বিয়ের পর নারীর নাম বদলে যাওয়ার এ রীতি চলে আসছে ১৯২০ সাল থেকে। দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই সময় থেকেই নারী তাঁর নামের শেষে স্বামী পদবি জুড়ে দেন। সেটা হোক ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায়। এরপর অনেক কিছু বদলেছে, সমাজব্যবস্থায় এসেছে পরিবর্তন। তবে স্বামীর পদবি যুক্ত করার প্রথা এখনো চলে আসছে। সময়ের ধারাবাহিকতায় প্রশ্ন উঠেছে, এখনো স্বামীর নামের শেষাংশ নারীর নামের সঙ্গে যুক্ত হওয়া উচিত কি না?
নারীবাদীরা মনে করেন, এটা নারী অতীত, তাঁর ও তাঁর বংশ পরিচয় মুছে দেওয়ার একটি চেষ্টা। আবার অনেকে বিষয়টি এত তলিয়ে দেখতে রাজি নন। তাঁরা মনে করেন, নতুন পরিবারের একজন হিসেবে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার এটি একটি প্রচেষ্টা মাত্র।
বিয়ের পর নামের সঙ্গে স্বামীর পদবি জুড়ে দেওয়াতে দোষের কিছু দেখেন না ভারতের ২৪ বছর বয়সী চাকরিজীবী রাশি দেব। তিনি বলেন, ‘আমি প্রথা অনুযায়ী নামের শেষ অংশে স্বামীর পদবি যুক্ত করেছি। সন্তানদের ভবিষ্যত্ নিয়ে চিন্তা করে আমি এটা করেছি। কারণ ভবিষ্যতে সে বাবা, নাকি মায়ের পদবি গ্রহণ করবে সেটা নিয়ে তাকে যেন দুর্ভাবনায় পড়তে না হয়।’
কিছু নারী পদবি পরিবর্তনকে সুবিধাজনক মনে করলেও কেউ কেউ তা পরিবর্তন না করার ব্যাপারেও কঠোর। তেমনই একজন রোমানা দাস। পেশায় একজন গণমাধ্যম কর্মী। তিনি বলেন, ‘আমার নামের শেষাংশ আবার বংশ পরিচয়। আমি বিয়ে করলেও তা পরিবর্তন করব না। এ জন্য আমি আমার জীবনসঙ্গীরও সহযোগিতা চাই।’
তবে গবেষণা বলছে ভিন্ন কথা। ২০০৯ সালে একদল গবেষকের জরিপে দেখা যায়, অংশগ্রহণকারীর মধ্যে ৭১ শতাংশই মনে করেন বিয়ের পর নারীর পদবি বদল করা উচিত। ওই ৭১ শতাংশের আবার অর্ধেক মনে করেন, এ জন্য আইনি বাধ্যবাধকতাও থাকা উচিত।
তবে সম্পর্কের গতিময়তা, ইতিবাচক পরিবর্তন, নিজেদের মধ্যে মুক্ত আলোচনা কিংবা বিষয়টি সঙ্গীর সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দিলে বিষয়টি নিয়ে খুব একটা জটিলতা তৈরি হয় না। রোহিত ভার্মা নামে ভারতের এক বিজ্ঞাপন-কর্মী বিষয়টির ব্যাখ্যা দিলেন এভাবে, ‘নিজের নামের শেষে বিখ্যাত কোনো পদবি থাকতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। তবে আমার যে নাম ও পদবি সেটাই আমার পরিচয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে কত স্মৃতি, জড়িয়ে আছে আমার পরিবার।’ তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, কোনো নারী তাঁর নামের সঙ্গে স্বামীর পদবি জুড়ে দেবেন কি না, সেটা তার পছন্দানুযায়ী হওয়া উচিত। সব সময়ই প্রথা অনুসরণ করা উচিত নয়।’ protohm-alo
0 comments:
Post a Comment