খোঁজে নানান ফাঁক-ফোঁকর
যা দেখে তাই চায় পেতে
কারণটা এই, সে কিশোর।’
কৈশোরের ধর্ম তো এমনটাই। এ বয়সে সবকিছুতে যেন বিস্ময়, পুলক ও চমক জাগে। চোখ থেকে একে একে সরে যায় শৈশবের পর্দা। উঁকি দেয় দেহ-মনে শিহরন জাগানো কৈশোর। এ বয়সের অনুভূতিগুলো যেমন প্রিয় মানুষের জন্য সজীব হয়ে ওঠে, তেমনি সেই মানুষের কর্মকাণ্ডও তাকে আলোড়িত করতে থাকে। সে মুগ্ধচোখে উপভোগ করে চলচ্চিত্রের অভিনেতা বা অভিনেত্রীদের সব কর্মকাণ্ড। তাঁদের হাঁটা-চলা, কথা বলা, চুলের ছাঁট, পোশাক—সবকিছুই প্রিয় হয়ে ওঠে।
বিবিসির এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলচ্চিত্রে যখন পছন্দের কোনো তারকা ধূমপান করে, তখনো মুগ্ধতা কমে না কিশোর-কিশোরীদের। এই মুগ্ধতা একসময় পরিণত হয় অনুকরণে। তারা পছন্দের ওই অভিনেতার মতোই একই কায়দায় ধূমপান করতে শুরু করে। আর এভাবে একসময় ধূমপানে আসক্ত হয়ে পড়ে এই অবুঝ কিশোর-কিশোরীরা।
গবেষকেরা ব্রিটেনে ১৫ বছর বয়সী প্রায় পাঁচ হাজার কিশোর-কিশোরীর ওপর জরিপ চালিয়ে এমন তথ্য দিয়েছেন। ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা বলছেন, কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ধূমপানের প্রবণতা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। এটি রোধে সতর্কতা দরকার। জার্নাল থোরাক্সে ওই গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়।
বিবিসিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে গবেষকেরা তাঁদের গবেষণার খুঁটিনাটি ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করেছেন। ২০০১ থেকে ২০০৫ সালে বক্স অফিসে সাড়া জাগানো ৩৬০টি চলচ্চিত্রের ওপর জরিপ চালান তাঁরা। স্পাইডার ম্যান, ব্রিজেথ জোনস অ্যান্ড দ্য মেট্রিক্স-এর মতো চলচ্চিত্রে একের পর এক ধূমপানের দৃশ্য দেখানো হয়েছে। এসব চলচ্চিত্র যারা দেখেছে, তাদের মধ্যে ৭৩ শতাংশ কিশোর-কিশোরী ধূমপান করার চেষ্টা চালিয়েছে। এদের মধ্যে আবার ৫০ শতাংশ নিয়মিত ধূমপান শুরু করেছে।
প্রধান গবেষক আন্দ্রে ওয়ালেন বলেন, ব্রিটেনের অর্ধেকেরও বেশি চলচ্চিত্রে অহরহ ধূমপানের দৃশ্য দেখানো হয়। আর এতে সরাসরি প্রভাবিত হয় ১৫ বছর বা এর কম বয়সী কিশোর-কিশোরীরা। তিনি আরও বলেন, কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে অনুকরণের প্রবণতা সব সময়ই বেশি। তারা পছন্দের চিত্রতারকাকে অনুকরণ করে। একইভাবে তাঁদের ধূমপানকেও অনুকরণ করতে থাকে। আর এভাবে একপর্যায়ে ধূমপায়ী হয়ে ওঠে কিশোর-কিশোরীরা। তবে ধূমপায়ীদের সংগঠন ফরেস্টের পরিচালক সিমন ক্লার্ক বলেন, এ ধরনের ধারণার কোনো ভিত্তি নেই।
0 comments:
Post a Comment