হ্যাগফিশ অনেকটা সাপের আকৃতির। স্লাইম উত্পাদনের জন্য একটি হ্যাগফিশের দেহে অন্তত ১০০ বিশেষ গ্রন্থি থাকে। সেই গ্রন্থি ও ঘামগ্রন্থির মিশ্রণে তৈরি হয় স্বচ্ছ ও হালকা কিন্তু অত্যন্ত শক্তিশালী ও পিচ্ছিল স্লাইম। এটিকে পানিতে রেখে টেনে লম্বা করে শুকানো হলে রেশমের কাপড়ের মতো আকার ধারণ করে। বিজ্ঞানীদের আশা, প্রোটিনসমৃদ্ধ এই স্লাইম থেকে ক্রীড়াবিদের পোশাক ও বুলেটপ্রুফ অন্তর্বাস বা জামাকাপড় তৈরি করা সম্ভব হবে।
হ্যাগফিশের প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ৮০টি। সবচেয়ে বড় প্রজাতিটির দৈর্ঘ্য চার ফুট পর্যন্ত হতে পারে। তবে বেশির ভাগ হ্যাগফিশ এক ফুট লম্বা হয়ে থাকে। যেকোনো আকৃতির একটি হ্যাগফিশ অন্তত হাজার কিলোমিটার লম্বা স্লাইম তৈরির সামর্থ্য রাখে। প্রাণিবিজ্ঞানীরা শত শত বছর ধরে হ্যাগফিশ নিয়ে গবেষণা করছেন। এই প্রাণী সাগরতলে গভীর অন্ধকারাচ্ছন্ন খাদে তিমিসহ বিভিন্ন মৃত প্রাণীর দেহাবশেষ খেয়ে জীবন ধারণ করে। চোয়াল না থাকায় প্রাণীটি অত্যন্ত ঘন স্লাইমের সাহায্যেই আত্মরক্ষার কাজ চালায়।
গবেষকেরা জানান, হাঙরের কামড় থেকে সুরক্ষার জন্য হ্যাগফিশ স্লাইমের সাহায্যে নিজেকে আড়াল করে। এতে হাঙরের নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। ফলে হাঙর পালিয়ে যায়।
হ্যাগফিশের স্লাইমে তন্তুর উপস্থিতি নিয়ে গবেষণারত কানাডার গেলফ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী টিম ওয়াইনগার্ড বলেন, দেখতে ভালো না হলেও হ্যাগফিশের অনেক গুণ রয়েছে। ডাইনোসরসহ বিভিন্ন প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেলেও হ্যাগফিশ নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে জয়ী হয়েছে।
ডাইনোসর বিলুপ্ত হয়েছে ছয় কোটি বছর আগে। কিন্তু স্লাইম উত্পাদনকারী গ্রন্থিসহ হ্যাগফিশের ৩৩ কোটি বছরের পুরোনো একটি জীবাশ্মের (ফসিল) সন্ধান পাওয়া গেছে। বিবিসি।
0 comments:
Post a Comment