কানাডার অভিবাসন মন্ত্রী জেসন ক্যানি শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করে সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, অন্তত আগামী দুই বছর নতুন করে কোনো স্পন্সরশিপের আবেদন গ্রহণ করা হবে না। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে শুক্রবার (৪ নেভেম্বর) থেকেই। আর নতুন ব্যবস্থা হিসেবে পরিবারের বয়স্ক সদস্যদের জন্য 'মাল্টিপল এন্ট্রির' সুবিধাসহ দীর্ঘমেয়াদি 'সুপার ভিসা' চালু করা হচ্ছে ১ ডিসেম্বর থেকে।
'ফ্যামিলি রিইউনিয়ন কর্মসূচির' আওয়তায় কানাডায় এসে সন্তানদের সঙ্গে বসবাসের জন্য আবেদনকারীর সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকায় সরকার এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কানাডায় এসে স্থায়ী হওয়ার পর অভিবাসীরা এই কর্মসূচির আওতায় বাবা-মা এবং দাদা-দাদীদের স্পন্সর করে নিজের কাছে নিয়ে আসার সুযোগ পান। কিন্তু বিপুল সংখ্যক আবেদনের নিস্পত্তি না হওয়ায় গত কিছুদিন ধরে বড় ধরনের জট তৈরি হয়েছে। একেকটি আবেদনের নিস্পত্তি হতে সময় লাগছে ৭ থেকে ১০ বছর। এই সময় কমিয়ে আনতেই সরকার সুপার ভিসা চালু করছে বলে উল্লেখ করেন জেসন কেনি।
তিনি বলেন, "২০১২ সালে বাবা-দাদা হিসেবে কানাডায় আসতে আগ্রহীদের মধ্যে ২৫ হাজার প্রার্থীকে ভিসা দেওয়া হবে, গত বছরের তুলনায় এই সংখ্যা ৪৩ শতাংশ বেশি। তবে আগামী বছর থেকে রাজনৈতিক আশ্রয়, ন্যানি এবং মানবিক বিবেচনায় কানাডায় বসবাসের অনুমতিপ্রার্থীদের সুযোগ কমে আসবে।"
মন্ত্রী জানান, বর্তমানে বয়স্কদের স্পন্সরশিপের জন্য প্রায় ১ লাখ ৬৫ হাজার আবেদন জমে আছে ইমিগ্রশন বিভাগে। নতুন আবেদন নেওয়া বন্ধ রেখে বেশি লোককে সুপার ভিসায় কানাডার আসার সুযোগ দিলে আবেদনপত্রের এই জট অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন তিনি।
কানাডার অভিবাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ সালে অর্থনৈতিক অভিবাসী কোটায় ১ লাখ ৫৭ হাজার জনকে ভিসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে যা, চলতি বছরের তুলনায় ৩ শতাংশ কম। 'লিভ ইন কেয়ার গিভার থেকে স্থায়ী বাসিন্দা' ক্যাটাগরিতে ভিসার পরিমাণও অর্ধেক কমিয়ে ৯ হাজারে নিয়ে আসা হয়েছে।
বিদেশিদের রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার হারও কমিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কানাডা সরকার। চলতি বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ কম লোক আগামী বছর উত্তর আমেরিকার এই দেশে রাজনৈতিক আশ্রয় পাবে। চলতি বছর ২৯ হাজার লোককে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হলেও ২০১২ সালে এর পরিমাণহবে ২৬ হাজার।
'ফ্যামিলি রিইউনিফিকেশন' কর্মসূচির আওতায় ৬৫ হাজার ৫০০ থেকে ৬৯ হাজার আবেদনকারীকে ভিসা দেওয়াস হবে বলে জানিয়েছে অভিবাসন মন্ত্রণালয়। তবে স্ত্রী ও সন্তানদের কানাডায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি বাড়ছে। এই ক্যাটাগরিতে ভিসার পরিমাণ গতকারের ৪৮ হাজার থেকে কমিয়ে ৪৪ হাজার করা হয়েছে।
অভিবাসন মন্ত্রী জানান, সুপার ভিসার আওতায় প্রতিটি আবেদনপত্রের নিস্পত্তি করা হবে ৮ সপ্তাহের মধ্যে। এ ভিসায় এসে কানাডায় স্থায়ী হওয়ার সুযোগ না থাকলেও নাগরিকদের বয়স্ক বাবা-মায়েরা দুই বছর পর্যন্ত কানাডায় এসে সন্তানদের সঙ্গে থাকতে পারবেন।
"২০১৪ সালে আবারো স্পন্সরশিপের আওতায় বাবা-দাদাদের কানাডায় আসার আবেদন নেওয়া শুরু হবে। তার আগে বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আলোচনা করে নতুন একটি পদ্ধতি নির্ধারণ করা হবে," যোগ করেন তিনি।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
0 comments:
Post a Comment