সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আগেই অন্য ভূবনে চলে গেলেন নন্দিত এই কথাশিল্পী। তার চিরপ্রস্থানের খবরে কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে ‘শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠে’ নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
১৯৪৮ সালে এই নেত্রকোনা জেলাতেই জন্ম নেন হুমায়ূন আহমেদ। বৃহস্পতিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। গত বছর থেকে হুমায়ূন বৃহদান্ত্রের ক্যান্সারে ভুগছিলেন।
শুক্রবার প্রথম প্রহরেই শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠের শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ গ্রামের মানুষ জেনে যায়, তাদের প্রিয় হুমায়ূন স্যার আর নেই। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলেও সকালেই তারা জড়ো হতে শুরু করেন স্কুলে। কেউ কেউ আবেগের প্রকাশ ঘটান কান্নায়। শিক্ষকরা হয়ে পড়েন স্মৃতিকাতর।
প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান জানান, হুমায়ূনের বাবা পুলিশ কর্মকর্তা ফয়েজুর রহমান একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন। তার নামেই এ স্কুলের নামকরণের কথা ভেবেছিলেন হুমায়ূন। তবে পরে ১৯৯৬ সালে একাত্তরের সব শহীদের স্মরণে ‘শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ’ নামেই যাত্রা শুরু করে এই স্কুল।
তিন একর জমিতে স্থাপিত এই স্কুল শুরুতে ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত হলেও ধাপে ধাপে দশম শ্রেণী পর্যন্ত উন্নীত করা হয়। ২৫৭ জন শিক্ষার্থী ও ১৭ জন শিক্ষকের এই বিদ্যাপীঠের খরচ হুমায়ুন নিজেই বহন করতেন।
দেশপ্রেমের স্বীকৃতি হিসাবে ফয়েজুর রহমানকে বাংলাদেশ পুলিশের ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ (মরণোত্তর) দেওয়া ২০১১ সালে। চিকিৎসার জন্যে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার আগে ২৭ মে সেই পুরস্কার এই স্কুলে রাখতে দিয়ে যান হুমায়ূন।
শিক্ষিকা সুরাইয়া বেগম বলেন, “গ্রামের ছেলেমেয়েদের যাতে আর শহরের স্কুলে যেতে না হয় সেভাবেই এ বিদ্যালয়কে গড়ে তোলার উৎসাহ দিতেন হুমায়ূন আহমেদ। তিনি স্বপ্ন দেখতেন একদিন শহর থেকেও ছাত্রছাত্রীরা এখানে পড়তে আসবে।”
আসাদুজ্জামান বলেন, ‘শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠকে’ উপমহাদেশের একটি আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তোলার ইচ্ছা ছিলো লেখকের। তার স্বপ্ন ছিল এই প্রতিষ্ঠান একদিন কলেজে উন্নীত হবে।
“তিনি শিক্ষকদের উৎসাহ দিতেন, মডেল হিসাবে একদিন এই বিদ্যাপীঠ নিয়ে সংসদে আলোচনা হবে। সরকার নিজে থেকেই এই বিদ্যাপীঠের দায়িত্ব নেবে।”
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
0 comments:
Post a Comment