গত আগস্টে ত্রিপোলির পতনের পর গাদ্দাফির জন্ম শহর সিরতে তুমুল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল তাঁর বাহিনী। গত বুধবার রাতে জোরালো হামলা চালায় জাতীয় অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের (এনটিসি) যোদ্ধারা। এতে কিছুটা পিছু হটে সমুদ্রতীরবর্তী এলাকার দিকে সরে যায় গাদ্দাফি বাহিনী।
গতকাল বৃহস্পতিবার খুব সকালে গাড়িবহর নিয়ে সিরত শহর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন গাদ্দাফি। ওই বহরে ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী আবু বকর ইউনূস ও গাদ্দাফির ছেলে মুতাসিম। স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে আটটার দিকে শহরের তিন-চার কিলোমিটার পশ্চিমে ওই গাড়িবহরের ওপর বিমান হামলা চালায় ন্যাটো বাহিনী। এতে বহরের প্রায় ১৫টি গাড়ি ধ্বংস হয়। গাদ্দাফিসহ আরও কয়েকজন বিমান হামলা থেকে বেঁচে যান। তাঁরা কাছাকাছি দুটি বড় কালভার্টের পানিনিষ্কাশন পথে আশ্রয় নেন। তাঁদের দেখে এগিয়ে আসে এনটিসি যোদ্ধারা।
সালেম বকর নামের এক এনটিসি যোদ্ধা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘প্রথমে আমরা তাঁদের লক্ষ্য করে বিমানবিধ্বংসী গোলা নিক্ষেপ করি। কিন্তু এতে কোনো কাজ হয়নি। তখন আমরা তাঁদের দিকে এগিয়ে যাই। গাদ্দাফির একজন যোদ্ধা কালভার্টের ভেতর থেকে বেরিয়ে আমাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে শুরু করেন।’
সালেম বকর আরও বলেন, ‘আমার মনে হয়, গাদ্দাফি তাঁর লোকজনকে গুলি না চালানোর নির্দেশ দেন। ওই যোদ্ধা তখন বলতে থাকেন, ‘আমার নেতা এখানে আছেন, আমার নেতা এখানে আছেন। গাদ্দাফি আছেন এবং তিনি আহত।’
স্থানীয় সময় দুপুরের দিকে গাদ্দাফিকে গুরুতর আহত অবস্থায় আটক করা হয়। আল-জাজিরা টেলিভিশনে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা গেছে, এনটিসি যোদ্ধারা রক্তাক্ত গাদ্দাফিকে নিয়ে টানাহেঁচড়া ও বিদ্রূপ করছে। এরপর একের পর এক কীভাবে ঘটনা ঘটেছে, ভিডিওতে তা স্পষ্ট বোঝা যায়নি।
তবে সালেম বকর বলেন, ‘আমরা কালভার্টের মধ্যে ঢুকে গাদ্দাফিকে বের করে আনি। তিনি বলছিলেন, ‘আমার অপরাধ কী, আমার অপরাধ কী। এসব কী হচ্ছে।’ এরপর আমরা তাঁকে একটি গাড়িতে তুলি।’
নিজেকে প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করে এক ব্যক্তি বিবিসিকে বলেন, স্থানীয় সময় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কেউ একজন নাইন এমএম আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গাদ্দাফির পেটে গুলি করেন।
এনটিসির কর্মকর্তা আবদেল মজিদ বলেন, ‘গাদ্দাফি দুই পায়েই আঘাত পেয়েছিলেন। এ ছাড়া তিনি মাথাতেও চোট পান। দুই পক্ষে অনেক গোলাগুলি হয় এবং গাদ্দাফি নিহত হন।’ রয়টার্স ও বিবিসি অনলাইন।
0 comments:
Post a Comment