আমদানি করা যন্ত্রপাতির মধ্যে আছে প্রতিটি ৩০ টন ভারী কনটেইনার উত্তোলনে সক্ষম ছয়টি স্ট্র্যাডেল ক্যারিয়ার। এই ধরনের যন্ত্রের সাহায্যে পণ্যভর্তি কিংবা খালি কনটেইনার এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় আনা-নেওয়া করা হয়। একটি কনটেইনারের ওপর পর পর তিনটি পর্যন্ত কনটেইনার স্তূপীকৃত করার কাজও স্ট্র্যাডেল ক্যারিয়ারের মাধ্যমে করা হয়।
যন্ত্রপাতি দেশে পৌঁছে যাওয়ার পর এ-সংক্রান্ত পরির্দশক দলের জার্মানি সফরের বিষয়টি স্বীকার করেন চট্টগ্রাম বন্দরের যন্ত্রপাতি সংগ্রহ-সংক্রান্ত প্রকল্পের পরিচালক ও প্রধান প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) খায়রুল মোস্তফা। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘যন্ত্রপাতি আগে চলে আসায় পরিদর্শক দল জার্মানি গিয়ে এখন খুচরা যন্ত্রাংশ পরিদর্শন করবে।’ তিনি বলেন, স্ট্র্যাডেল ক্যারিয়ারের জন্য অনেক খুচরা যন্ত্রাংশ দরকার হয়, যা শুধু সরবরাহকারীর কাছ থেকে নেওয়ার চুক্তি হয়েছে।
সূত্রমতে, স্ট্র্যাডেল ক্যারিয়ার কেনার দরপত্রে এসব যন্ত্রপাতির দাম, বন্দর কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ ব্যয় ও প্রশিক্ষণের খরচ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ফলে বন্দর কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ ব্যয় আপাতত জার্মানির যন্ত্র সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বহন করলেও পরোক্ষভাবে ওই ব্যয়ভার বন্দরের ওপরই পড়ছে।
জানা যায়, বন্দরের যে প্রতিনিধিদল স্ট্র্যাডেল ক্যারিয়ার পরিদর্শনে গেছেন তাঁদের মধ্যে আছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের প্ল্যান্ট ম্যানেজার নাজমুল হক, নির্বাহী প্রকৌশলী অপূর্ব কুমার চক্রবর্তী, সহকারী প্রকৌশলী সাইদুর রহমান এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (প্রশাসন-২) এম এম মামুনর রহমান খলিলি। প্রতিনিধিদলে প্রথমে মন্ত্রণালয়ের উপসচিবের পরিবর্তে চট্টগ্রাম বন্দরের প্রধান প্রকৌশলী অঞ্জন কান্তি চৌধুরীর নাম ছিল। কিন্তু সফরের বিষয়টি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হলে সেখান থেকে প্রধান প্রকৌশলীর নাম বাদ দিয়ে উপসচিবের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয় বলে অভিযোগ আছে।
বিষয়টি স্বীকার করে অঞ্জন কান্তি চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘কেন আমাকে বাদ দেওয়া হলো, তা আমি জানি না। প্রতিনিধিদল যাওয়ার আগে স্ট্র্যাডেল ক্যারিয়ার এসেছে কি না, সেটাও আমার জানা নেই। আমাকে বাদ দেওয়ায় এটা নিয়ে আমার আগ্রহও নেই।’
গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে সরেজমিনে দেখা যায়, স্ট্র্যাডেল ক্যারিয়ার ছয়টি জাহাজ থেকে নামিয়ে সিসিটি ইয়ার্ডের পাশে প্ল্যান্ট ম্যানেজারের কার্যালয়ের পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। এর পাশে অন্যান্য স্ট্র্যাডেল ক্যারিয়ার দিয়ে কনটেইনার ওঠানো-নামানো চললেও নতুনগুলো কাজে লাগানো হচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে বন্দরের দায়িত্বশীল একজন প্রকৌশলী জানান, পরিদর্শক দল বিদেশ থেকে ফিরে এসে স্ট্র্যাডেল ক্যারিয়ারগুলো মানসম্মত বলে প্রতিবেদন দেওয়ার পরই এগুলো দিয়ে কনটেইনার ওঠানো-নামানোর কাজ শুরু করা হবে।
আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে প্রতিনিধিদলের দেশে ফেরার কথা। শুধু যন্ত্রপাতি পরিদর্শনের প্রয়োজনে সাত কর্মদিবসের জন্য ওই প্রতিনিধিদল জার্মানি পাঠানো হয় বলে জানা গেছে।
0 comments:
Post a Comment