সরকারের দমন অভিযানে মারা যায় আদ্দু দ্বীপের অনেক মানুষ। বেঁচে যাওয়া মানুষদের অনেককে করা হয় কারারুদ্ধ। এ কারণে বহু মানুষ আদ্দু ছেড়ে পাড়ি জমায় অন্য দ্বীপে। সৌন্দর্যে ও সম্পদে সমৃদ্ধ হয়েও বছরের পর বছর অবহেলিত থাকে দ্বীপটি। অবশেষে সার্ক সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দিনবদলের স্বপ্ন দেখছে আদ্দুর মানুষ। আদ্দু দ্বীপেই তৈরি হচ্ছে আঞ্চলিক বন্দর। সেই সঙ্গে সার্ক শীর্ষ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে উন্নয়নযজ্ঞ। শুধু তা-ই নয়, দ্বীপবাসীর সাহস আর আত্মত্যাগের স্বীকৃতি হিসেবে এখানে স্থাপিত হচ্ছে এক স্মারক। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এটি হবে সৈয়দ মাইনুল হোসেনের গড়া বাংলাদেশের জাতীয় স্মৃতিসৌধের একটি রেপ্লিকা বা প্রতিলিপি। সার্ক শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে হিথাধুতে আদ্দু স্টেডিয়ামের পাশে স্থাপন করা হচ্ছে এটি।
শিল্পী হামিদুজ্জামান খানের গড়া এ প্রতিলিপি আদ্দু তথা মালদ্বীপের মানুষের কাছে তুলে ধরবে বাংলাদেশকে। আরও তুলে ধরবে দেশে দেশে মানুষের অভিন্ন সংগ্রাম আর ত্যাগের সফলতা। মনে করা হচ্ছে, আদ্দুবাসীর কাছে এটি হবে দুই দেশের বন্ধুত্বের এক অনন্য নিদর্শনও।
আগামীকাল শুক্রবার দুপুরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে এটি সবার জন্য উন্মুক্ত করবেন।
গত ৭ নভেম্বর রাতে শিল্পী হামিদুজ্জামান খান প্রথম আলোকে বলেন, কংক্রিটের ওপর স্থাপন করা হবে স্টেইনলেস স্টিলের তৈরি জাতীয় স্মৃতিসৌধের এ প্রতিলিপি।
হামিদুজ্জামান খান বলেন, ‘১২ বছর ধরে দেশ ও দেশের বাইরে স্টেইনলেস স্টিলের বিভিন্ন ভাস্কর্য তৈরি করেছি। তবে এবারের এ কাজটি করার অনুভূতি একেবারেই আলাদা। বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের পরিচয়কে তুলে ধরার কাজ ছিল এটি।’
তিন ফুট উচ্চতা ও ১০০ কেজি ওজনের এ প্রতিলিপি মাত্র ১০ দিনে নির্মিত হয়েছে বলে জানান হামিদুজ্জামান খান।
এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রসচিব মোহাম্মদ মিজারুল কায়েস বলেন, ‘নিশ্চয়ই এটি একটি চমৎকার ভাবনার ফল। মালদ্বীপ সরকার ও বাংলাদেশ সরকার এমন কিছু করতে চেয়েছে, যা দুই দেশের মানুষকে কাছে আনবে। ’
গত ৭ নভেম্বর রাতে শিল্পী হামিদুজ্জামান খানের প্রতিলিপিটি যখন নামানো হচ্ছিল, তখন ভিড় জমে যায় আশপাশে।
স্থানীয় তরুণ মোহাম্মদ আনেস বলেন, ‘বাংলাদেশকে আমরা ভালোবাসি। এ স্মৃতিসৌধ দুই দেশের বন্ধুত্বের প্রতীক হয়ে থাকবে।’ প্রথম আলো
0 comments:
Post a Comment