পৃথিবীর সোনা পৃথিবীর নয়

একজন কাঠুরিয়া যেমন সোনার কুড়ালের লোভ ছাড়তে পারেনি, তেমনি সোনার ডিম পাড়া রাজহাঁসের মালিকও পারেনি সোনার লোভ ছাড়তে। চাঁদ কিংবা মঙ্গলে বলুন, সেখানে গিয়েও মানুষ সোনার খোঁজ করেছে। সোনা নিয়ে রয়েছে এমন অসংখ্য গল্প। এর লোভ সংবরণ করাই যেন ভুলে গেছে মানুষ। সোনা ও প্লাটিনাম অতি মূল্যবান ধাতু হওয়ায় বিশ্বের নামকরা সব ভূতত্ত্ব্ববিদ দেশে দেশে ক্লান্তিহীনভাবে ছুটে চলেছেন কাঙ্ক্ষিত সেই সোনার খনির রহস্যের খোঁজে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা এসব মূল্যবান ধাতুর সৃষ্টির রহস্যের সন্ধানে যেমন গবেষণার অন্ত নেই, তেমনি সোনা আবিষ্কারের তথ্যেরও যেন শেষ নেই। এবার ভূতত্ত্ববিদরা সোনা ও প্লাটিনামের সৃষ্টি সম্পর্কে জানিয়েছেন এক চমকপ্রদ তথ্য। সম্প্রতি এক গবেষণা শেষে ব্রিসটল বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল ভূতত্ত্ববিদ জানিয়েছেন, মূলত আজ থেকে প্রায় ৪০০ কোটি বছর আগে কোনো এক উল্কাপিণ্ডের বিস্ফোরণে পৃথিবীতে সোনা ও প্লাটিনামসহ বিভিন্ন মূল্যবান ধাতু ছড়িয়ে পড়েছে। তাঁদের ধারণা, ৩৯০ কোটি বছর আগে থেকে পৃথিবীতে সোনা ও প্লাটিনামের অস্তিত্ব পাওয়া যায়, যার সৃষ্টি ওই উল্কাপিণ্ডের বিস্ফোরণের মধ্য দিয়েই। ভূতত্ত্ববিদদের ধারণা মতে, পৃথিবীতে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি পরিমাণ সোনা ও প্লাটিনামের অস্তিত্ব বিরাজমান। সৌরজগতে বিভিন্ন সময় উল্কাপিণ্ডের বিস্ফোরণের ফলে পৃথিবীর উপরিভাগে এসব মূল্যবান ধাতুর সৃষ্টি হয়েছে।

ভূতত্ত্ববিদদের মতে, পৃথিবীতে এক ধরনের লৌহকণিকা রয়েছে, যার সংস্পর্শে এসে সৌরজগতে বিস্ফোরিত উল্কাপিণ্ডগুলো সোনা ও প্লাটিনামসহ মূল্যবান ধাতুতে পরিণত হয়। তাঁরা জানান, পৃথিবী সৃষ্টির শুরু থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে সৌরজগতে উল্কাপিণ্ডের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। আর যখনি বিস্ফোরিত উল্কাপিণ্ডের অংশগুলো পৃথিবীতে এসে পড়েছে, তখনি পৃথিবীতে বিদ্যমান লোহার সংস্পর্শে এসে তা সোনা ও প্লাটিনামের মতো মূল্যবান ধাতু সৃষ্টি করেছে।

ব্রিসটল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট ভূতত্ত্ববিদ ড. মাথিয়াস উইলবোল্ড জানান, তাঁরা পৃথিবীতে মূল্যবান ধাতু ও উপরিভাগে ছড়িয়ে থাকা লোহার সঙ্গে উল্কাপিণ্ডের বিস্ফোরিত অংশ পরীক্ষা করে তাতে একই ধরনের উপাদান খুঁজে পেয়েছেন। যার সংমিশ্রণে সোনা ও প্লাটিনামসহ মূল্যবান ধাতু তৈরি হয়। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইন।

কালের কন্ঠ