তাঁদের কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ, একটি সাউন্ড সিস্টেম, একটি আইফোন, দুটি মুঠোফোন, তিন ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার, শাড়ি ও বিছানার চাদর উদ্ধার করা হয়েছে।
গত বুধবার থেকে ডিবির জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মশিউর রহমানের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, প্রতারক চক্রের হোতা কামাল আহমেদ ওরফে নূরুল আমিন ওরফে দাদা ভাই (৫২), তাঁর সহযোগী গুলশান পোস্ট অফিসের ডাক পিয়ন আবদুর রব (৪২), রাসেল আহমেদ (৩৪) ও আনোয়ার হোসেন (৩৩)।
মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম সেন্টারে আজ শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে মশিউর রহমান জানান, এক সুইডিশ নাগরিকের ক্রেডিট কার্ড চুরির সূত্র ধরে গত বুধবার বরিশালের উজিরপুর উপজেলা থেকে দাদা ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় গুলশানের নতুন বাজার থেকে ডাকপিয়ন আবদুর রবকে গ্রেপ্তার করা হয়। মালিবাগ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আনোয়ারকে। আজ সকালে ডিবি কার্যালয়ে ডেকে এনে রাসেল আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাসেল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে মাস্টার্স করেছেন।
ডিবি কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, গুলশান পোস্ট অফিসের ডাকপিয়ন আবদুর রব বিদেশ থেকে আসা ক্রেডিট কার্ডগুলো সংশ্লিষ্টদের বিতরণ না করে চুরি করে দাদা ভাইয়ের কাছে বিক্রি করতেন। গত ১৩ জুন সুইডিশ একটি কোম্পানির কান্ট্রি ম্যানেজার মিস ব্রান্ড হিল্ড ডেস্কক্যাম্পসের নামে ডাক বিভাগের মাধ্যমে ইউরো ক্রেডিট কার্ড আসে। তিনি দীর্ঘদিন কার্ডটি না পেয়ে গুলশান থানায় মামলা করেন। এ সূত্র ধরে ডিবি মামলার তদন্ত শুরু করে। তদন্তে তারা জানতে পারে ডাকপিয়ন আবদুর রব, রশিদ ও জালাল ক্রেডিট কার্ড চুরি করে প্রতারক চক্রের কাছে বিক্রি করেন।
গ্রেপ্তার হওয়া দাদা ভাই ক্রেডিট কার্ড প্রতারণার কথা স্বীকার করে জানান, যেসব ক্রেডিট কার্ডের পিন খোলা থাকে সেগুলো ব্যবহার করে তাঁরা বিভিন্ন পণ্য ক্রয় করেন। এসব পণ্যের দাম ১০ শতাংশ কমে তিনি আবার বাজারে বিক্রি করতেন। এ পর্যন্ত তিনি ২০০টির মতো ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে পেরেছেন। দাদা ভাই জানান, একটি ক্রেডিট কার্ড দিয়ে তিনি সর্বোচ্চ ১৬ লাখ টাকার পণ্য কিনতে পেরেছেন।
ডাকপিয়ন আবদুর রব জানান, দীর্ঘদিন ধরে দাদা ভাই অর্থের প্রলোভন দেখান। একপর্যায়ে তিনি দাদা ভাইয়ের কাছে ক্রেডিট কার্ড বিক্রি করতে রাজি হন।
ডিবি কর্মকর্তা জানান, ক্রেডিট কার্ড চক্রের সঙ্গে ডাক বিভাগের আরও কর্মকর্তা ও কর্মচারী জড়িত। তাঁদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হবে। ইতিমধ্যে কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম শাখার অতিরিক্ত উপ-কমিনশার মো. মাসুদুর রহমান। prothom-alo
0 comments:
Post a Comment