শুক্রবার ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার ১২৫ কিলোমিটার উত্তরের ঢালাই জেলার বিরমানি পাড়া গ্রামে এ ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। ভারতের আধাসামরিক বাহিনী আসাম রাইফেলসের (এআর) একটি দল আমরিকান সি-৪৭বি বিমানের ডানা উদ্ধার করে। ৬৫ বছর আগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে এটি বিধ্বস্ত হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এআর-এর এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “৬৫ বছর আগে বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ায় উদ্ধার কাজ ছিলো খুব কঠিন। এ সময়ে বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার স্থান ও তার আশপাশের পরিবেশের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। তবে স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিরা বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা হালকা মনে করতে পারে এবং ঘটনাস্থল ও বিমানের আরোহীদের সমাধিস্থল খুঁজে বের করতে তারা আসাম রাইফেলসকে সহায়তা করে।”
আসাম রাইফেলসের ৩৪ জন সদস্য চার মাস ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চালিয়ে বিরমানি পাড়া গ্রামে এটি খুঁজে পায়। এ সময় তারা বারামুড়া, আথারামুড়া ও লংত্রাই নামের তিনটি পাহাড়ের ঘন জঙ্গলাকীর্ণ এলাকায় তল্লাসি চালায়।
এআর’র তথ্য অনুযায়ী, তীব্র ঝড়ের কারণে ১৯৪৬ সালের ১৭ মে সি-৪৭বি বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। তখন বিমানে ১১ জন আারোহী ছিলো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রবাহিনীর হাতে বন্দিদের নিয়ে রেঙ্গুন থেকে কলকাতা যাচ্ছিলো বিমানটি।
এ সময় মিত্রবাহিনী চীন-বার্মা-ভারত (সিবিআই) অপারেশনে অনেক কয়েকশ বিমান হারায়। প্রতিকূল আবহাওয়া, যান্ত্রিক ত্র“টি বা বিমান চালনার ত্র“টির কারণে মিত্রবাহিনীর এসব বিমান দুর্ঘটনার শিকার হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট প্রিজনার্স অব ওয়ার, মিসিং ইন অ্যাকশন অ্যাকাউন্টিং কমান্ড (জেপিএসি) ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলে এ পর্যন্ত ১৬টি বিমান বিধ্বস্তের স্থল চিহ্নিত করেছে।
লংথারাই পাহাড়ের জঙ্গলের বিভিন্ন অংশে এ বিমানের বিভিন্ন অংশ উদ্ধারের খবর আগেই পাওয়া গিয়েছিলো। শুক্রবার এ জঙ্গি বিমানের মূল অংশ উদ্ধার করা হয়।
ঢালাই জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপারিনটেনডেন্ট উত্তম মজুমদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঢালাই পাহাড়ে বেশ কয়েকবার বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার কথা শোনা গেছে। মার্কিন বিমান বাহিনীর চতুর্থ কমব্যাট কার্গো গ্র“প শিংগারবিল নামে পরিচিত আগরতলা বিমান বন্দর ব্যবহার করায় বিমানগুলো সম্ভবত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ই বিধ্বস্ত হয়। এই বিমানবন্দর থেকে সি-৪৬ কমান্ডো পরিবহন বিমান বার্মার ওপর দিয়ে চলাচল করতো।”
তিনি জানান, এই বিমানবন্দরটি একটি রসদ সরবরাহের রুট হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এখানে চলাচলকারী বিমান থেকে যৌথবাহিনীর পদাতিক সেনাদের রসদ ও গোলাবারুদ সরবরাহ করা হতো।
এর আগেও ত্রিপুরার কামালপুর এলাকার ডুমাচেরা ও ঢালাইয়ের গান্ডেচেরা থেকে গ্রামবাসী বিমানের ধ্বংসাবশেষ পেয়েছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
0 comments:
Post a Comment