গতকাল বৃহস্পতিবার সেনা সদর দপ্তরের সংবাদ সম্মেলনে এ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করে বলা হয়, সেনাবাহিনীর মধ্যম সারির কয়েকজন কর্মকর্তা এর সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সংখ্যা ১৪ থেকে ১৬ জনের বেশি নয়। তিনজনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়েছে সেনাবাহিনী। এ তথ্যের ভিত্তিতে অবসরপ্রাপ্ত দুই সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চাকরিরত একজন কর্মকর্তা সেনাবাহিনী থেকে পালিয়ে গেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। অভ্যুত্থান-চেষ্টার ঘটনা তদন্তে গত ২৮ ডিসেম্বর একটি তদন্ত আদালত গঠন করা হয়।
সেনাবাহিনীর শীতকালীন প্রশিক্ষণের শেষ দিন ছিল গতকাল। এ দিন বিকেলে সেনা অফিসার্স ক্লাবে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান সেনাবাহিনীর পার্সোনাল সার্ভিসেস পরিদপ্তরের (পিএস পরিদপ্তর) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাসুদ রাজ্জাক। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সেনাবাহিনীর ভারপ্রাপ্ত জাজ অ্যাডভোকেট জেনারেল লে. কর্নেল মুহাম্মদ সাজ্জাদ সিদ্দিক। চিফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) লে. জেনারেল মইনুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে মাসুদ রাজ্জাক বলেন, সম্প্রতি কিছু প্রবাসী বাংলাদেশির ইন্ধনে সেনাবাহিনীর সাবেক ও বর্তমান কিছু কর্মকর্তা ধর্মান্ধতাকে পুঁজি করে সেনাবাহিনীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে গণতান্ত্রিক ধারাকে ব্যাহত করার চেষ্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তা সফল হতে দেয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনীর একজন সাবেক কর্মকর্তা গত ১৩ ডিসেম্বর মেজর পদমর্যাদার আরেক কর্মকর্তাকে তাঁর সঙ্গে যোগ দিতে প্ররোচনা দেন। তবে ওই মেজর বিষয়টি তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানালে অবসরপ্রাপ্ত ওই কর্মকর্তাকে সেনা আইনের ২(১)(ডি)(i) এবং ৭৩ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, গ্রেপ্তার হওয়া ওই সাবেক কর্মকর্তার নাম এহসান ইউসুফ। তিনি বলেন, এই ঘৃণ্য পরিকল্পনার আরেক অংশীদার মেজর সৈয়দ মো. জিয়াউল হক গত ২২ ডিসেম্বর কর্মরত অন্য এক সেনা কর্মকর্তাকে একই ধরনের কার্যক্রম চালাতে প্ররোচনা দেন। ওই কর্মকর্তা বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানালে মেজর জিয়াউলের ছুটি ও বদলি আদেশ বাতিল করা হয়। তাঁকে ঢাকার লগ এরিয়া সদর দপ্তরে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু গত ২৩ ডিসেম্বর ছুটিতে থাকার সময় মেজর জিয়াউল পালিয়ে গিয়ে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নাশকতামূলক (সাবভারসিভ) কার্যক্রম চালানোর পাঁয়তারা করেন। তিনি এখনো তা করে চলেছেন।
অভ্যুত্থানের চেষ্টা প্রতিহত করল সেনাবাহিনী, গ্রেপ্তার দুই
সরকার উৎখাতের চেষ্টা ব্যর্থ (ভিডিও)
গতকাল বৃহস্পতিবার সেনা সদর দপ্তরের সংবাদ সম্মেলনে এ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করে বলা হয়, সেনাবাহিনীর মধ্যম সারির কয়েকজন কর্মকর্তা এর সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সংখ্যা ১৪ থেকে ১৬ জনের বেশি নয়। তিনজনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়েছে সেনাবাহিনী। এ তথ্যের ভিত্তিতে অবসরপ্রাপ্ত দুই সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চাকরিরত একজন কর্মকর্তা সেনাবাহিনী থেকে পালিয়ে গেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। অভ্যুত্থান-চেষ্টার ঘটনা তদন্তে গত ২৮ ডিসেম্বর একটি তদন্ত আদালত গঠন করা হয়।
সেনাবাহিনীর শীতকালীন প্রশিক্ষণের শেষ দিন ছিল গতকাল। এ দিন বিকেলে সেনা অফিসার্স ক্লাবে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান সেনাবাহিনীর পার্সোনাল সার্ভিসেস পরিদপ্তরের (পিএস পরিদপ্তর) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাসুদ রাজ্জাক। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সেনাবাহিনীর ভারপ্রাপ্ত জাজ অ্যাডভোকেট জেনারেল লে. কর্নেল মুহাম্মদ সাজ্জাদ সিদ্দিক। চিফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) লে. জেনারেল মইনুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে মাসুদ রাজ্জাক বলেন, সম্প্রতি কিছু প্রবাসী বাংলাদেশির ইন্ধনে সেনাবাহিনীর সাবেক ও বর্তমান কিছু কর্মকর্তা ধর্মান্ধতাকে পুঁজি করে সেনাবাহিনীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে গণতান্ত্রিক ধারাকে ব্যাহত করার চেষ্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তা সফল হতে দেয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনীর একজন সাবেক কর্মকর্তা গত ১৩ ডিসেম্বর মেজর পদমর্যাদার আরেক কর্মকর্তাকে তাঁর সঙ্গে যোগ দিতে প্ররোচনা দেন। তবে ওই মেজর বিষয়টি তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানালে অবসরপ্রাপ্ত ওই কর্মকর্তাকে সেনা আইনের ২(১)(ডি)(i) এবং ৭৩ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, গ্রেপ্তার হওয়া ওই সাবেক কর্মকর্তার নাম এহসান ইউসুফ। তিনি বলেন, এই ঘৃণ্য পরিকল্পনার আরেক অংশীদার মেজর সৈয়দ মো. জিয়াউল হক গত ২২ ডিসেম্বর কর্মরত অন্য এক সেনা কর্মকর্তাকে একই ধরনের কার্যক্রম চালাতে প্ররোচনা দেন। ওই কর্মকর্তা বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানালে মেজর জিয়াউলের ছুটি ও বদলি আদেশ বাতিল করা হয়। তাঁকে ঢাকার লগ এরিয়া সদর দপ্তরে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু গত ২৩ ডিসেম্বর ছুটিতে থাকার সময় মেজর জিয়াউল পালিয়ে গিয়ে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নাশকতামূলক (সাবভারসিভ) কার্যক্রম চালানোর পাঁয়তারা করেন। তিনি এখনো তা করে চলেছেন।
এ ছাড়া সুনিশ্চিত তথ্যের ভিত্তিতে দায়িত্বরত একজন কর্মকর্তাকে সরকারের আনুগত্য থেকে বিরত থাকার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মেজর পদবির সাবেক এক কর্মকর্তাকে গত ৩১ ডিসেম্বর সেনা আইনের ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়। জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তার নাম জাকির হোসেন বলে তিনি জানান।
মোহাম্মদ মাসুদ রাজ্জাক আরও বলেন, সেনাবাহিনীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কিছু তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়া এবং কয়েকজন গ্রেপ্তার হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ ডিসেম্বর মেজর জিয়াউল তথাকথিত গ্রেপ্তার ও নির্যাতন-সংক্রান্ত অবিশ্বাস্য গল্প তৈরি করে একটি উসকানিমূলক ই-মেইল তাঁর পরিচিতদের কাছে পাঠান। পরে তা সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ফেসবুকে সোলজারস ফোরাম নামের একটি পৃষ্ঠায় আবু সাঈদ নামের এক ব্যক্তি আপলোড করেন। পরে ওই কর্মকর্তা ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে মধ্যম সারির কর্মকর্তারা অচিরেই বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছেন’ শিরোনামে দুটি ই-মেইল ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেন। ৩ জানুয়ারি মেজর জিয়াউলের ইন্টারনেট বার্তাটি আমার দেশ পত্রিকা প্রকাশ করে। এরই ধারাবাহিকতায় ৮ জানুয়ারি নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহ্রীর মেজর জিয়াউলের ইন্টারনেটে পাঠানো খবরটিকে ভিত্তি করে দেশব্যাপী উসকানিমূলক প্রচারপত্র ছড়ায়। এরপর ৯ জানুয়ারি একটি রাজনৈতিক দল সেনাবাহিনীতে গুমের ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ করে, যা সেনাবাহিনীসহ সচেতন নাগরিকদের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত উসকানিমূলক বিতর্কের সৃষ্টি করে।
সংবাদ সম্মেলনে মাসুদ রাজ্জাক আরও জানান, গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক দুই কর্মকর্তা ও চাকরিরত কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সেনাবাহিনীর ঘাড়ে ভর করে গণতান্ত্রিক সরকারব্যবস্থাকে উৎখাতের ঘৃণ্য চক্রান্তের সঙ্গে সেনাবাহিনীতে চাকরিরত কিছু কর্মকর্তার সম্পৃক্ততার সুনির্দিষ্ট তথ্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। এ-সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য উদ্ঘাটনের জন্য গত ২৮ ডিসেম্বর একটি তদন্ত আদালত গঠন করা হয়, যার কার্যক্রম এখনো চলছে।
সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ৯ ও ১০ জানুয়ারি মেজর জিয়াউল তাঁর অপারেশনের পরিকল্পনার কপি ই-মেইলে চাকরিরত কর্মকর্তাদের কাছে পাঠিয়ে দেন। এরপর ১০ ও ১১ জানুয়ারি তথাকথিত সেনা-অভ্যুত্থানের প্রস্তুতির বিষয়ে মুঠোফোনে কয়েকজন কর্মকর্তার কাছে মেজর জিয়াউল জানতে চান এবং তাঁদের বারবার এ কাজে উদ্বুদ্ধ করতে থাকেন। একই রাতে মেজর জিয়াউল (সম্ভবত হংকংয়ে অবস্থান করছেন) বাংলাদেশি নাগরিক ইশরাক আহমেদের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করেন এবং দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সেনা-অভ্যুত্থানের বিষয়টি প্রচার করার জন্য বলেন।
মাসুদ রাজ্জাক জানান, এরই মধ্যে এ চক্রান্তের সঙ্গে জড়িত কিছু সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তা তাঁদের সম্পৃক্ততার কথা অকপটে স্বীকার করেছেন। তদন্ত শেষে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখতে এবং সমৃদ্ধির পথ সুগম করতে এ ধরনের ঘৃণ্য অপচেষ্টা দৃঢ়ভাবে প্রতিহত করতে হবে।
মাসুদ রাজ্জাক বলেন, অতীতের গণতন্ত্র ধ্বংসের বিভিন্ন ‘অপশক্তি’ দেশপ্রেমিক একটি রাষ্ট্রীয় শক্তি ‘সেনাবাহিনীর’ ওপর সওয়ার হওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত। তারা নিকট ও দূর-অতীতের মতো এবারও ধর্মান্ধের অনুভূতি, অপপ্রচার ও গুজব ছড়ানোর প্রক্রিয়াকে ব্যবহার করেছে। এসব ঘৃণ্য চক্রান্তকারীর দোসর হয়েছে ধর্মীয় অনুশাসন পালনে হঠাৎ অতিমাত্রায় কট্টর এবং পারিবারিক বন্ধন, চাকরি ও ব্যবসার ক্ষেত্রে বিচ্ছিন্ন ব্যক্তিরা। অপপ্রচার চালানোর জন্য ব্যবহূত হয়েছে স্বার্থান্বেষী সংবাদপত্র, নিষিদ্ধঘোষিত ধর্মভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের প্ল্যাটফর্ম। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর’ কাঁধে ভর করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে অতীতে বিভিন্ন অপশক্তি রাজনৈতিক সুবিধা লাভ করেছে কিংবা ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু সাংগঠনিকভাবে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সে বদনামের দায়ভার বহন করছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পেশাগতভাবে দক্ষ এবং সুশৃঙ্খল সেনাসদস্যদের বক্তব্য এই যে, ‘আমরা আর এ ধরনের দায়ভার আমাদের সংগঠনের কাঁধে নিতে চাই না।’
মাসুদ রাজ্জাক বলেন, দেশে-বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের মদদে এবং ধর্মান্ধের অনুভূতিকে পুঁজি করে চাকরিরত ও অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তাদের এটি একটি ঘৃণ্য প্রচেষ্টা। এর সঙ্গে জড়িতরা সেনাবাহিনী ও দেশের সব সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে স্বার্থান্বেষী মহলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সেনাবাহিনীর ঈর্ষণীয় সাফল্য, উন্নয়ন এবং ঐক্য বিনষ্ট করার প্রচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে এসব চক্রান্তের সঙ্গে জড়িত কিছু চাকরিরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাঁদের সম্পৃক্ততার কথা অকপটে স্বীকার করেছেন। তদন্ত শেষে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, পলাতক মেজর জিয়ার আইনের নিরাপত্তা ও সঠিক বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করার স্বার্থে আত্মসমর্পণ করা অপরিহার্য। মেজর জিয়ার বর্তমান অবস্থান ও কর্মকাণ্ড সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া গেলে তা সেনাবাহিনীতে জানাতে অনুরোধ করেন তিনি। prothom-alo
0 comments:
Post a Comment