নিহত যুগল হলো কাঠি ইউনিয়নের কাঠি গ্রামের অ্যাঞ্জেল শেখের ছেলে সাউদ শেখ (১৬) ও একই ইউনিয়নের খেলনা গ্রামের মরহুম জাহিদ মোল্লার মেয়ে মিতু খানম (১৬)।
সাউদ ঢাকার মিরপুরে একটি স্কুলের এবং মিতু কাঠি কেকেটিএইচএমসি উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। বাবা মারা যাওয়ার পর মিতু, তার ছোট বোন ও মা নানাবাড়িতে থাকত।
কেকেটিএইচএমসি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলীপ কুমার পাল বলেন, দুই বছর আগে সাউদ ও মিতুর প্রেমের বিষয়টি জানাজানি হলে সাউদকে তার পরিবার এখান থেকে নিয়ে ঢাকার একটি স্কুলে ভর্তি করায়। অন্যদিকে সম্প্রতি ময়মনসিংহের এক ছেলের সঙ্গে মিতুকে বিয়ে দেন তার মামারা। কিছুদিন আগে মিতু গ্রামে এসে দশম শ্রেণীতে ক্লাস করা শুরু করে।
সাউদের পরিবারের বরাত দিয়ে গোপালগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) স্মরজিৎ বিশ্বাস বলেন, সোমবার রাতে সাউদ ঢাকা থেকে কাঠিতে আসে। তবে সে গ্রামের বাড়ি যায়নি। সাউদ আগে থেকে হয়তো মিতুর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে এবং সোমবার রাতে তার সঙ্গে দেখা করে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। ওই রাতের কোনো এক সময় তারা দুজন কাঠিবাজারসংলগ্ন গ্রামীণফোনের টাওয়ারে উঠতে পারে। পরে সকাল পৌনে সাতটার দিকে টাওয়ার থেকে নিচে লাফিয়ে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলে তাদের মৃত্যু হয়।
এসআই স্মরজিৎ বলেন, গতকাল সকালে লাশ উদ্ধারের সময় দেখা গেছে, ওড়না দিয়ে দুজনের দুই হাত একসঙ্গে বাঁধা। দুজনের চোখও ছিল বাঁধা। এসব দেখে মনে হচ্ছে, পরিকল্পিতভাবে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে তারা আত্মহত্যা করেছে।
সাউদ ও মিতুর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
যোগাযোগ করলে মিতুর মামাতো ভাই স্কুলশিক্ষক শফিকুল আলম বলেন, সাউদের পরিবার বাড়াবাড়ি না করলে ওরা হয়তো আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিত না।
এ ব্যাপারে সাউদের বাবা অ্যাঞ্জেল শেখ বলেন, ‘আমিও তো মানুষ, তার ওপর বাবা। যদি একবার জানতে পারতাম ওরা মরে যাবে, তাহলে আমি সব মেনে নিতাম।’
0 comments:
Post a Comment