খোজা পুরুষ দীর্ঘায়ু হয়

নারী-পুরুষের দীর্ঘায়ু লাভের পেছনে নানা পন্থা ও কথা প্রচলিত রয়েছে। তবে পুরুষের দীর্ঘায়ু লাভের গোপন রহস্য এবার উন্মোচন করেছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা বলছেন, পুরুষের মধ্যে যাঁরা খোজা অর্থাৎ যাঁদের পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগ কর্তিত, তাঁরাই মূলত দীর্ঘায়ুর অধিকারী হন বেশি। এর ব্যতিক্রম ঘটে থাকে খুব কম ক্ষেত্রেই। পুরুষের দেহের সেক্স হরমোনই তার আয়ুষ্কাল নির্ধারণের পেছনে কাজ করে থাকে বলে গবেষণায় দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।

খোজাকরণ হচ্ছে সার্জারির মাধ্যমে পুরুষের প্রজনন অঙ্গের বিশেষ অংশ কেটে ফেলা। ফলে পুরুষের সেক্স হরমোন উৎপাদন অতিমাত্রায় লোপ পায়। কোরিয়ার একদল বিজ্ঞানী এই গবেষণা চালান। তাঁরা প্রাচীন কোরিয়ার ‘এউনুস’ গোত্রীয় পুরুষের ওপর অর্থাৎ যারা ১৩৯২ থেকে ১৯১০ সাল পর্যন্ত জন্ম নেওয়া- সেসব মানুষের ক্রমবিকাশের তথ্যপ্রমাণ পর্যালোচনা করেন। এসব তথ্য-প্রমাণ নেওয়া হয় কোরিয়ার চসুন শাসনামলের পুরনো আর্কাইভ থেকে। এই চসুন গোষ্ঠীর বংশধররাই কোরিয়া শাসন করে ১৩৯২ থেকে ১৯১০ সাল পর্যন্ত।

ইনহা ইউনিভার্সিটির গবেষক কিউং জিন মিন বলেন, এই গবেষণার ফলে স্পষ্ট হয়েছে নারী ও পুরুষের মধ্যে দীর্ঘায়ু লাভের পার্থক্যের কারণগুলো।

গবেষণায় দেখা গেছে, কোরিয়ার যেসব খোজা বালক তাদের জনন অঙ্গ হারিয়েছে, রাজপ্রাসাদে অর্থাৎ রাজা-রানির অন্দরমহলে তারা খুব সহজেই প্রবেশাধিকার পেত। খোজা পুরুষরা বিয়ে করতে পারতেন এবং ছেলেমেয়ে দত্তক নিয়ে লালনপালন করতেন।

গবেষক মিন ও তাঁর সহযোগী চিওল কো লি তথ্য-প্রমাণ পর্যালোচনা করে দেখেছেন যে খোজা পুরুষরা স্বাভাবিক পুরুষের চেয়ে অন্তত ১৪ থেকে ১৯ বছর বেশি আয়ুর অধিকারী ছিলেন। গবেষণায় ৮১ জন খোজার জীবনচিত্র পর্যালোচনা করা হয়। এর মধ্যে তিনজনের বয়স ছিল ১০০ বা এর ওপরে।

এই গবেষণা প্রতিবেদন দ্য জার্নাল কারেন্ট বায়োলজিতে প্রকাশ করা হয়েছে। সূত্র : ডেইলি মেইল (অনলাইন)।

কালের কণ্ঠ