ইন্টারনেটে প্রকাশিত এক ভিডিওচিত্রে হত্যাকারী হিসেবে দাবি করা এই তরুণের নাম সানাদ আল-সাদেক আল-ইউরিবি। তিনি বেনগাজির বাসিন্দা। গত শুক্রবার তিনি এই দাবি করেন। তাঁর এই দাবি গাদ্দাফি কীভাবে নিহত হয়েছেন, সে ব্যাপারে ক্রমবর্ধমান সন্দেহকে আরও উসকে দিয়েছে। গাদ্দাফির মৃত্যু নিয়ে অনুমাননির্ভর বিভিন্ন তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বেনগাজির এই তরুণ নিজেকে গাদ্দাফির হত্যাকারী দাবি করায় এই বিতর্কে আরও এক নতুন মাত্রা যোগ হলো। লিবিয়ার ক্ষমতাচ্যুত শাসক গাদ্দাফি গত বৃহস্পতিবার বন্দী অবস্থায় নিহত হন।
সানাদ আল-সাদেকের গাদ্দাফিকে হত্যার এই দাবি লিবিয়ার জাতীয় অন্তর্বর্তী পরিষদের (এনটিসি) বক্তব্যের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ। এনটিসির তথ্য অনুযায়ী, বন্দী হওয়ার পর সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে ‘ক্রসফায়ারে’ মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন গাদ্দাফি।
ভিডিওচিত্রে সানাদ আল-সাদেক বলেন, তাঁর জন্ম ১৯৮৯ সালে। বেনগাজিতে তিনি তাঁর ব্রিগেড সদস্য থেকে পৃথক হন এবং মিসরাতায় যোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ওই সময় এনটিসির যোদ্ধারা সিরত শহরে আক্রমণ চালায়। সিরত গাদ্দাফির জন্ম শহর। ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, অজ্ঞাত কয়েকজন সানাদ আল-সাদেককে ঘিরে রয়েছেন এবং অভিনন্দন জানাচ্ছেন। ক্যামেরার সামনে একটি রক্তাক্ত জ্যাকেট ও একটি সোনার আংটি তুলে ধরা হয়। এগুলো গাদ্দাফির ব্যবহূত বলে ধারণা করা হয়। আংটির ওপরে লেখা ছিল সাফিয়া। সাফিয়া গাদ্দাফির দ্বিতীয় স্ত্রী। এতে ১০ সেপ্টেম্বর ১৯৭০ সাল লেখা ছিল। এটি তাঁদের বিয়ের তারিখ।
সানাদ আল-সাদেক বলেন, ‘গাদ্দাফিকে আমরা একটি রাস্তায় কয়েকজন নারী ও শিশুর সঙ্গে হাঁটতে দেখি। তাঁর মাথায় ছিল টুপি। তবে চুল দেখে আমরা তাঁকে চিনতে পারি। মিসরাতার একজন যোদ্ধা বলেন, ‘ইনিই গাদ্দাফি। চলো আমরা তাঁকে ধরি।’
সানাদ আল-সাদেক আরও বলেন, ‘গাদ্দাফির হাতে একটি সোনার পিস্তল ছিল। সেটি কেড়ে নিয়ে আমি তাঁকে থাপড় মারি। এ সময় গাদ্দাফি বলেন, “তুমি আমার ছেলের মতো।” এরপর দ্বিতীয়বার চপেটাঘাত করলে গাদ্দাফি বলেন, “আমি তোমার বাবার মতো।” তখন গাদ্দাফির চুল ধরে টেনে তাঁকে আমি মাটিতে ফেলে দিই।’
বেনগাজির ওই তরুণ বলেন, মিসরাতার যোদ্ধারা তাঁর পিস্তল ছিনিয়ে নিয়েছে এবং তাঁকে হুমকি দিয়ে বলেছে, যদি তিনি কখনো লিবিয়ার তৃতীয় শহরটিতে ফিরে আসেন, তাহলে তাঁকে হত্যা করা হবে।
সানাদ আল-সাদেক আরও বলেন, তিনি গাদ্দাফিকে বেনগাজিতে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মিসরাতার যোদ্ধারা গাদ্দাফিকে নিজেদের শহরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখন তিনি গাদ্দাফিকে পরপর দুবার গুলি করেন। এএফপি, রয়টার্স। prothom-alo
0 comments:
Post a Comment