গত শুক্রবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নির্মাতা স্বপন সাহা পরিচালিত অভিনেতা জিত ও কোয়েল মল্লিক অভিনীত জোর ছবিটি দেখানো শুরু হয়েছে। ছবিটি রাজধানীর অভিজাত প্রেক্ষাগৃহ মধুমিতা, অভিসারসহ আজাদ, পূর্ণিমা, গীত, গ্যারিসন, আগমন এবং নারায়ণগঞ্জের আশা সিনেমা হলে প্রদর্শিত হয়েছে। তবে শুক্র ও গতকাল শনিবার কয়েকটি হলে গিয়ে দর্শকের তেমন উপস্থিতি দেখা যায়নি। প্রদর্শনীগুলোতে দর্শকসারির বেশির ভাগ আসন খালি ছিল। ছবিটির আমদানিকারক চ্যানেল সিনেমা লিমিটেড এবং মধুমিতা হলের মালিক মোহাম্মদ ইফতেখার উদ্দীন বলেন, ‘প্রথমবারের মতো এই ছবিটি নিয়ে আমাদের প্রত্যাশাও তেমন ছিল না। এ ছাড়া শীতের কারণে দর্শক কিছুটা কম এসেছে।’ তবে তিনি আগামী ছবিগুলো বিশেষত হিন্দি ছবির ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। অভিসার হলের মালিক ও চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি কে এম আর মঞ্জুর বলেন, ‘আসলে আমরা সাড়া পাওয়ার জন্য ভারতীয় ছবি প্রদর্শন করছি না। আমরা শুধু টিকে থাকার জন্য ছবিগুলো হলে উঠিয়েছি।’ তিনি জানান, দিনের পর দিন মন্দা বাণিজ্যের কারণে বিভিন্ন সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে। এক হাজার ৪৩৫টি সিনেমা হলের মধ্যে এখন রয়েছে ৬০৮টি।
এদিকে চার দশক পর দেশের সিনেমা হলে ভারতীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শনের বিষয়ে দর্শকের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। মতিঝিলের মধুমিতা হল থেকে বেরিয়ে কলেজশিক্ষার্থী ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের দেশে এর চেয়ে ভালো মানের ছবি অহরহ হচ্ছে। এই শীতে পয়সা খরচ করে এই মানের ছবি দেখতে আসাটা বোকামি হয়েছে।’ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত হাবিবা লোপা অনেকটা আক্ষেপ নিয়ে বলেন, ‘বড় আশা করে এসেছিলাম। এখন মনে হচ্ছে, ছুটির দিনটা মাটি হলো।’ তবে স্থপতি মুমিন হক ছবি দেখে বেশ আনন্দিত। বললেন, ‘শাকিব-মারুফদের ছবি দেখতে দেখতে আমরা ত্যক্ত। এখন আমাদের দেশের নির্মাতাদের টনক নড়বে।’
চলচ্চিত্র একতা পরিষদের আহ্বায়ক ও অভিনয়শিল্পী মাসুদ পারভেজ ওরফে সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আদালতের প্রতি সম্মান জানিয়ে এই মুহূর্তে কোনো রকম আন্দোলনে যাইনি।’ ১৯৭২ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক দেওয়া দেশে উপমহাদেশীয় ছবির প্রদর্শন বন্ধের নির্দেশের কথা উল্লেখ করে সোহেল রানা বলেন, ‘বিজয়ের মাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নির্দেশের প্রতি অসম্মান জানিয়ে যাঁরা ভারতীয় চলচ্চিত্র দেশে এনেছেন, আমি মনে করি তাঁরা যুদ্ধাপরাধীদের চেয়েও অধম। দেশের চলচ্চিত্র শিল্পের ধ্বংসের ষড়যন্ত্রের দায়ে এদের শাস্তি হওয়া উচিত।’ বিভিন্ন সূত্রের উদাহরণ দিয়ে তিনি ভারতীয় চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর শুরুটা সফল হয়নি বলে দাবি করেন।
চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি কে এম আর মঞ্জুর বলেন, ‘আইন মেনেই ভারতীয় চলচ্চিত্র দেশে নিয়ে আসা হয়েছে। তা ছাড়া আমরা তো পুরোনো ছবিই আমদানি করছি। পুরোনো ছবির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে না থাকতে পারলে এটা তো তাদেরই ব্যর্থতা।’ prothom-alo
0 comments:
Post a Comment