাঁসি নয়, স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের রাজনীতি বন্ধের দাবি উঠেছে। আর গতকাল রোববার আন্দোলনের ষষ্ঠ দিনে দাবি উঠল স্বাধীনতাবিরোধীদের কেবল রাজনৈতিকভাবেই নয়, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবেও বর্জনের ডাক দেওয়া হলো। এই আহ্বান এল বারবার, মূল মঞ্চ থেকে। আবার যাঁরা এই স্বাধীনতাবিরোধীদের সহায়তা করেন, তাঁদের বর্জনের।
টানা পাঁচ দিন স্লোগান দেওয়ার পর গতকাল দিনে এরই মধ্যে অগ্নিকন্যা হিসেবে খ্যাতি পাওয়া লাকি আক্তার দিনে শ্লোগান দেননি। অন্যরা গতকাল সকাল থেকে শুরু করে শাহবাগ চত্বরে পালা করে অন্যরা স্লোগান দিয়েছেন। এরই মধ্যে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ এসে সংহতি জানিয়ে গেছেন। এ দলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি এবং জাতীয় দলের ক্রিকেটাররাসহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ছিলেন। সব দিক থেকেই ব্যতিক্রম এ নবজাগরণ মঞ্চ। সংহতি জানানো আছে, কিন্তু কোনো বক্তৃতা নেই। স্লোগান আর গণসংগীতের পাশাপাশি বারবারই আহ্বান জানানো হলো জামায়াত-শিবিরনিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে বর্জন করতে। আহ্বান জানানো হলো এলাকায়-মহল্লায় শিবিরের নামের তালিকা তৈরি করতে। জামায়াত-শিবিরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকাও পাওয়া যাচ্ছে শাহবাগ চত্বরে।
শুক্রবার হলো মহাসমাবেশ। শনিবার ছুটির দিন। অনেকেই মনে করেছিলেন, শাহবাগ চত্বর ঝিমিয়ে পড়বে কাজের দিন রোববারে। কিন্তু সব ধারণা পালটে গেল গতকাল। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত শাহবাগ চত্বর দখল করেছিল বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েরা। আর সন্ধ্যার পর এল আরও মানুষ, মানুষের পর মানুষ। স্কুলের পোশাকে হাজার হাজার ছেলেমেয়ের জয় বাংলা স্লোগানে শাহবাগ চত্বর হয়ে উঠেছিল নতুন এক রণাঙ্গন। দুপুরে ‘৭১-এর সেই রণাঙ্গনের কথাও বারবার উচ্চারিত হচ্ছিল মূল মঞ্চ থেকে। তখন দুপুরের খাবারের সময়। অনেককেই দেখা গেল রুটি আর কলা কিনে দল বেঁধে খাচ্ছেন। সেই রুটি-কলাও পর্যাপ্ত ছিল না। অনেক সংগঠন খাবার এনে দিয়েছেন এখানে। অল্প খাবার ভাগাভাগি করে খাওয়ার আহ্বান জানিয়ে মূল মঞ্চ থেকে মনে করিয়ে দেওয়া হলো, ‘৭১-এর রণাঙ্গনে একটি রুটি বহুজনে ভাগ করে খাওয়া হতো। তবু কেউ রণাঙ্গন ছাড়েননি, দেশ স্বাধীন করেই স্বাধীন দেশে এসেছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা।
জায়গাটা প্রচলিত কথায় শাহবাগ মোড়। আন্দোলন শুরু হলে বলা হলো শাহবাগ চত্বর। আর এখানকার মূল মঞ্চকে বলা হলো নবজাগরণ মঞ্চ। কেউ বলছেন গণজাগরণ মঞ্চ। আবার শাহবাগ চত্বরকে এখন বলা হচ্ছে প্রজন্ম চত্বর। নতুন প্রজন্মের নতুন রণাঙ্গন এখন এ চত্বর। সবার দৃপ্ত শপথ, অসমাপ্ত যুদ্ধ শেষ করেই সবাই ঘরে ফিরবে। সবার চোখে-মুখে এ শপথ। গত শুক্রবার মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়েছিল। আর তার পরে সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষ শাহবাগ চত্বরে যান গতকাল রোববার। নানা শ্রেণীর নানা স্তরের মানুষ সংহতি জানাতে গেছেন সেখানে। যাঁরা গেছেন তাঁদের অধিকাংশই মুক্তিযুদ্ধ দেখেননি। একটি বড় অংশ ‘৯২-এর গণ-আদালতও দেখেননি। তাঁদের সবার জন্য নতুন অভিজ্ঞতা শাহবাগের প্রজন্ম চত্বর। এসেছিলেন মুক্তিযোদ্ধারাও, সঙ্গে এনেছেন নাতি-নাতনিদের। এ রকম বাংলাদেশ আগে কখনো কেউ দেখেনি।
গতকাল বেলা একটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মিছিল করে আসেন শাহবাগ চত্বরে। আন্দোলনে যোগ দিয়ে বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বলেন, তরুণের যে জাগরণ, তা অভূতপূর্ব। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের উদ্দেশে তিনি বলেন, নৈতিকভাবে ঠিক থেকে এই আন্দোলনের খবর প্রচার করা উচিত। জনগণের সঙ্গে থেকেই সংবাদ পরিবেশন করতে হবে। যদি কোনো গণমাধ্যম তা না করে তাহলে তার দায়ভার তাদেরই নিতে হবে। জনগণই তাদের ত্যাগ করবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মুশফেকা ইসলাম বলেন, ‘আমরা চাই না আমাদের এই দেশের মাটিতে কোনো রাজাকার থাকুক। আমরা যাঁরা সাংবাদিকতা বিভাগে পড়ছি, তাঁরা কখনো জামায়াত-শিবিরের প্রতিষ্ঠানে কাজ করব না। কেননা, তারা গণমানুষের কথা বলে না, নিজেদের প্রচারণা নিয়ে ব্যস্ত থাকে।’
আন্দোলনে যোগ দিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান বলেন, ‘রাজাকারেরা আমাদের শোষণ করেছে। এর একটা বিহিত করা উচিত। প্রয়োজনে আরও কঠোর আইন করে তাদের মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে হবে।’
সন্ধ্যায় যখন স্লোগান আর গানে মুখরিত শাহবাগ চত্বর, তখন ঘোষণা দেওয়া হলো, জাতীয় সংসদ একাত্মতা প্রকাশ করেছে আন্দোলনের সঙ্গে। এ সংবাদকে হর্ষধ্বনি দিয়ে স্বাগত জানালেন সবাই। এর আগে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান এসে সংহতি জানান। রাতে আসেন আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ, গণণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খান এবং সাংসদ মইনুদ্দীন খান বাদল। তবে মঞ্চ থেকে বলা হয়, কোনো রাজনৈতিক নেতাকেই আর এখানে বক্তৃতা দেওয়া হবে না। এ রিপোর্ট লেখার সময় অনেক রাত পর্যন্ত চলছিল অনুষ্ঠান।
আন্দোলন শুরু হয়েছিল সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক আর ব্লগের মাধ্যমে। অনেকে আছেন, যাঁরা প্রবাসে থেকে এসব মাধ্যমে সক্রিয় থাকেন। তাঁরা দেশে আসতে না পারলেও নানাভাবে সক্রিয় আছেন মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে। জামায়াত-শিবির অনেক বেশি সক্রিয় এসব সামাজিক মাধ্যমে। তাদেরও বর্জন বা খেদাও আন্দোলন চলছে ব্লগ ও ফেসুবকে।
এদিকে, পুলিশ সূত্র জানায়, রাজধানীর শাহবাগ স্কয়ারে সমাবেশের নিরাপত্তা ঘিরে একাধিক ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা (সিসি ক্যামেরা) বসানো হয়ছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এখানে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নজরদারি করছে। সমাবেশ ঘিরে পুলিশের টহল অব্যাহত থাকবে।
পুলিশের মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, শাহবাগে সমাবেশ ঘিরে নিরাপত্তাব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে। এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবি জানাতে শাহবাগ চত্বরে অবস্থান নেওয়া শুরু হয়েছিল। সেই আন্দোলন এখন ছড়িয়ে গেছে সারা দেশে ও বিশ্বের নানা দেশে। যেখানে বাংলাদেশের মানুষ আছে, সেখানেই। দাবিও ব্যাপকতা পেয়েছে। এখন কেবল ফাঁসি নয়, স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতের রাজনীতি বন্ধের দাবি উঠেছে। আর গতকাল রোববার আন্দোলনের ষষ্ঠ দিনে দাবি উঠল স্বাধীনতাবিরোধীদের কেবল রাজনৈতিকভাবেই নয়, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবেও বর্জনের ডাক দেওয়া হলো। এই আহ্বান এল বারবার, মূল মঞ্চ থেকে। আবার যাঁরা এই স্বাধীনতাবিরোধীদের সহায়তা করেন, তাঁদের বর্জনের।
টানা পাঁচ দিন স্লোগান দেওয়ার পর গতকাল দিনে এরই মধ্যে অগ্নিকন্যা হিসেবে খ্যাতি পাওয়া লাকি আক্তার দিনে শ্লোগান দেননি। অন্যরা গতকাল সকাল থেকে শুরু করে শাহবাগ চত্বরে পালা করে অন্যরা স্লোগান দিয়েছেন। এরই মধ্যে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ এসে সংহতি জানিয়ে গেছেন। এ দলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি এবং জাতীয় দলের ক্রিকেটাররাসহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ছিলেন। সব দিক থেকেই ব্যতিক্রম এ নবজাগরণ মঞ্চ। সংহতি জানানো আছে, কিন্তু কোনো বক্তৃতা নেই। স্লোগান আর গণসংগীতের পাশাপাশি বারবারই আহ্বান জানানো হলো জামায়াত-শিবিরনিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে বর্জন করতে। আহ্বান জানানো হলো এলাকায়-মহল্লায় শিবিরের নামের তালিকা তৈরি করতে। জামায়াত-শিবিরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকাও পাওয়া যাচ্ছে শাহবাগ চত্বরে।
শুক্রবার হলো মহাসমাবেশ। শনিবার ছুটির দিন। অনেকেই মনে করেছিলেন, শাহবাগ চত্বর ঝিমিয়ে পড়বে কাজের দিন রোববারে। কিন্তু সব ধারণা পালটে গেল গতকাল। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত শাহবাগ চত্বর দখল করেছিল বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েরা। আর সন্ধ্যার পর এল আরও মানুষ, মানুষের পর মানুষ। স্কুলের পোশাকে হাজার হাজার ছেলেমেয়ের জয় বাংলা স্লোগানে শাহবাগ চত্বর হয়ে উঠেছিল নতুন এক রণাঙ্গন। দুপুরে ‘৭১-এর সেই রণাঙ্গনের কথাও বারবার উচ্চারিত হচ্ছিল মূল মঞ্চ থেকে। তখন দুপুরের খাবারের সময়। অনেককেই দেখা গেল রুটি আর কলা কিনে দল বেঁধে খাচ্ছেন। সেই রুটি-কলাও পর্যাপ্ত ছিল না। অনেক সংগঠন খাবার এনে দিয়েছেন এখানে। অল্প খাবার ভাগাভাগি করে খাওয়ার আহ্বান জানিয়ে মূল মঞ্চ থেকে মনে করিয়ে দেওয়া হলো, ‘৭১-এর রণাঙ্গনে একটি রুটি বহুজনে ভাগ করে খাওয়া হতো। তবু কেউ রণাঙ্গন ছাড়েননি, দেশ স্বাধীন করেই স্বাধীন দেশে এসেছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা।
জায়গাটা প্রচলিত কথায় শাহবাগ মোড়। আন্দোলন শুরু হলে বলা হলো শাহবাগ চত্বর। আর এখানকার মূল মঞ্চকে বলা হলো নবজাগরণ মঞ্চ। কেউ বলছেন গণজাগরণ মঞ্চ। আবার শাহবাগ চত্বরকে এখন বলা হচ্ছে প্রজন্ম চত্বর। নতুন প্রজন্মের নতুন রণাঙ্গন এখন এ চত্বর। সবার দৃপ্ত শপথ, অসমাপ্ত যুদ্ধ শেষ করেই সবাই ঘরে ফিরবে। সবার চোখে-মুখে এ শপথ। গত শুক্রবার মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়েছিল। আর তার পরে সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষ শাহবাগ চত্বরে যান গতকাল রোববার। নানা শ্রেণীর নানা স্তরের মানুষ সংহতি জানাতে গেছেন সেখানে। যাঁরা গেছেন তাঁদের অধিকাংশই মুক্তিযুদ্ধ দেখেননি। একটি বড় অংশ ‘৯২-এর গণ-আদালতও দেখেননি। তাঁদের সবার জন্য নতুন অভিজ্ঞতা শাহবাগের প্রজন্ম চত্বর। এসেছিলেন মুক্তিযোদ্ধারাও, সঙ্গে এনেছেন নাতি-নাতনিদের। এ রকম বাংলাদেশ আগে কখনো কেউ দেখেনি।
গতকাল বেলা একটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মিছিল করে আসেন শাহবাগ চত্বরে। আন্দোলনে যোগ দিয়ে বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বলেন, তরুণের যে জাগরণ, তা অভূতপূর্ব। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের উদ্দেশে তিনি বলেন, নৈতিকভাবে ঠিক থেকে এই আন্দোলনের খবর প্রচার করা উচিত। জনগণের সঙ্গে থেকেই সংবাদ পরিবেশন করতে হবে। যদি কোনো গণমাধ্যম তা না করে তাহলে তার দায়ভার তাদেরই নিতে হবে। জনগণই তাদের ত্যাগ করবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মুশফেকা ইসলাম বলেন, ‘আমরা চাই না আমাদের এই দেশের মাটিতে কোনো রাজাকার থাকুক। আমরা যাঁরা সাংবাদিকতা বিভাগে পড়ছি, তাঁরা কখনো জামায়াত-শিবিরের প্রতিষ্ঠানে কাজ করব না। কেননা, তারা গণমানুষের কথা বলে না, নিজেদের প্রচারণা নিয়ে ব্যস্ত থাকে।’
আন্দোলনে যোগ দিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান বলেন, ‘রাজাকারেরা আমাদের শোষণ করেছে। এর একটা বিহিত করা উচিত। প্রয়োজনে আরও কঠোর আইন করে তাদের মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে হবে।’
সন্ধ্যায় যখন স্লোগান আর গানে মুখরিত শাহবাগ চত্বর, তখন ঘোষণা দেওয়া হলো, জাতীয় সংসদ একাত্মতা প্রকাশ করেছে আন্দোলনের সঙ্গে। এ সংবাদকে হর্ষধ্বনি দিয়ে স্বাগত জানালেন সবাই। এর আগে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান এসে সংহতি জানান। রাতে আসেন আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ, গণণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খান এবং সাংসদ মইনুদ্দীন খান বাদল। তবে মঞ্চ থেকে বলা হয়, কোনো রাজনৈতিক নেতাকেই আর এখানে বক্তৃতা দেওয়া হবে না। এ রিপোর্ট লেখার সময় অনেক রাত পর্যন্ত চলছিল অনুষ্ঠান।
আন্দোলন শুরু হয়েছিল সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক আর ব্লগের মাধ্যমে। অনেকে আছেন, যাঁরা প্রবাসে থেকে এসব মাধ্যমে সক্রিয় থাকেন। তাঁরা দেশে আসতে না পারলেও নানাভাবে সক্রিয় আছেন মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে। জামায়াত-শিবির অনেক বেশি সক্রিয় এসব সামাজিক মাধ্যমে। তাদেরও বর্জন বা খেদাও আন্দোলন চলছে ব্লগ ও ফেসুবকে।
এদিকে, পুলিশ সূত্র জানায়, রাজধানীর শাহবাগ স্কয়ারে সমাবেশের নিরাপত্তা ঘিরে একাধিক ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা (সিসি ক্যামেরা) বসানো হয়ছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এখানে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নজরদারি করছে। সমাবেশ ঘিরে পুলিশের টহল অব্যাহত থাকবে।
পুলিশের মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, শাহবাগে সমাবেশ ঘিরে নিরাপত্তাব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে। এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রথম আলো
0 comments:
Post a Comment