পিঁপড়ার বাসা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত

এত দিন আমরা জানতাম পিপীলিকারা খুব পরিশ্রমী প্রাণী। তারা দল বেঁধে থাকার পথিকৃৎ। নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, এরা বুদ্ধিমানও বটে। এরা বাসা নির্মাণ করে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিতভাবে। পিঁপড়ার বাসার দেয়ালে থাকে অসংখ্য ছিদ্র, খালি চোখে যা দেখা যায় না। পিঁপড়াদের এভাবে বাসা বানানোর বৈজ্ঞানিক দক্ষতা ও মনের সন্ধান পেয়ে গবেষক প্রাণিবিজ্ঞানীরা অবাক হয়েছেন। গবেষণা প্রতিবেদনটি সম্প্রতি ইনসেক্ট বিহ্যাভিয়ার জার্নালে প্রকাশ পেয়েছে। খবর দ্য মেইল অনলাইনের।
গবেষণা প্রকল্পের প্রধান ও আর্জেন্টিনার বুয়েন্স আয়ার্সে মিউজিয়াম অব নেচারাল সায়েন্সের প্রাণিবিজ্ঞানী ড. মার্সেলা কোসারিনিক্সি বলেন, ‘পিপীলিকা গবেষকরা সম্প্রতি মাটির নিচে পিঁপড়ার এক বিরাট রাজত্ব খোঁজে পেয়েছেন। সেখানে প্রায় ৭০ লাখ পিঁপড়ার বসবাস। গবেষকরা লক্ষ্য করেছেন, পিপীলিকারা তাদের এই বিরাট আবাসস্থলটি বানিয়েছে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রেখে। এ জন্য তারা বাসার দেয়াল তৈরি করেছে অসংখ্য অদৃশ্য ছিদ্র রেখে। এই ছিদ্রগুলো দিয়ে বাসার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। তাও তাদের কাম্য মাত্রা অনুযায়ী_ যাতে বাসার ভেতরে ছত্রাক জন্মানো ও বেড়ে ওঠার মতো তাপমাত্রা বা আবহাওয়া থাকে। কারণ পিঁপড়ার বাচ্চাদের বেড়ে ওঠার জন্য খাদ্য হিসেবে এই ছত্রাক দরকার।

গবেষকরা এক দল পিঁপড়াকে তাদের বাসা এবং বাসা তৈরির উপকরণসমেত ল্যাবরেটরিতে নিয়ে আসেন। এরপর নিরীক্ষা করেন ওদের বাসা বানানো কৌশল। পিঁপড়াদের নাগালের মধ্যেই দেওয়া হয় মিহি বালু, কাদামিশ্রিত বালু এবং কাদামাটি। গবেষকরা অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে দেখতে পান পিঁপড়ারা মাটি ও বালি মুখে নিয়ে এক প্রকার ছিদ্রযুক্ত মাটির পিণ্ড বানিয়ে দেয়াল তৈরি করছে, যা কি-না বায়ু চলাচলের জন্য যথেষ্ট উপযোগী। ওই বাসার দেয়ালে পানি ছিটিয়ে ছিদ্র বন্ধ করে দেওয়ার পর দেখা গেছে, তারা দেয়ালে লেপটানো কাদামাটি সরিয়ে নিয়ে ছিদ্রগুলো চালু করে দিচ্ছে। এতে গবেষকরা একমত হন, বাসা বানানোর এই দক্ষতা পিপীলিকার বিশেষ কারিগরি নৈপুণ্য ও জ্ঞানের ব্যাপার।

সমকাল