প্রেম করে চিংড়িরাও!

প্রকৃতির নানা বৈচিত্র্যের মধ্যে মাছ একটি। বিভিন্ন ধরনের খাবারের সঙ্গে মাছ হলে একটু বেশিই খাবার গ্রহণ করা যায়। আর বড় বড় গলদা চিংড়ি হলে তো কথাই নেই। পৃথিবীজুড়ে সব মানুষের কাছে চিংড়ি খুবই পরিচিত এবং আদরণীয় খাবার। অপরূপ স্বাদের এ মাছ নিয়েও আছে নানা মজার গল্প। সম্প্রতি গলদা প্রজাতির চিংড়ি নিয়ে যে গল্পটি ইতিমধ্যে প্রাণিবিজ্ঞানীদের হৃদয়ে প্রচ নাড়া দিয়েছে, তা শুনলে যে কেউ অবাক হবেন। কেউ কখনো কী শুনেছেন যে, চিংড়ি মাছ প্রস্রাব নিঃসরণের মাধ্যমে পরস্পরকে আকর্ষণ করে? সম্প্রতি ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি

অব হালের কয়েকজন গবেষক নারী চিংড়ি এবং পুরুষ চিংড়ির ওপর ব্যাপক গবেষণা চালিয়ে সম্প্রতি এ তথ্য প্রকাশ করেছেন। গবেষকরা জানান, নারী গলদা চিংড়ি কামোদ্দীপ্ত হলে প্রথমে প্রস্রাব নিঃসরণের মাধ্যমে পুরুষ গলদা চিংড়িকে মিলনের জন্য আহ্বান জানায়। পুরুষটি নারী চিংড়ির আহ্বানের পর পরই চরম উত্তেজিত হয়ে তার কাছাকাছি যাওয়ার জন্য চেষ্টা করতে থাকে। কিন্তু চেষ্টা করলেই তো আর হবে না। কারণ নারীদের মন এত সহজেই কি আর পাওয়া যায়? চিংড়িদের বেলায় নারী চিংড়ির সংখ্যা কম আর পুরুষ চিংড়ির সংখ্যা তার তুলনায় অনেক বেশি। তাই প্রেমিকের সংখ্যা যে ব্যাপক বেড়ে যায় এটাই স্বাভাবিক। আসলে হয়ও তাই। ফলে একটি নারী চিংড়ির পিছু নেয় অসংখ্য পুরুষ চিংড়ি। এবং এ নিয়ে চলে রীতিমতো যুদ্ধ। মানুষ যদি সম্রাজ্ঞী হেলেনের জন্য পুরো ট্রয় নগরী ধ্বংস করে দিতে পারে, সেখানে চিংড়ি প্রজাতির পুরুষরা নারী সঙ্গিনীকে পাওয়ার জন্য একটু-আধটু মারামারি যে করতে পারে, এটা ভাবা মোটেও অমূলক নয়। নারী গলদা চিংড়ির আহ্বানে সাড়া দিতে গিয়ে পুরুষ চিংড়িরা পরস্পরের সঙ্গে রীতিমতো মারামারিতে লিপ্ত হয়ে পড়ে। যুদ্ধে জয়ী পুরুষ চিংড়িই কেবল পরবর্তী সময়ের জন্য নারী চিংড়ির সঙ্গ পায় এবং পাণি গ্রহণের মাধ্যমে প্রজননের জন্য তৈরি হয়। প্রজনন প্রক্রিয়ার শুরুতে পুরুষ চিংড়িও প্রস্রাব নিঃসরণ করে। নারী এবং পুরুষ উভয় জাতের চিংড়ির প্রস্রাব নিঃসরণই তাদের মিলনকে সার্থক করে তোলে।

দিনের শেষে