আগে যা মনে করা হতো তার চেয়েও ৫ গুণ দ্রুতগতিতে পানিতে ডুবে যাচ্ছে ইতালির নয়নাভিরাম শহর ভেনিস।
আগের যেকোন সময়ের চেয়ে এখন অনেক বেশি বন্যা কবলিত হচ্ছে শহরটি। ফলে তা ধীরে ধীরে হেলে পড়ছে পূর্বপ্রান্তের এড্রিয়াটিক সাগরপানে। বিজ্ঞানীরা এমন কথাই বলছেন।
ভেনিসের পানির স্তর স্থিতিশীল রয়েছে- এমনটিই বলা হয়েছিল আগের কয়েকটি গবেষণায়।
কিন্তু নতুন এক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে যে, শহরটি আসলেই পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। গত এক দশকজুড়ে প্রতিবছর ভেনিস ২ মিলিমিটার হারে পানিতে তলিয়েছে এবং পূর্বে হেলে পড়েছে।
আগের গবেষণাগুলোতে এই হার উল্লেখ করা হয়েছিলো বছর প্রতি ০ দশমিক ০৪ মিলিমিটার।
‘দ্য ডেইলি মেইল’ এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভেনিসের ১১৭টি দ্বীপ হ্রদের সংযোগ ভূমিগুলোও ডুবে যাচ্ছে।
শহরটির উত্তরাঞ্চল প্রতিবছর ২ থেকে ৩ মিলিমিটার ডুবছে। আর একই সময়ে দক্ষিণাঞ্চল ডুবছে ৩ থেকে ৪ মিলিমিটার হারে।
“মনে হচ্ছে ভেনিস ক্রমাগতই ডুবছে। এর প্রভাব খুব বেশি না হলেও বিষয়টি লক্ষ্যণীয়” বলেন, ইউসি সান দিয়েগোর ‘স্ক্রিপস ইন্সটিটিউশন অব ওশেনোগ্রাফির’ ভূ-প্রকৃতি গবেষক ইয়েহুদা বক।
তিনি বলেন, প্লেট টেকটনিক্সের মতো প্রাকৃতিক কারণে ডুবছে ভেনিস।
“এড্রিয়াটিক প্লেট বলয়ে আছে ভেনিস। এই প্লেট এপেনিনেস পর্বতমালার নিচ থেকে সরে যাওয়ার কারণে এ শহর এবং আশেপাশের এলাকা হেলে পড়ছে।”
তিনি আরো বলেন, ভেনিসে বন্যাও হচ্ছে ঘন ঘন। ফলে শহরের অধিবাসীদের এখন সারাবছরজুড়ে প্রায় সময়ই কাঠের সাঁকোর ওপর দিয়ে হাটতে হয়।
সা¤প্রতিক গবেষণায় যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে এ আশঙ্কাই দানা বাঁধে যে, শহরটিকে ডুবে যাওয়া থেকে রক্ষায় যথেষ্ট উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।
তবে ভেনিস ও এর হ্রদগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে নিয়োজিত ‘কনসরজিও ভেনেজিয়া নোভা’র বিশেষজ্ঞরা এ গবেষণা প্রতিবেদন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।
তাদের এক সূত্র ‘এনবিসি নিউজ’কে বলেন, “আমি আপনার মতোই সাংবাদিকদের কাছ থেকে নতুন গবেষণা সম্পর্কে জেনেছি। আমাদের কাছে ভেনিসের ডুবে যাওয়ার শত শত বছরের রেকর্ড আছে। অথচ, এ বিষয়ে তারা আমাদের ডাকেনি।”
“আমরা হিসাব করে দেখেছি শহরটি প্রতি শতকে ৩ থেকে ৪ সেন্টিমিটার হারে ডুবছে। আর এখন তারা বলছে, প্রতি বছরে ২ মিলিমিটার.... তার মানে প্রতি একশো বছরে ভেনিস ২০ সেন্টিমিটার করে ডুববে। এটা আমাদের হিসেবের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি। কাজেই এটা দেখার পরই আমি তা বিশ্বাস করব।”
বিডিনিউজ টোয়েনটিফোর ডটকম/
0 comments:
Post a Comment