আরিয়া মরিয়ম : ঢাকা থেকে : খাদ্যপণ্যে ভেজাল বাংলাদেশের পুরনো খবর। প্রতিনিয়ত ভ্রাম্যমাণ আদালত ভেজাল খাদ্যপণ্য আটক করে অভিযুক্তদের জেলজরিমানা করছেন। এবার রাজধানীতে নতুন ভেজালের সন্ধান মিলেছে। ডিমেও পাওয়া গেছে ভেজাল। অস্বাভাবিক প্রকৃতির ডিমে ছেয়ে গেছে রাজধানীর দোকানপাট। এসব কিসের ডিম? এগুলো খাওয়া মানব দেহের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত কিনা? এমন নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে নগরবাসীর মাঝে। ঢাকা সিটি করপোরেশনের (ডিসিসি) কাছে এ ব্যাপারে নানা অভিযোগ আসছে। সম্প্রতি ডিসিসি নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে কিছু ডিম ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য পাঠায়। কিন্তু ওই সব পরীক্ষাগার থেকে ডিসিসিকে জানানো হয়েছে ডিম পরীক্ষার কোনো যন্ত্র নেই তাদের। ডিসিসি কর্তৃপক্ষ এখন এসব ডিম দেশের বাইরে পরীক্ষার জন্য পাঠানোর কথা ভাবছেন বলে জানা গেছে।
জানা যায়, গত ৮ অক্টোবর ডিসিসির অঞ্চল-৫ এর স্বাস্থ্য পরিদর্শক কামরুল হাসান রাজধানীর আগাসাদেক রোডের মিরনজল্লা বাজার থেকে ৮ হালি ডিম ক্রয় করেন। ডিম ভেঙে দেখেন ডিমের কুসুমের চারদিকে স্বচ্ছ জলীয় অংশের পরিবর্তে গোলাপি জলীয় অংশ। ডিমের আকৃতিও অস্বাভাবিক। তিনি ডিমগুলো ডিসিসির পরীক্ষাগারে পাঠান। ডিসিসির পরীক্ষাগারে 'ডিম' পরীক্ষার যন্ত্রপাতি না থাকায় ডিমগুলো কেন্দ্রীয় প্রাণীরোগ অনুসন্ধান গবেষণাগারে পাঠানো হয়। গত ১১ অক্টোবর ওই পরীক্ষাগার থেকে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডিম পরীক্ষা করার কোনো সুযোগ না থাকায় এ বিষয়ে মতামত দেওয়া গেল না। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য পরিদর্শক কামরুল হাসান বলেন, পুরান ঢাকায় এ ধরনের ডিমের কথা বেশি শোনা যাচ্ছে। অনেকে এসব দেখে ডিম খাওয়াও ছেড়ে দিচ্ছেন বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে ডিসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন বলেন, নগরীর স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য নিশ্চিত করতে কাজ করছে ডিসিসি। ডিসিসির পরীক্ষাগার অত্যন্ত নিম্নমানের। এখানে আধুনিক কোনো যন্ত্রপাতি নেই। নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে স্বাস্থ্য পরিদর্শকরা ডিমের ভেজালের কথা জানালে দেশের বিভিন্ন পরীক্ষাগারে যোগাযোগ করে জানা গেছে ডিম পরীক্ষা করার মতো যন্ত্রপাতি নেই পরীক্ষাগারগুলোতে। তিনি বলেন, খোঁজখবর নিয়ে জানতে পেরেছি বাংলাদেশের কোনো পরীক্ষাগারে 'ডিম' পরীক্ষা করা সম্ভব নয়। তাই পরীক্ষার জন্য এসব ডিম দেশের বাইরে পাঠানোর চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় প্রাণীরোগ অনুসন্ধান গবেষণাগারের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. বিধান চন্দ্র দাস বলেন, ডিমটি কোন প্রাণীর বা ব্যাকটেরিয়া আক্রান্ত কিনা তা যাচাই করার সুযোগ নেই প্রাণীরোগ গবেষণাগারের। তিনি বলেন, আমার জানামতে বাংলাদেশের অন্য কোথাও ডিম পরীক্ষার যন্ত্র নেই। বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ডিসিসির ডিমগুলো আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছিল। ডিমের স্বচ্ছ জলীয় অংশের এমন বিকৃতি আর কখনো দেখিনি আমি। তবে তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ডিম পরীক্ষা করার প্রযুক্তি রয়েছে। প্রয়োজনে এসব ডিম দেশের বাইরে পাঠানো যেতে পারে।
হলিউডবাংলা থেকে সংগৃহতি
0 comments:
Post a Comment