যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সেই লজ্জাজনক অধ্যায়কে ক্যামেরাবন্দি করেছিলেন লিউইস হাইন। ১৮৭৪ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর জন্ম। শৈশবে এক দুর্ঘটনায় বাবাকে হারান। এরপর কলেজে পড়ার অর্থ জোগাড়ের জন্য তিনি কাজ শুরু করেন। নিজের জমানো অর্থ দিয়ে পড়াশোনা করেন। তাঁর পাঠ্য বিষয় ছিল সমাজবিজ্ঞান। এ বিষয়ে তিনি শিকাগো, কলম্বিয়া ও নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। পরে নিউইয়র্কের এথিক্যাল কালচার স্কুলে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন লিউইস হাইন।
সমাজের চলমান অবস্থা তুলে ধরতে আলোকচিত্রের প্রতি আগ্রহী হয়ে পড়েন হাইন। ক্যামেরাবন্দি করতে শুরু করেন যুক্তরাষ্ট্রের তত্কালীন সমাজব্যবস্থার চিত্র। সমাজকে বোঝার ও উপলব্ধির জন্য তিনি ছবি ব্যবহার করতে ছাত্রছাত্রীদের উত্সাহিত করেন। বিংশ শতকের গোড়ার দিকে যুক্তরাষ্ট্রে যখন প্রতিদিন হাজার হাজার অভিবাসী আসছিল, তখন তিনি ও তাঁর ছাত্ররা সেসব দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেন। ১৯০৪ থেকে ১৯০৯ সাল পর্যন্ত তিনি ২০০-রও বেশি ছবি তোলেন। তিনি অনুধাবন করেন, সমাজ পরিবর্তন ও সংস্কারের বিশ্লেষণে আলোকচিত্র হতে পারে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার।
বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়, ১৯০৮ সালে এই সমাজবিজ্ঞানী ও আলোকচিত্রীকে ডাকে ন্যাশনাল চাইল্ড লেবার কমিটি। শিশুদের কীভাবে তুলার কারখানা ও কয়লা খনির কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলো ক্যামেরাবন্দি করার দায়িত্ব পড়ে তাঁর ওপর। তাঁর বিখ্যাত আলোকচিত্রের মধ্যে আছে ১৯৩০ সালে আম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং নির্মাণে নিয়োজিত নির্মাণ শ্রমিকদের নিয়ে তোলা ছবি।
লিউইস হাইনের এই উদ্যোগ একসময় সফল হয়। কারখানায় কাজ করা শিশুশ্রমিকদের রক্ষা করতে যুক্তরাষ্ট্র শিল্প আইনে পরিবর্তন আনে। বন্ধ হয় অমানবিক শিশুশ্রম। prothom-alo
0 comments:
Post a Comment