এতক্ষণ বলা হলো রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় একটি অঞ্চল দাগেস্তানের কথা। দাগেস্তানের রাজধানী মাখাচকালা। কাস্পিয়ান সাগরের পশ্চিম উপকূল জুড়ে থাকা এই অঞ্চলটি রাশিয়ার শাসন থেকে বেরিয়ে স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করছে। লক্ষ্য ইসলামী দেশ গড়া। আর এই লক্ষ্যকে বাস্তবে রূপ দিতেই দাগেস্তানকে মানুষের কাছে প্রায় ‘দোজখ’ বানিয়ে ফেলেছেন বিদ্রোহীরা।
এই দাগেস্তান ইউরোপ তথা রাশিয়ার সবচেয়ে বিস্ফোরণ-প্রবণ এলাকা। আগে ককেশাস অঞ্চলে চেচনিয়ার যে অবস্থা ছিল এখন তাই দাগেস্তানের। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ দাগেস্তানে চলমান সহিংসতাকে ‘ভয়ংকর’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
মাখাচকালাসহ আশপাশের অন্য শহরের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় কালাশনিকভ রাইফেল নিয়ে আক্রমণ নিত্যদিনের ঘটনা। যেসব দোকানে মাদক বিক্রি হয় ইসলামপন্থী বিদ্রোহীরা সেই দোকানগুলো বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়। গত বছর বিদ্রোহ সংক্রান্ত ঘটনায় দাগেস্তানে ৩৭৮ জন মানুষ পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে গেছেন না ফেরার দেশে।
দেশটির সন্ত্রাসবাদবিরোধী একজন কর্মকর্তা বলেন, এই যোদ্ধারা নিজেদের ধার্মিক হিসেবে পরিচয় দিতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। দাগেস্তানের বাস্তবচিত্র জানতে বিবিসি এক প্রতিবেদক কথা বলেছেন অনেকের সঙ্গেই। তাঁদেরই একজন বশির। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে তিনি স্টেডিয়ামে ক্যামেরুনের স্ট্রাইকার স্যামুয়েল ইতোর খেলা দেখছিলেন। স্যামুয়েল ইতো এবং ব্রাজিলের রবার্তে কার্লোস আনঝি মাখাচকালায় একই সঙ্গে খেলেন। ‘দাগেস্তানে খেলতে পেরে খুশি। তবে এখানে বেশি সময় থাকি না। নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিটি খেলা শেষে সোজা মস্কোয় ফিরি।’ খেলা শেষে বিবিসিকে বলছিলেন ইতো।
রাজধানী মাখাচকালার প্রায় প্রতিটি এলাকায় সশস্ত্র পুলিশের প্রহরা দেখা যায়। সম্প্রতি এখানে একটি স্থানে দুটি গাড়িবোমা বিস্ফোরণ হয়েছে। এতে এক তরুণীসহ পুলিশের এক সদস্য নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ৬০ পুলিশ ও পথচারী আহত হয়।
সরকারি কর্মকর্তারা ভয়ে রাস্তায় বের হতে চান না। কারণ, বিদ্রোহীদের মূল টার্গেট তাঁরাই।
বশিরের সঙ্গে এক ইমামের পরিচয় আছে, যিনি রাশিয়ার আইন মেনে চলেন। ওই ইমাম বলে বলেন, ‘একজন মানুষ যদি শুধু ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষা পায়, তবে সে হূদয়হীন হবে। আবার যদি শুধু ধর্মীয় শিক্ষা পায় তবে গোঁড়ামি ভর করবে।’
দাগেস্তানের বেশির ভাগ মুসলমানই সুফি। তবে এদের একাংশ প্রচণ্ড গোঁড়া। স্বাধীনতা আন্দোলনে এমন যুবকদেরই ব্যবহার করা হচ্ছে। বিবিসি অনলাইন। prothom alo
0 comments:
Post a Comment