এ ধরনের ব্যবসায় বিশেষ করে এসব দেশে সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার কারণে প্রতি বছর শতাধিক বাংলাদেশীর সম্পর্কোচ্ছেদ হচ্ছে। বিয়েবিচ্ছেদ এসব দেশে যেন নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। বাপ-দাদার পরিচয় বিকৃত করে আপন বোনকে বউ সাজিয়ে অনেকেই এ প্রবাসে নিয়ে এসেছেন। কাগজপত্র হওয়ার পর বিচ্ছেদ। এরপর বোনকে দিয়ে এ ব্যবসায়। স্ত্রীকে অন্যের বউ সাজিয়ে এ ব্যবসায় করতে গিয়ে অনেকেই এখন অশান্তিতে দিন কাটাচ্ছেন। মেয়েকে বউ সাজিয়ে এ ব্যবসায় এখন বেশ জমজমাট।
ফ্রান্স, বেলজিয়াম, হল্যান্ড ও জার্মানি প্রবাসী বাংলাদেশীরা জানান, মাঝে মধ্যে এ ঘটনা ধরা পড়ে এসব দেশে। অনেক সময় প্রকৃত আবেদনকারীরা এর ফলে বিব্রত হন। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ইউরোপের এসব দেশে ১০ থেকে ১৫ বছর অমানবিকভাবে সময় অতিবাহিত করলেও থাকার কাগজ মেলে না। কাগজ না পেলে দেশেও যেতে পারেন না। অনেকেই দেশে থাকতেই বিয়ে করে আসেন। তাদের কেউ কেউ প্রবাসে বউকে আনতে গিয়েও অন্যের দ্বারস' হন। সাময়িকভাবে নিজের বউকে অন্যের হাতে হস্তান্তর করেন। প্রবাসে কাগজ হয়ে গেছে এমন কারো সাথে নিজের বউকে আবারো বিয়ে দেখান। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এসব দেশে নিয়ে আসেন। আনার পর তিন বছর সাজানো বরের সাথে বিচ্ছেদের জন্য অপেক্ষা। নিজের কাছে স্ত্রী থাকলেও সাজানো ঘটনায় অনেক সময় স্ত্রী আগেই সংশ্লিষ্ট দেশে থাকার অনুমতি পেয়ে যান। অনেকের স্ত্রী নিজেকে আর নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন না বলে জানিয়েছেন প্রবাসীরা। দু’জনের মধ্যে খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে দূরত্ব অনেকটা বেড়ে যায়। পরে দু’জনের পথ দুই দিকে। এ ছাড়া অনেক ক্ষেত্রে যার সাথে সাজানো দ্বিতীয় বিয়ে, তার সাথেই চলে যায় আবেদনকারীর স্ত্রী। বিশেষ করে সামাজিক নিরাপত্তা এত শক্ত যে আমাদের দেশের মতো একজন আরেকজনের ওপর এসব দেশে নির্ভরশীল নন। এ ছাড়া মহিলা ও শিশুদের এ দেশে অধিকার বেশি। স্ত্রী কখনো স্বামীর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ করলেই হলো। বাড়ির ত্রিসীমানায় ঘরের কর্তার প্রবেশ নিষেধ হয়ে যায়।
ওদিকে ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা খরচ করে ইউরোপে আসা বাংলাদেশীরা খুব একটা সুখে নেই। ফ্রান্স বা বেলজিয়ামে কিছুটা কাজ জুটলেও স্পেন, ইতালিসহ কয়েকটি দেশে বেশ অমানবিকভাবে তারা দিন কাটাচ্ছেন। থাকার আবেদন অনুমোদনের পর সোস্যাল সিকিউরিটির আওতায় অনেকেই সর্বোচ্চ ৭৫০ ইউরো ভাতা পেয়ে থাকেন। কাজ না করেও এ টাকা থেকে কিছু স্বজনদের কাছে পাঠাতে পারেন। কাজ করলে আবার এ ভাতা বন্ধ। যত দিন কাগজ না পান, ৩৫০ ইউরো নিয়ে সন'ষ্ট থাকতে হয়। তখন ঘরভাড়া দিয়ে বেশ মানবেতর জীবন কাটাতে হয়। এ কারণেই ইউরোপে সহজে থাকতে বিয়ের দিকে ঝোঁকেন এসব তরুণ।
ওদিকে জায়গাজমি বিক্রি করে ইউরোপে স্বপ্ন নিয়ে আসা তরুণদের স্বপ্ন ক’দিন পরই নিভে যাচ্ছে। রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়ার পর যে কাউকে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে হয়। থাকার অনুমতি পেতে চাইলে এটা করতেই হয়। ইউসুফ নামে পুরনো ঢাকার এক তরুণ প্রথমে এসেছিলেন ইতালিতে। দেশটিতে রাজনৈতিক মামলা করে হেরে গেলে সোজা দেশে ফেরত। এ কারণে তিনি ঝুঁকি না নিয়ে চলে গেলেন ফ্রান্সে। দোকান বিক্রি করে ১৩ লাখ টাকা খরচ করেছেন তিনি। এখন বুঝতে পারছেন ভুল করেছেন। চোরের মতো থাকতে হচ্ছে। রাস্তায় প্লাস্টিক কাগজ ফেলে চায়নিজ খেলনা বিক্রি করেন। হঠাৎ পুলিশ এলেই প্লাস্টিক কাগজে সব খেলনা নিয়ে ভোঁদৌড়। অনেকেই দেশে রাজার হালে থাকলেও বিভিন্ন জায়গায় ভুট্টা পুড়িয়ে বিক্রি করে জীবন চালান। সবচেয়ে বেশি মানবেতর জীবন কাটাতে হচ্ছে গ্রিসে। ডাস্টবিন থেকে ডাস্টবিনে ঘুরে লোহাজাতীয় পণ্য খুঁজে তা ভাঙাড়ির দোকানে বিক্রি করতে হচ্ছে। না হলে লাল বাতিতে আটকা পড়া গাড়ি মুছে হাত বাড়াতে হয়। সমগ্র ইউরোপেই মুদির দোকান বা রেস্টুরেন্টে কাজ করেন বাংলাদেশীরা। হলিউড বাংলা
0 comments:
Post a Comment