হৃদয় ভাঙার ঝুঁকি

‘জীবনে আজ তুমি নেই তাই এ জীবনের কোনো দাম নেই?’ এটা কি কেবলই গান, নাকি রয়েছে অন্য কোনো আশঙ্কা! কিংবা ‘পিরিতি ভাঙিলে পরে নাহি লাগে জোড়া’ বাংলা লোক গানের মর্মবিদারী এ আহাজারিটুকু কি কেবলই বাণী? তবুও হয়তো আমরা বলব, ‘কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে’!

আর এদিকে বিজ্ঞানিরা বলছেন, মধুময় সম্পর্ক ভেঙে গেলে কিংবা ভালোবাসার পতন হলে স্বাস্থ্যগতভাবে হৃদযন্ত্রের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ে। প্রেম বিচ্ছেদের কারণেই অনিবার্য হয়ে ওঠে মৃত্যু। বিচ্ছেদের ফলে নারী-পুরুষ উভয়েই হৃদয়সংক্রান্ত ঝুঁকিতে পড়েন। তবে গবেষকরা জানিয়েছেন, এ ক্ষেত্রে পুরুষের তুলনায় নারীর ঝুঁকি প্রায় ৯ গুণ বেশি।

বিজ্ঞানিরা এক গবেষণায় দেখেছেন, বিচ্ছেদে অতিরিক্ত আবেগ ক্রিয়াশীল হয়। প্রতিনিয়ত চলতে থাকে মানসিক ক্ষরণ। সর্বপরি দুশ্চিন্তা আক্রান্ত হয়ে ওই ব্যক্তি হার্ট অ্যাটাকসহ নানা ধরনের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। বিজ্ঞানিরা আরো জানান, প্রথমবারের মতো এ বিষয়ে একটি বড় গবেষণায় উঠে এসেছে প্রেম বিচ্ছেদে পুরুষের চেয়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে নারীরই বেশি।

শুধু তাই নয়, হৃদয়ঘটিত রোগের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো নারীর যখন প্রেমে হৃদয় ভাঙে কিংবা স্বামী মারা যায়, তখন সেই শোক সামলাতে না পেরে ওই নারী হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং নাটকীয়ভাবে তাঁর হৃদয়ের রক্ত সঞ্চালন অস্বাভাবিক হয়ে যায়, হৃদযন্ত্রের চেম্বারগুলো বন্ধ হতে থাকে। আবার এ ধরনের রোগীরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আর সেরে উঠতে না পেরে অগত্যা মৃত্যুর কাছে আত্মসমর্পণ করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের আরাকানসাস বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অভিষেক দেশমুখ জানান, শুধু হৃদয় ভাঙার কারণে এ ধরনের ঝুঁকিতে পড়ছেন অসংখ্য ভুক্তভোগী। ২০০৭ সালে এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, প্রায় এক হাজার হাসপাতালে এ ধরনের রোগী ছিল ছয় হাজারেরও বেশি। এসব রোগীর মধ্যে ৬৭১ জন ছিল পুরুষ বাকি সব নারী।

সূত্র : ডেইলি মেইল অনলাইন।

কালের কন্ঠ