সিনেমা-উপন্যাসে বিচ্ছেদকাতর পুরুষের পরিণতি অবলোকন করেছে অনেকেই। ‘দেবদাস’ সিনেমার কথাই ধরা যাক না। ছবিতে প্রেমিকা পার্বতীকে হারিয়ে প্রেমিক দেবদাসের মদ্যপ, নির্জীব জীবনযাপন আর এর পরিণতিতে অকালমৃত্যুর দৃশ্য অবলোকন করেছে শতসহস্র চোখ। এক কথায় বলতে গেলে এ ছিল বিচ্ছেদেরই ফল।
সিনেমা-উপন্যাসের উল্লিখিত চিত্র কিন্তু বাস্তবেও। যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনার ওয়েক ফরেস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রবিন সিমন পরিচালিত সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে এমন তথ্যই। গবেষণা থেকে জানা যায়, সুসম্পর্কে নারীর চেয়ে পুরুষই উপকৃত হয় বেশি। আর সম্পর্কের অবনতি ঘটলে কিংবা বিচ্ছেদে পুরুষের ক্ষতিটাই বেশি। সিমনের এমন তথ্যে সায় দিয়েছেন অনেক গবেষকই। তাঁদের মতে, বিচ্ছেদে পুরুষের আত্ম-সম্মানবোধে বড় ধরনের ধাক্কা লাগে। অথচ নারীদের মতো পুরুষেরাও বন্ধু-বান্ধব কিংবা পরিবারের কাছে তাঁদের মনোবেদনা প্রকাশ করতে পারেন না।
এ প্রসঙ্গে নারী-পুরুষ সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ সীমা হিঙ্গোরানি বলেন, ‘হূদয়-ভঙ্গের ঘটনাগুলো পুরুষের অহংবোধ ও আত্মসম্মানে তীব্র নাড়া দেয়। তাই বিচ্ছেদে নারীরা বেশি যাতনা ভোগ করেন—এমনটা কেবল প্রবাদেই সম্ভব।’ তিনি আরও বলেন, পুরুষেরা সাধারণত নিজেদের আবেগ দমিয়ে রাখতেই পছন্দ করেন। তবে হূদয়-ভঙ্গের সময় তাঁরা এ সক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেন। এ সময় তাঁরা কাঁদেন না। তবে কয়েকটি সাধারণ বিষয় কাজ করে তাঁদের মধ্যে। এর মধ্যে রয়েছে, ঠিকমতো না খাওয়া, ঘুমে অনিয়ম, যখন-তখন রেগে যাওয়া, অতিরিক্ত কাজে নিজেকে ডুবিয়ে রাখা, এমনকি অ্যালকোহল পান।
হিঙ্গোরানির মতোই মত দিয়েছেন আরেক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ড. রাজন ভোঁসলে। তিনি বলেন, সম্পর্কে জড়ানোর পর পুরুষেরা খুবই হিসাবি হন। তাঁরা ভালো-মন্দ দুটি দিকই দেখে থাকেন। নারী যখন তাঁর সঙ্গ ত্যাগ করেন, সেটা পুরুষের কাছে একরকম পরাজয়ই।
এমন পরাজয়ের কথা স্বীকার করেছেন জগদ্বিখ্যাত মার্কিন মুষ্টিযোদ্ধা মাইক টাইসনও। যুক্তরাষ্ট্রের এক টক শোতে তিনি বলেছিলেন, ‘২০ বছর আগে অভিনেতা ব্রাড পিটের হাত ধরে আমার সাবেক স্ত্রী রবিন গিভেন্সের গাড়ি থেকে নামার দৃশ্য দেখে হূদয় ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছিল।’ তাঁর ভাষ্যমতে, ‘তত্ক্ষণাত্ আমি শক্তিশালী ঘোড়া থেকে ভেজা নুডলস হয়ে গিয়েছিলাম।’ টাইমস অব ইন্ডিয়া। prothom-alo
0 comments:
Post a Comment