দুই বছর আগে বোমা হামলায় বাবার মৃত্যুই এ দুরবস্থায় ফেলে দিয়েছে পাকিস্তানের পেশোয়ারের শিশু জাবিতাকে। ২০০৮ সালের ২৮ অক্টোবর পেশোয়ারে গাড়িবোমা হামলায় নিহত হয় ১২৫ জন। তাদেরই একজন জাবিতার বাবা খায়রুল্লাহ। এ ঘটনার পর জাবিতার অসহায় মা বাধ্য হয়ে তাকে কাজে পাঠান। সে কাজ করে একটি খাবারের দোকানে। কাজ করে সে পাকিস্তানি মুদ্রায় প্রতি মাসে পায় ৩০০ রুপি।
জাবিতা বলে, ‘বাজারে কাজ করতে আমার ভালো লাগে না। স্কুলই আমার ভালো লাগে। সেখানে আমি পড়াশোনা করি, আর বন্ধুদের সঙ্গে চোর-পুলিশ খেলি। কিন্তু দোকানে আমার কোনো বন্ধু নেই। তবু মা আমাকে এখানে কাজ করতে পাঠিয়েছেন।’ সাজ্জাদ ও আরিফ নামে জাবিতার আরও দুটি ছোট ভাই রয়েছে।
জাবিতার বাবা যে হামলায় নিহত হয়েছিলেন, সেই হামলার দায় স্বীকার করেনি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী। কিন্তু এ জন্য তালেবানকে দায়ী করেন কর্মকর্তারা। ২০০৭ সালে ইসলামাবাদে লাল মসজিদের সংঘর্ষের পর থেকে এ পর্যন্ত পাকিস্তানে তালেবানের হাতে প্রায় চার হাজার ৭০০ মানুষ নিহত হয়েছে বলে অভিযোগ করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পরোক্ষভাবে এ সহিংসতার সবচেয়ে বড় শিকার শিশুরা। মা-বাবা ও অভিভাবক হারিয়ে বেঁচে থাকার জন্য কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে হাজার হাজার শিশু।
সোসাইটি ফর দ্য প্রোটেকশন অব দ্য রাইটস অব দ্য চাইল্ডের পাকিস্তান শাখার গবেষণা ব্যবস্থাপক জরিনা জিলানি জানান, তাঁদের হিসাবমতে, পাকিস্তানের আট কোটি শিশুর মধ্যে প্রায় এক কোটি শিশুশ্রমের সঙ্গে জড়িত। ১৯৯৬ সালের হিসাব অনুযায়ী, শিশুশ্রমিকের সংখ্যা ছিল ৩৩ লাখ।
জরিনা জিলানি জানান, বোমা হামলার মতো সহিংস ঘটনার কারণে দেশে শিশুশ্রমের হার বাড়ছে। এএফপি।
0 comments:
Post a Comment