গত সপ্তাহে আর্কটিক সমুদ্রের বরফের পরিমাণ নির্ণয় করতে গিয়ে এসব তথ্য জানতে পারেন বারমেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল ফিজিকস বিভাগের সদস্যরা। বর্তমানে আর্কটিক সমুদ্রের বরফের পরিমাণ ৪ দশমিক ২৪ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার। এটা কয়েক দিন পর আরও কমে যাবে। কারণ বরফ গলার মৌসুম শেষ হতে এখনো দুই সপ্তাহ বাকি। এর আগে ২০০৭ সালে এখানে সর্বনিম্ন বরফের পরিমাণ পরিমাপ করা হয়েছিল ৪ দশমিক ১৩ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার। যেখানে সত্তরের দশকের শুরুতে এটা ছিল প্রায় সাত মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার। বারমেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্ট ফিজিকস বিভাগ পরিচালিত ফিজিক্যাল অ্যানালাইসিস অব রিমোট সেন্সিং ইমেজ ইউনিটের প্রধান জর্জ হেস্টার বলেছেন, ‘সেপ্টেম্বরের ৮ তারিখে, আর্কটিক সমুদ্রের বরফের পরিমাণ ছিল ৪ দশমিক ২৪ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার। ৭০-এর দশকে এই বরফের পরিমাপ শুরু করার পর থেকে এটাই এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে আছে।’
আর্কটিক সমুদ্রের বরফ গলার ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা অনেক বেড়ে যেতে পারে এবং প্রাণ-প্রকৃতির ওপর অনেক নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। আর্কটিকের এই বরফগুলো সূর্যরশ্মি প্রতিফলিত করে এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধ করে। কিন্তু যখন বরফগুলো গলে যায়, তখন নীল সমুদ্রের জলগুলো সূর্য থেকে আগত তাপগুলো শুষে নেয়। ফলে তাপমাত্রাও অনেক বেড়ে যায়। এই উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে গলে যেতে পারে গ্রিনল্যান্ডের বিশাল বিশাল বরফখণ্ড। এর ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যেতে পারে সাত মিটার পর্যন্ত। আর্কটিকের এই বরফগলন নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে ওই অঞ্চলের বন্য প্রাণীদের উপরেও। গবেষকেরা তাঁদের প্রতিবেদনে লিখেছেন, ‘ছোট ছোট প্রাণী, মাছ থেকে শুরু করে পোলার বিয়ারদের জীবনধারণ করা আরও কঠিন হয়ে উঠবে। আর এটা এই বরফ গলার সরাসরি প্রভাব।’
প্রায় এক লাখ ২৫ হাজার বছর আগে পৃথিবী একবার এই আর্কটিক সমুদ্রকে বরফশূন্য অবস্থায় দেখেছিল। এইভাবে বরফ গলতে থাকলে আবারও আমরা এ ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারি বলে সতর্ক করে দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা এবং এটাকে খুব গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করার প্রতিও জোর দিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। সেন্টার ফর বায়োলজিক্যাল ডাইভারসিটির ক্লাইমেট সায়েন্স ডিরেক্টর শেন উল্ফ বলেছেন, ‘আর্কটিক সমুদ্রের এই দ্রুত বরফগলন সবার জন্য একটা সতর্কবার্তা। এর ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলাফল আমরা হাতেনাতে পাচ্ছি। আর এগুলো গোটা দুনিয়াতেই অনেক বিধ্বংসী প্রভাব ফেলছে।’ ডেইলি মেইল।
0 comments:
Post a Comment