উপজেলার সোনার বাংলা কলেজের অধ্যক্ষ আবু ছালেক মো. সেলিম রেজা জানান, রিপা তাঁদের কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টায় ইসলামের ইতিহাস দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শুরুর ১৫ মিনিট পর রিপা পরীক্ষা কেন্দ্রে আসেন। তাঁর জন্য আলাদাভাবে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
রিপার আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০১০ সালের ২৩ নভেম্বর বুড়িচং উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের ফুল মিয়ার মেয়ে রিপার সঙ্গে আদর্শ সদর উপজেলার রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা সাদিকুর রহমানের বিয়ে হয়। রিপা যথারীতি পড়াশোনা চালিয়ে আসছিলেন। এরই মধ্যে তিনি সন্তানসম্ভবা হন। ১৯ মে সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ দিয়েছিলেন চিকিৎসক। তার আগেই তাঁর প্রসব বেদনা ওঠে। এরপর তাঁকে বুড়িচং উপজেলার রেডক্রিসেন্ট স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়া হয়। সেখানে সকাল নয়টা পাঁচ মিনিটে কোনো ধরনের অস্ত্রোপচার ছাড়াই তিনি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন।
এদিকে ২৫ মিনিট পর তাঁর পরীক্ষা শুরু হবে। এরই মধ্যে রিপা অভিভাবকদের কাছে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। কিন্তু অভিভাবকেরা রাজি হননি। শেষে সবার নিষেধ হার মানে রিপার ইচ্ছাশক্তির কাছে। বাবা ফুল মিয়াই মেয়েকে ভরাসার উচ্চবিদ্যালয় পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে যান। ততক্ষণে পরীক্ষার ২০ মিনিট পেরিয়ে গেছে। তবু রিপা ১০০ নম্বরের মধ্যে ৮০ নম্বরের উত্তর দিতে পেরেছেন।
গতকাল শনিবার রিপা আক্তার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে জানান, গতকালও তিনি কৃষিশিক্ষা প্রথম পত্রের পরীক্ষা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘প্রথমে বারণ করলেও পরে বাবা-মা ও স্বামী মত দিয়েছেন। তা না দিলে এক বছর পিছিয়ে যেতাম।’
কুমিল্লার স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞ দিলদার সুলতানা বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে বাচ্চা জন্ম দিলে কোনো সমস্যা নেই। সন্তান প্রসবের পরপরই মা হাঁটাচলা করতে পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে রক্তপাতের আশঙ্কা থাকে।’ prothom-alo
0 comments:
Post a Comment