গত ২৩ সেপ্টেম্বর মুম্বাইয়ের খ্যাতিমান গজলশিল্পী গোলাম আলীর সঙ্গে একই মঞ্চে গান করেন জগজিৎ সিং। এ সময় হঠাত্ মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ শুরু হলে আয়োজকেরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। ওই দিন সন্ধ্যায় চিকিত্সকেরা জরুরি ভিত্তিতে তাঁর মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করেন। এরপর তাঁকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়।
গজলশিল্পী হিসেবেই তাঁর খ্যাতি বিশ্বজুড়ে। গত শতাব্দীর সত্তর ও আশির দশকে চিত্রা সিংয়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে খ্যাতির চূড়ায় পৌঁছেন জগজিত্ সিং। বলা হয়ে থাকে, ভারতের সংগীতের ইতিহাসে তাঁরাই প্রথম সফল জুটি।
জগজিৎ সিংয়ের জনপ্রিয় কয়েকটি গজল হলো—মেরি জিন্দেগি কিসি অর কি, মেরে নাম কা কোই অর হ্যায়, আপনি মর্জি সে কাহান আপনে সফর কি হাম, ও জো হাম মে তুম্মে কারার থা, পাত্তা-পাত্তা বুতা বুতা হাল হামারা জানে হ্যায় এবং হোসওয়ালো কো খবর।
‘গজল সম্রাট’ জগজিৎ সিং ১৯৪১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একাধারে গায়ক ও কম্পোজার ছিলেন। গান গেয়েছেন বাংলা, হিন্দি, উর্দু, পাঞ্জাবি ও নেপালি ভাষায়। তিনি এমন একসময় সংগীত জগতে প্রবেশ করেন যখন ভারতের সংগীত অঙ্গনে রাজত্ব করছিলেন পাকিস্তানি গজল গায়কেরা। অন্য অনেক গজল গায়কের মতো তিনি চলচ্চিত্রে গান গাওয়ার ব্যাপারে কোনো কঠোর মনোভাব দেখাননি। চলচ্চিত্রের জন্য গেয়েছেন তিনি। তাঁর অসাধারণ সুরেলা কণ্ঠ পাওয়া যায় আশির দশকের গোড়ার দিকের ‘প্রেম গীত’ ও ‘সাত সাত অ্যান্ড আর্থ’ চলচ্চিত্রে। চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্ট ও এর বাইরের ৬০টিরও বেশি অ্যালবামে গান গেয়েছেন।
জগজিৎ সিং শিল্পকলার প্রচলিত রীতি ও কৌশল এবং আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে গজলকে অন্য রকম মর্যাদায় আসীন করেছেন। তিনিই প্রথম ভারতীয় সংগীত পরিচালক যিনি মাল্টি-ট্র্যাক রেকর্ডিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাঁর ‘বিয়ন্ড টাইম’ অ্যালবামটি তৈরি করেছেন।
0 comments:
Post a Comment