কিউরিওসিটি নিয়ে সর্বশেষ কৌতূহলের শুরুটা গত সপ্তাহে। কিউরিওসিটির মঙ্গল-অভিযান প্রকল্পের বিজ্ঞানী জর্জ পি গ্রটজিংগার যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বেতারের একটি অনুষ্ঠানে বলেন, মঙ্গল থেকে পাঠানো তথ্য গবেষণা করা হচ্ছে। প্রাণের অস্তিত্ব আছে কি না, তা তিনি সরাসরি বলেননি। কিন্তু তাঁর দাবি, ‘আমরা এ ব্যাপারে আশাবাদী। হয়তো পাঠ্যপুস্তকে লেখা ইতিহাসও পরিবর্তন করার মতো বিষয় এখানে আছে।’ তবে এর বেশি কিছু জানাতে তিনি নারাজ।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, রোবটযান কিউরিওসিটি আকর্ষণীয় কিছু খুঁজে পেয়েছে, যা খুবই উল্লেখযোগ্য। এটি পাওয়া গেছে মঙ্গলের এক চিমটি বালুর মধ্যে। মানুষের মনে প্রশ্ন, তবে এটি কী? কোনো ফসিল? আণুবীক্ষণিক কোনো প্রাণী? নাকি কার্বনের কোনো অণু, যা জৈব (অর্গানিক) নামে পরিচিত? এ প্রশ্নগুলো নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে কেবল বিজ্ঞানীদের মধ্যে নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যেও।
অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী পিটার এইচ স্মিথ মঙ্গলে আগের অভিযান ফনিক্স মার্সের প্রধান গবেষক। তিনি বলছেন, যদি এটি ঐতিহাসিক কিছু হয়, তবে অবশ্যই এটি জৈব উপাদান। তবে এমনও হতে পারে, গবেষক গ্রটজিংগার হয়তো আকর্ষণীয় কোনো তথ্য দিতে চাচ্ছেন, যা প্রাণের অস্তিত্বের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। সে ক্ষেত্রে এটি ঐতিহাসিক না-ও হতে পারে।
তবে নাসার জেট প্রপালশন পরীক্ষাগারের মুখপাত্র গাই ওয়েবারের মত কিছুটা ভিন্ন। তাঁর মতে, কিউরিওসিটি থেকে পাওয়া তথ্যগুলো আকর্ষণীয়, কিন্তু দুনিয়া-কাঁপানোর মতো নয়। তিনি বলেন, ‘যদি দুনিয়া-কাঁপানো কোনো তথ্য থাকত, তাহলে অবশ্যই এই তথ্য দেওয়া হতো নাসার সদর দপ্তর থেকে, কোনো বৈঠকে নয়।’
মঙ্গলে অবস্থানরত রোবটযান কিউরিওসিটির অত্যাধুনিক পরীক্ষাগার থেকে পাওয়া তথ্য নিয়েই এসব কৌতূহল। কিউরিওসিটির যান্ত্রিক হাত গত ৯ নভেম্বর মঙ্গলের ধূলিকণা ও বালুর নমুনা সংগ্রহ করে প্রথম গবেষণা শুরু করে। এর পর থেকেই শুরু হয় তথ্য বিশ্লেষণ। গবেষকদের মতে, কিউরিওসিটির পরীক্ষাগারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে জৈব অণু খুঁজে বের করা।
কিউরিওসিটির গবেষণার শুরুতেই বলা হয়েছিল, মঙ্গলে মিথেন গ্যাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। পরে এটি ভুল প্রমাণিত হয়।
বর্তমানে কিউরিওসিটি এগিয়ে চলেছে কাদামাটিসদৃশ স্তর আছে—এমন একটি স্থানের দিকে। ওই স্থানে জৈব কিছু পাওয়ার জোরালো সম্ভাবনা আছে।
তবে বর্তমানে কী পাওয়া গেছে, তা জানতে আমাদের আগামী সোমবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে। নিউইয়র্ক টাইমস।প্রথম আলো
0 comments:
Post a Comment