দীর্ঘায়ুর রহস্যভেদ!

আয়ু বাড়ানোর উপায় নিয়ে গবেষণার কোনো শেষ নেই। এরই মধ্যে এ বিষয়ে বহু তথ্য-পথ্যের সন্ধান দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তবে সেগুলোর কোনোটিই যেন ঠিক ‘কাজের’ হচ্ছিল না। এবার বিজ্ঞানীরা বলছেন, অবশেষে তাঁরা সুদীর্ঘ জীবনের রহস্য উদ্ঘাটন করেছেন, হাতে পেয়েছেন দীর্ঘ জীবন যাপনের স্বপ্ন সত্যি করে তোলার মোক্ষম হাতিয়ার। গবেষকদের দাবি, তাঁরা দীর্ঘ ও সুস্থ্য জীবনের নিয়ামক আটটি জিন শনাক্ত করতে পেরেছেন।

কিংস কলেজ লন্ডনের তত্ত্বাবধানে আন্তর্জাতিক একটি গবেষকদল এ বিষয়ে সম্প্রতি তাদের গবেষণার ফল প্রকাশ করেছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, মানুষের বুড়িয়ে যাওয়া ও বার্ধক্যে নানা ধরনের অসুখ সৃষ্টি এবং ওই প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের

জন্য দায়ী হরমোনের উৎপাদন যে জিনগুলোর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়, সেগুলো চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। গবেষকরা জানিয়েছেন, স্টেরয়েড ডিহাইড্রিপিয়ানড্রোস্টেরন সালফেট (ডিএইচইএএস) শারীরবৃত্তীয় অনেক প্রক্রিয়ার পেছনে ভূমিকা রাখে। তাঁদের দাবি, ওই জিনগুলোকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ডিএইচইএএসের পরিমাণ এবং ধরনে পরিবর্তন এনে শরীরের ওই সব জৈব বৃত্তির মধ্যেও পরিবর্তন বা নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব। এতে স্বাভাবিকভাবেই বয়স বাড়ার প্রক্রিয়াকে মন্থর করে দেওয়া সম্ভব। পাশাপাশি বার্ধক্যে যেসব রোগ-ব্যাধি শরীরকে পর্যুদস্ত করে ফেলে, সেগুলোর ওপরও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।

গবেষকদলটির সদস্য ড. গুয়াংজু ঝাই জানিয়েছেন, ডিএইচইএএস কিভাবে কাজ করে, সেটি এখনও একটি রহস্য। তবে এর সঙ্গেই মানুষের আয়ু ও সুস্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিবিড়ভাবে জড়িত। এ গবেষণায় ডিএইচইএএসের কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জিনগুলো চিহ্নিত হওয়ায় ওই রহস্যভেদের কাজ আরো সহজ ও ত্বরান্বিত হলো। যদি এ রহস্য ভেদ করা যায়, তাহলে তাত্তি্বকভাবে বয়স বেড়ে যাওয়ার প্রক্রিয়ার গতিকে মন্থর করে দেওয়া সম্ভব হবে। অপর গবেষক অধ্যাপক টিম স্টেকর বলেছেন, ‘আমরা ৫০ বছর ধরে শরীরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়_এমন স্টেরয়েডগুলোর ওপর নজর রেখেছি। সম্প্রতি ডিএইচইএএসের ভূমিকা এবং একে নিয়ন্ত্রণকারী জিনগুলো শনাক্তের ঘটনা আমাদের সত্যিই এবার সুদীর্ঘ জীবন লাভের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে।