মৃত্যুকালে রবিশঙ্করের বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। সেতার-সুরের এই মহান স্রষ্টা গত এক সপ্তাহ চিকিত্সাধীন ছিলেন। শ্বাস-প্রশ্বাসের জটিলতা নিয়ে গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।
প্রায় তিন দশক বহির্বিশ্বে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন রবিশঙ্কর।
১৯২০ সালে ভারতের বেনারসে জন্মেছিলেন রবীন্দ্র শঙ্কর চৌধুরী; যিনি ‘রবিশঙ্কর’ নামেই বিশ্বে সুপরিচিত। শৈশবে ভাই উদয় শঙ্করের নাচের দলে কাজ করেছেন। ১৯৩৮ সালে নাচ ছেড়ে দিয়ে সংগীতজ্ঞ আলাউদ্দিন খাঁর কাছে সেতার শেখা শুরু করেন। ১৯৪৪ সালে সংগীতপরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে তাঁর। ১৯৪৯ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত অল ইন্ডিয়া রেডিওর সংগীতপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সত্যজিত্ রায়ের ‘পথের পাঁচালী’ (১৯৫৫), ‘অপরাজিত’ (১৯৫৬) এবং ‘অপুর সংসার’ (১৯৫৯) ছবির সংগীতপরিচালনা করে ব্যাপক প্রশংসিত হন রবিশঙ্কর।
১৯৫৬ সাল থেকে বেশ কটি সফরের মাধ্যমে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীত জনপ্রিয় করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন এই গুণী শিল্পী। ষাটের দশকে তিনি কয়েকটি দেশে শিক্ষক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এসব কাজ করতে গিয়ে বিটলস ব্যান্ডের জর্জ হ্যারিসন ও প্রখ্যাত মার্কিন বেহালাবাদক মেনুহিনের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। পরবর্তী সময়ে তাঁরা একসঙ্গে কাজ করেন।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন এই সেতারশিল্পী। বিটলস ব্যান্ডের সংগীতশিল্পী জর্জ হ্যারিসনকে সঙ্গে নিয়ে রবিশঙ্কর আয়োজন করেছিলেন সাড়া জাগানো ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’।
জীবদ্দশায় বহু সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন এই মহান শিল্পী। ১৯৯৯ সালে ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘ভারতরত্ন’ দেওয়া হয় তাঁকে। তিনটি গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছেন এই কিংবদন্তি সংগীতজ্ঞ।
0 comments:
Post a Comment