ফুল কিংবা ফলের মৌসুম ছাড়া বছরের অন্যান্য সময়ে এ গাছ নিতান্তই সাদামাটা গোছের। অধিকাংশ সময়ই দৃষ্টি এড়িয়ে যায়। কিন্তু ফলের মৌসুমটা উপেক্ষা করা সত্যিই কঠিন। সুদর্শন এই ফলগুলো সহজেই নজর কেড়ে নেয়। একসময় যখন কোনো সাবান আবিষ্কৃত হয়নি, তখন রিঠার পাতা ও ফল সাবানের বিকল্প হিসেবে ব্যবহূত হতো। প্রাচীন ইতিহাস থেকে জানা যায়, একসময় বনচারী সাধুসন্তরা গা ধোয়ার কাজে রিঠা ফল ব্যবহার করতেন।
গাছ বহু শাখা-প্রশাখাবিশিষ্ট, ১০ থেকে ১২ মিটার উঁচু হতে পারে। পত্রিকার সংখ্যা অসংখ্য। পত্রদণ্ড ২০ থেকে ২৫ সেন্টিমিটার লম্বা। ফুল সাদাটে ও রোমশ। বহির্বাস পাঁচটি; পাপড়ি সরু ও চার থেকে পাঁচটি। প্রস্ফুটনকাল জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি এবং ফলের সময় জুন-জুলাই। ফল শাঁসালো। কাঁচা রং সবুজাভ, পাকলে হলুদ-সোনালি। বীজ পানিতে ভিজিয়ে রাখলে ফেনা হয়। উলের তৈরি পোশাক পরিষ্কারের জন্য এই ফেনা উত্তম। এখনো দেশের কোথাও কোথাও এ পদ্ধতিতে কাপড় ধোয়া হয়। বিউটি পারলারগুলোতেও শ্যাম্পুর বিকল্প হিসেবে চুল ধোয়ার কাজে ব্যবহূত হতে দেখা যায়।
রিঠার ইংরেজি নাম Soap Plant, মানে সাবানগাছ। অন্যান্য নামের মধ্যে আছে Soap Nut, Soap Berry, Wash Berry ইত্যাদি। এরা উত্তর ভারত ও হিমালয়ের প্রজাতি। এই গণে প্রজাতি সংখ্যা প্রায় ১৩। Sapindus mukorossi ছোট জাতের রিঠা। সাধারণত এ প্রজাতিটিই বাগানে রোপণ করা হয়। দেখতে সুদর্শন। পত্রদণ্ড ১৫ থেকে ৪৫ সেন্টিমিটার, পাতা বিপ্রতীপভাবে বিন্যস্ত। ফুল সাদাটে বা বেগুনি। ফল প্রায় গোলাকার।
রিঠা বমনকারক, বাতনাশক ও গর্ভপাতক। মৃগী, হাঁপানি ও মূর্ছাসহ আরও অনেক রোগে ব্যবহার্য। বীজের শাঁস কাপড় জড়িয়ে শ্বাস টানলে হাঁপানির উপশম হয়। কাঠ বেশ শক্তপোক্ত, সাধারণত তেলের ঘানিতে ব্যবহার করা হয়। গাছের শিকড়েও প্রচুর পরিমাণে সেপুনিন আছে। prothom=alo
0 comments:
Post a Comment