বাবাকে কী করে জানাই ভালোবাসার মানুষের কথা। মডেল হয়েছেন প্রীতি ও মতিউল।
ছবি: কবির হোসেন
বুকে ঢিপঢিপ শব্দ। সেই শব্দ নিজের কানে এসে লাগছে। ভয়ে হাত-পা কাঁপছে। আর রক্ষা নেই। বাড়িতে বলতে হবে ভালোবাসার মানুষটির কথা। কিন্তু কীভাবে? মা-বাবা কষ্ট পেলে? অন্যের মুখে শুনলে কষ্টটা যে দ্বিগুণ হবে। এর থেকে নিজের বলে দেওয়াই ভালো।
আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের এক জরিপে জানা যায়, মানসিক চাপের অন্যতম কারণ প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলতে না পারা। পাশ্চাত্যে ভালোবাসার মানুষটিকে সরাসরি পরিবারের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয় ছেলেমেয়েরা। মা-বাবা জানতে পারছেন, তাঁদের সন্তান কার সঙ্গে মিশছে। অজানা আশঙ্কায় তাঁরা ভোগেন না। আর সন্তানেরাও হাঁফ ছেড়ে বাঁচে।
আমাদের দেশের অভিভাবকদের ভাবনাচিন্তায় আগের চেয়ে পরিবর্তন এসেছে। তার পরও অনেক সময় দেখা যায়, মেয়ের প্রেমের বিষয়টি তাঁরা শুরুতে মানতে পারেন না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মেহতাব খানমের মতে, ‘মা-বাবার সঙ্গে সম্পর্কের ধরন ও তাঁদের মানসিকতার ওপর নির্ভর করে, মেয়েটি তার প্রেমের কথা কীভাবে বলবে, নাকি বলবেই না। মায়ের চেয়ে বাবাকে বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করলে তাঁকেই বলা যেতে পারে। তাঁরা যদি ছোট থেকেই সন্তানের বন্ধু হয়ে উঠতে পারেন, সন্তানের আস্থার জায়গাটি অর্জন করতে পারেন, তাহলে যেকোনো কথাই সন্তান তাঁদের বলবে। এখন অবশ্য অনেক মা-বাবাই সন্তানের বন্ধু হওয়ার চেষ্টা করেন। মা-বাবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকলে তো পোয়াবারো। সম্পর্কের শুরুতেই তাঁদের জানিয়ে দিলে ঝামেলা মিটে গেল।’
প্রেমের কথা নিজের মুখে মা-বাবাকে বলতে খানিকটা সংকোচ তো লাগেই, বিশেষ করে বাবাকে। তাহলে উপায়? সাধারণত মেয়েকে মায়েরা বেশি বোঝেন। পরিস্থিতি বুঝে মাকে বলে ফেলতে হবে মনের কথা। মনোরোগ চিকিৎসক মোহিত কামাল বলেন, ‘মায়ের মন ফুরফুরে দেখে বা মা-মেয়ের একান্ত আড্ডায় বলা ভালো। মাকেই অনুরোধ করুন, যেন বাবাকে বুঝিয়ে বলেন। তাঁরা কিছু জিজ্ঞাসা করলে সত্য বলবেন। নয়তো পরে সত্যটা জানলে আপনার ওপর তাঁদের আগের মতো বিশ্বাস ও আস্থা থাকবে না। মনে রাখতে হবে, এক দিনেই সব বলা যাবে না। একটু একটু করে মা অথবা বাবাকে বলতে হবে।’
শুরুতে মা রেগে যেতে পারেন। একে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে হবে। চিৎকার-চেঁচামেচি করলে পরে ঝামেলা হতে পারে। উইকিহাউ ওয়েবসাইটে ২০ হাজারবারের বেশি পঠিত একটি প্রতিবেদন হলো, ‘কীভাবে মা-বাবাকে বলবেন প্রেমিকের কথা’। এর সমাধানে বলা হয়েছে, মায়ের কাছে কোনো কথা লুকাবেন না। যা জানতে চান, সরাসরি বলতে হবে। তিনি মেনে না নিলেও হাল ছেড়ে দেওয়া যাবে না। আবার তাঁর ওপর জেদ করলেও চলবে না, বরং তাঁকে ভাবার সময় দিন। বোঝানোর চেষ্টা করতে হবে, ভালোবাসার মানুষটিকে ছাড়া আপনি ভালো থাকবেন না। খেয়াল রাখতে হবে, একই সঙ্গে মা-বাবাকে সম্পর্কের কথা না বলাই ভালো। আলাদা করে বলার ক্ষেত্রে মাকেই আগে প্রাধান্য দিন। কিন্তু বাবার মুখোমুখিও তো হতে হবে। মা যদি কোনো কারণে বাবাকে বোঝাতে ব্যর্থ হন, তাহলে তৃতীয় কারও সাহায্য নিতে হবে।
প্রেম থেকে প্রণয় হয়েছে সাদিয়া-সৌরভ দম্পতির। সাদিয়ার বাবা আঁচ করতে পারলেও ভুল ভাবছেন মনে করে পাত্তা দেননি। এদিকে সাদিয়াও ভেবে কূল পান না, কীভাবে বাবাকে বলবেন। ছোটবেলায় সাদিয়ার মা মারা যাওয়ায় বাবাই সব। বন্ধুর মতো হলেও বাবাকে ভীষণ ভয় পান সাদিয়া। এদিকে সৌরভ তাড়া দিতে থাকেন বিয়ের জন্য। সাদিয়া ছোট মামিকে সব খুলে বলেন। মামি বাবাকে বললেন। সাদিয়া বলেন, ‘মামির কাছে শুনে বাবা কষ্ট পেয়েছিলেন বটে, তবে আমাকে সেই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়নি। হয়তো বাবার কষ্ট পাওয়া মুখটা দেখলে বিয়েই করতে পারতাম না। মামিই বাবাকে বুঝিয়ে রাজি করিয়েছিলেন।’
সাদিয়ার মতো সমস্যায় পড়লে কাছের বন্ধু, পারিবারিক বন্ধু বা মা-বাবার কাছের কাউকে খুলে বলতে হবে সব কথা, যাতে তিনিই পুরো বিষয়টা সামলাতে পারেন। আবার এমনও হতে পারে, সন্তান যাকে পছন্দ করছে, তাঁকে অভিভাবকের কিছুতেই পছন্দ নয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ ক্ষেত্রে সন্তানের কথা ভেবে ছেলেটির বিষয়ে খোঁজখবর নিন।মেয়েটি কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কিনা, সেদিকে সজাগ থাকুন। অযথা আত্ম-অহংয়ের কারণে মেয়ের জীবনে কালো ছায়া নেমে আসতে পারে। মেয়ের পুরো কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। ছেলেটির সঙ্গে বাইরে কোথাও দেখা করতে পারেন। সন্তানের পছন্দকে আপনি গুরুত্ব দিচ্ছেন, এটি বুঝলে সেও মা-বাবাকে আরও কাছের মানুষ মনে করবে। তখন তাঁর ভুল হওয়ার কিংবা বিপদে পড়ার আশংকা কম থাকে।
আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের এক জরিপে জানা যায়, মানসিক চাপের অন্যতম কারণ প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলতে না পারা। পাশ্চাত্যে ভালোবাসার মানুষটিকে সরাসরি পরিবারের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয় ছেলেমেয়েরা। মা-বাবা জানতে পারছেন, তাঁদের সন্তান কার সঙ্গে মিশছে। অজানা আশঙ্কায় তাঁরা ভোগেন না। আর সন্তানেরাও হাঁফ ছেড়ে বাঁচে।
আমাদের দেশের অভিভাবকদের ভাবনাচিন্তায় আগের চেয়ে পরিবর্তন এসেছে। তার পরও অনেক সময় দেখা যায়, মেয়ের প্রেমের বিষয়টি তাঁরা শুরুতে মানতে পারেন না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মেহতাব খানমের মতে, ‘মা-বাবার সঙ্গে সম্পর্কের ধরন ও তাঁদের মানসিকতার ওপর নির্ভর করে, মেয়েটি তার প্রেমের কথা কীভাবে বলবে, নাকি বলবেই না। মায়ের চেয়ে বাবাকে বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করলে তাঁকেই বলা যেতে পারে। তাঁরা যদি ছোট থেকেই সন্তানের বন্ধু হয়ে উঠতে পারেন, সন্তানের আস্থার জায়গাটি অর্জন করতে পারেন, তাহলে যেকোনো কথাই সন্তান তাঁদের বলবে। এখন অবশ্য অনেক মা-বাবাই সন্তানের বন্ধু হওয়ার চেষ্টা করেন। মা-বাবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকলে তো পোয়াবারো। সম্পর্কের শুরুতেই তাঁদের জানিয়ে দিলে ঝামেলা মিটে গেল।’
প্রেমের কথা নিজের মুখে মা-বাবাকে বলতে খানিকটা সংকোচ তো লাগেই, বিশেষ করে বাবাকে। তাহলে উপায়? সাধারণত মেয়েকে মায়েরা বেশি বোঝেন। পরিস্থিতি বুঝে মাকে বলে ফেলতে হবে মনের কথা। মনোরোগ চিকিৎসক মোহিত কামাল বলেন, ‘মায়ের মন ফুরফুরে দেখে বা মা-মেয়ের একান্ত আড্ডায় বলা ভালো। মাকেই অনুরোধ করুন, যেন বাবাকে বুঝিয়ে বলেন। তাঁরা কিছু জিজ্ঞাসা করলে সত্য বলবেন। নয়তো পরে সত্যটা জানলে আপনার ওপর তাঁদের আগের মতো বিশ্বাস ও আস্থা থাকবে না। মনে রাখতে হবে, এক দিনেই সব বলা যাবে না। একটু একটু করে মা অথবা বাবাকে বলতে হবে।’
শুরুতে মা রেগে যেতে পারেন। একে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে হবে। চিৎকার-চেঁচামেচি করলে পরে ঝামেলা হতে পারে। উইকিহাউ ওয়েবসাইটে ২০ হাজারবারের বেশি পঠিত একটি প্রতিবেদন হলো, ‘কীভাবে মা-বাবাকে বলবেন প্রেমিকের কথা’। এর সমাধানে বলা হয়েছে, মায়ের কাছে কোনো কথা লুকাবেন না। যা জানতে চান, সরাসরি বলতে হবে। তিনি মেনে না নিলেও হাল ছেড়ে দেওয়া যাবে না। আবার তাঁর ওপর জেদ করলেও চলবে না, বরং তাঁকে ভাবার সময় দিন। বোঝানোর চেষ্টা করতে হবে, ভালোবাসার মানুষটিকে ছাড়া আপনি ভালো থাকবেন না। খেয়াল রাখতে হবে, একই সঙ্গে মা-বাবাকে সম্পর্কের কথা না বলাই ভালো। আলাদা করে বলার ক্ষেত্রে মাকেই আগে প্রাধান্য দিন। কিন্তু বাবার মুখোমুখিও তো হতে হবে। মা যদি কোনো কারণে বাবাকে বোঝাতে ব্যর্থ হন, তাহলে তৃতীয় কারও সাহায্য নিতে হবে।
প্রেম থেকে প্রণয় হয়েছে সাদিয়া-সৌরভ দম্পতির। সাদিয়ার বাবা আঁচ করতে পারলেও ভুল ভাবছেন মনে করে পাত্তা দেননি। এদিকে সাদিয়াও ভেবে কূল পান না, কীভাবে বাবাকে বলবেন। ছোটবেলায় সাদিয়ার মা মারা যাওয়ায় বাবাই সব। বন্ধুর মতো হলেও বাবাকে ভীষণ ভয় পান সাদিয়া। এদিকে সৌরভ তাড়া দিতে থাকেন বিয়ের জন্য। সাদিয়া ছোট মামিকে সব খুলে বলেন। মামি বাবাকে বললেন। সাদিয়া বলেন, ‘মামির কাছে শুনে বাবা কষ্ট পেয়েছিলেন বটে, তবে আমাকে সেই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়নি। হয়তো বাবার কষ্ট পাওয়া মুখটা দেখলে বিয়েই করতে পারতাম না। মামিই বাবাকে বুঝিয়ে রাজি করিয়েছিলেন।’
সাদিয়ার মতো সমস্যায় পড়লে কাছের বন্ধু, পারিবারিক বন্ধু বা মা-বাবার কাছের কাউকে খুলে বলতে হবে সব কথা, যাতে তিনিই পুরো বিষয়টা সামলাতে পারেন। আবার এমনও হতে পারে, সন্তান যাকে পছন্দ করছে, তাঁকে অভিভাবকের কিছুতেই পছন্দ নয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ ক্ষেত্রে সন্তানের কথা ভেবে ছেলেটির বিষয়ে খোঁজখবর নিন।মেয়েটি কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কিনা, সেদিকে সজাগ থাকুন। অযথা আত্ম-অহংয়ের কারণে মেয়ের জীবনে কালো ছায়া নেমে আসতে পারে। মেয়ের পুরো কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। ছেলেটির সঙ্গে বাইরে কোথাও দেখা করতে পারেন। সন্তানের পছন্দকে আপনি গুরুত্ব দিচ্ছেন, এটি বুঝলে সেও মা-বাবাকে আরও কাছের মানুষ মনে করবে। তখন তাঁর ভুল হওয়ার কিংবা বিপদে পড়ার আশংকা কম থাকে।
প্রথম আলো
0 comments:
Post a Comment