|
‘নির্বাসিত’ জীবনে বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত তসলিমা নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, সুনীল তাকে এবং অন্যান্য তরুণী লেখক ও কবিকে ‘যৌন হয়রানি’ করেছেন।
তসলিমার অভিযোগের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে জনপ্রিয় লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সোমবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি এসবকে একেবারে পাত্তা দিচ্ছি না। ও বহুবার এসব কথা বলেছে।
“কলকাতায় এসে একেকবার একেকজনের নামে এসব কথা বলেছে। আমি আমার কাজে ব্যস্ত আছি।”
এই টুইটের বিষয়ে জানতে তসলিমাকে ফোন করা হলে সোমবার রাতে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি এই বিষয়ে আর কিছুই বলতে চাচ্ছি না।”
যৌন হয়রানির সাত মাস আগে সুনীলের বিরুদ্ধে তসলিমা আরেকটি অভিযোগ এনেছিলেন। গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি বলেছিলেন, তার বই পশ্চিমবঙ্গে নিষিদ্ধের ক্ষেত্রে সুনীলের ভূমিকা ছিল।
সোমবার প্রকাশিত এক টুইটার পোস্টে তসলিমা ওই প্রসঙ্গও টেনে আনেন।
তিনি লেখেন, “আমার আগের চারটি পোস্ট শুধু এটা প্রমাণ করার জন্য যে, সুনীলজি এখন গণমাধ্যমে এই বলে মিথ্যাচার করছেন যে তিনি আমার দ্বিখণ্ডিত নিষিদ্ধ করাকে সমর্থন করেননি।”
তসলিমার তৃতীয় আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘দ্বিখণ্ডিত’ প্রকাশিত হওয়ার পর ২০০৭ সালের নভেম্বরে কলকাতার রাস্তায় প্রতিবাদ ও সংঘর্ষ হয়। এর ফলে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাকে কলকাতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়।
একমাস পরে তসলিমা বিতর্কিত মন্তব্য থাকা বইয়ের ওই পৃষ্ঠাগুলো বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
টুইটারে তিনি লিখেছেন, “সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় বই নিষিদ্ধের পক্ষে ছিলেন। তিনি আমাকে ও অন্য নারীদেরকে যৌন হয়রানি করেছেন। তিনি সাহিত্য একাডেমির সভাপতি। লজ্জা লজ্জা!”
“সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে আমার বই ‘দ্বিখণ্ডিত’ নিষিদ্ধ করতে বলেন। তিনি এখন বই নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে কথা বলছেন। কী রকম ভণ্ড! ..... কোনো বাঙালির সাহস নেই ভণ্ড ও নারী নির্যাতনকারী সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের মুখোশ উন্মোচন করার।”
তসলিমার এ পোস্টের জবাবে সোমবার টুইটারে ব্যাপক সাড়া পড়ে।
তসলিমার আরেকটি টুইটে বলা হয়, “তার মতো নারী নির্যাতনকারীদের মুখোশ উন্মোচন করার কারণেই সুনীল গাঙ্গুলী আমার বই নিষিদ্ধ করার পক্ষে ছিলেন। আমার বই দ্বিখণ্ডিত নিষিদ্ধ করা ও আমাকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বের করার ক্ষেত্রে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ছিলেন নাটের গুরু।”
টুইটারে না থাকা সুনীল কলকাতার ইংরেজি দৈনিক স্টেটসম্যানকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় এতদিন পর এই অভিযোগ তোলা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
তিনি বলেন, “মানুষ ভাল কাজের প্রশংসার চেয়ে সমালোচনা করে বেশি। এটা তার বাচালতার প্রতি অপ্রয়োজনীয় মনোযোগ দেওয়া হবে বলে আমি এটার কোনো প্রতিক্রিয়া দিতে চাই না।”
তসলিমার এই টুইটের প্রতিক্রিয়া নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া এসেছে। একজন জানতে চেয়েছেন কেন তিনি প্রায়ই যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলেন।
এর আগে বাংলাদেশের কয়েকজন লেখকের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলে বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন তসলিমা।
তসলিমার লেখায় মৌলবাদীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে তার ফাঁসির দাবি তুললে ১৯৯৪ সালে এই লেখক বাংলাদেশ ছেড়ে যান।
ইসলামকে সমালোচনা করে তার লেখার জন্য বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে মৌলবাদীরা ফতোয়া জারি করার পর গত ১৮ বছর ধরে তিনি নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন। বাংলাদেশ ছাড়ার পর তসলিমা বেশ কিছু কাল ইউরোপে ছিলেন। পরে ভারতে যান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/
0 comments:
Post a Comment