বহুদিন পর এ বছর জলঢুপের প্রতিটি কমলাবাগানেই ফলন হয়েছে প্রচুর। ফলের ভারে নুয়ে পড়েছে বাগানের কমলাগাছের শাখাগুলো। এবারের ফলনে চাষিরাও উৎফুল্ল। আবদুল ওয়াহিদ জানালেন, ছোটবেলায় দেখেছেন ঢাকা ও সিলেট থেকে পাইকারেরা কমলা কিনতে আসতেন তাঁদের বাগানে। হাজার হাজার কমলার ফলন হতো। অনেক সময় কমলা বিক্রি করতে ঢাকা ও সিলেটে যেতেন তাঁর বাবা মন্তাজ আলী। তিনি নিজেও কমলা বেচতে ঢাকায় গিয়েছেন একসময়। ইদানীং জলঢুপি কমলার সেই সুদিন নেই। তবে এ বছর কমলার ফলন ভালো হওয়ায় পাইকারেরা আসছেন এলাকায়। আগের দিনের কথা তাঁর বারবার মনে পড়ছে।
জলঢুপের কমলা স্বাদে-গন্ধে উৎকৃষ্ট। এর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল সারা দেশে। একসময় এই অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে সারা দেশে বিক্রি হতো জলঢুপি কমলা। কিন্তু নানা কারণে এখন কমলার চাষ কমে গেছে। মাঝখানে সরকার গৃহীত একটি প্রকল্পের ব্যর্থতায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অনেক চাষি কমলার চাষ ছেড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু এ বছর কমলার বাম্পার ফলন হওয়ায় চাষিরা আবার আশার আলো দেখতে পেয়েছেন। পাকা কমলা হাসি ফুটিয়েছে তাঁদের মুখেও। তাই হাসিমুখে জলঢুপের কমলাচাষি দুলু মিয়া বললেন, ‘বেশ কয়েক বছর কমলার ফলন না হওয়ায় মনে করেছিলাম কমলা চাষ ছেড়ে দেব। কিন্তু এবারের ফলন দেখে হারানো সাহস ফিরে পেয়েছি। প্রতিবছর এভাবে কমলার ফলন হলে জলঢুপি কমলাতে আবারও ভরে উঠবে ফলের বাজার।’
বিয়ানীবাজারের জলঢুপ অঞ্চলে ছোট-বড় প্রায় ২০০টি বাগানে কমলা চাষ হয় বলে বিয়ানীবাজার কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে। প্রতিবছর যাতে কমলার ফলন ভালো হয়, তার জন্য সরকারিভাবে স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন বলে মনে করেন কমলাচাষিরা। তাঁরা চান শুধু স্থানীয় জাতের (জলঢুপি) কমলার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে একটি গবেষণাভিত্তিক প্রকল্প গ্রহণ করা হোক। পাশাপাশি কমলা উৎপাদন করে চাষিরা যাতে লাভবান হন, তার জন্য একটি হিমাগার স্থাপনের দাবি করেন চাষিরা।
বিয়ানীবাজার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বিমলচন্দ্র সোম জানান, বিয়ানীবাজারে কমলার উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। prothom-alo
0 comments:
Post a Comment