মূলত ব্যয়বহুল হওয়ায় নাসা তার মহাকাশযান অভিযানের সমাপ্তি টানছে। নাসার ৩০ বছরের মহাকাশযান অভিযানে খরচ হয়েছে ২০ হাজার কোটি ডলার। দীর্ঘ এ অভিযানে ১৪ জন নভোচারীর প্রাণহানি হয়েছে। ১৯৮৬ সালে নভোযান চ্যালেঞ্জারে এক দুর্ঘটনায় সাতজন নভোচারী প্রাণ হারান। ২০০৩ সালে কলাম্বিয়া মহাকাশযান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান আরও সাত নভোচারী।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা হোয়াইট হাউসে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘মহাকাশযান অভিযান শেষ হচ্ছে। তবে সেটা আমাদের নতুন প্রজন্মের মহাকাশযান অভিযানের দিকে নিয়ে যাবে। এ অভিযান কখনোই শেষ হবে না। এ অভিযান মহাকাশ ভ্রমণ ও আবিষ্কারের ক্ষেত্রে আমাদের অনেক দূর নিয়ে যাবে।’ তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মের মহাকাশযান প্রথমে গ্রহাণুতে যাবে। এরপর যাবে মঙ্গল গ্রহে।
শুক্রবার ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরালের কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে আটলান্টিসের উৎক্ষেপণের সময় সেন্টারের চারপাশে প্রায় ১০ লাখ মানুষ সমবেত হয়। নাসার মহাকাশযান উৎক্ষেপণের পরিচালক মাইক লেইনব্যাচ উৎক্ষেপণের কিছুক্ষণ আগে বলেন, ‘সত্যিকারের আমেরিকান আইকন আটলান্টিস ও এর ক্রুদের আমি শুভ কামনা জানাচ্ছি।’
আটলান্টিসের উৎক্ষেপণের দৃশ্য দেখে প্রত্যক্ষদর্শীরা যখন গর্ববোধ করেছে, তখন কেনেডি স্পেস সেন্টারে নাসার হাজার হাজার কর্মীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। কারণ, মহাকাশযান অভিযানের সমাপ্তির ফলে প্রায় আট হাজার কর্মী বেকার হয়ে পড়তে পারে।
উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন আনুষ্ঠানিকভাবে মহাকাশযান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এর প্রায় নয় বছর পর ১৯৮১ সালে মহাকাশে প্রথমবারের মতো নভোযান পাঠায় নাসা।
কলাম্বিয়া, চ্যালেঞ্জার, এনডেভার, ডিসকভারি ও আটলান্টিস নামে পাঁচটি নভোযান ৩০ বছর ধরে গবেষণার জন্য স্থাপিত আন্তর্জাতিক মহাকাশকেন্দ্রে নভোচারী ও সাজসরঞ্জাম আনা-নেওয়া করেছে।
আটলান্টিস মহাকাশকেন্দ্রে ১২ দিন থাকবে। ১২ দিনের এই মিশন শেষে আপাতত নাসার আর কোনো নভোযান মহাকাশে যাবে না। এরপর আটলান্টিসসহ অন্য নভোযানগুলো চলে যাবে জাদুঘরে। এএফপি ও রয়টার্স।
প্রথম আলো
0 comments:
Post a Comment