এসব তথ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো দেশে ‘আশ্চর্য মশারি’ উৎপাদন ও বাজারজাত করার ঘোষণা দিলেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এটি বিএএসএফ গ্রামীণের সামাজিক ব্যবসায়ের প্রথম প্রকল্প। গ্রামীণ লিমিটেডের গ্রামীণ হেলথকেয়ার ট্রাস্ট অব বাংলাদেশ এবং বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় রাসায়নিক দ্রব্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান জার্মানির বিএএসএফের একটি অংশীদারিমূলক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হচ্ছে বিএএসএফ গ্রামীণ।
কাল রোববার থেকে স্থানীয়ভাবে এই আশ্চর্য মশারি বাজারজাত করা হবে বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এটির উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের দায়িত্বে আছে গ্রামীণ ফেব্রিক্স অ্যান্ড ফ্যাশনস লিমিটেড।
গাজীপুরের কালিয়াকৈর-নবীনগর সড়কে কাশিমপুর ইউনিয়নের সারাব এলাকার সামাজিক ব্যবসার শিল্প পার্কে গতকাল শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পটির উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএএসএফ গ্রামীণের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আজ একটি বিশেষ দিন। আশ্চর্য মশারির উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের ফলে এখন মানুষ অল্প খরচে ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া থেকে রক্ষা পাবে। এটি দেশের স্বাস্থ্য খাতের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা। প্রকল্পটি ক্ষুদ্র পরিসরে শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বৃহৎ প্রকল্প গড়ে তোলা হবে, রপ্তানিও করা হবে। বর্তমানে প্রতিদিন তিন হাজার পিস মশারি তৈরি হচ্ছে। ভবিষ্যতে এ পরিমাণ দাঁড়াবে নয় হাজারে।
গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, সামাজিক ব্যবসার অংশ হিসেবে প্রকল্পটি হওয়ায় এখান থেকে শেয়ারহোল্ডাররা কোনো লভ্যাংশ নেবেন না। সামাজিক ব্যবসার শিল্প পার্কে এলইডি বালব, ফাইবার গ্লাসসহ চারটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর ফলে এখানে প্রায় আট হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। এ ছাড়া দ্বিতীয় আরেকটি শিল্প পার্ক স্থাপনের প্রক্রিয়াও এগিয়ে চলেছে।
ড. ইউনূস বলেন, ‘সামাজিক ব্যবসা দেশের সুনির্দিষ্ট সমস্যার সমাধান করতে পারে। ফলে এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আমরা ইতিমধ্যে বগুড়া ও বরিশালে হাসপাতাল করে সাফল্য পেয়েছি। সাধারণ মানুষ সেখান থেকে স্বল্প খরচে চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত হোলগার মাইকেল, বিএএসএফের এশিয়া অঞ্চলের সভাপতি সাওরি ডুবোর্গ, বিএএসএফ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সারিয়া সাদিক এবং গ্রামীণ ফেব্রিক্স অ্যান্ড ফ্যাশনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল হাসান। পরে অধ্যাপক ইউনূস ফিতা কেটে মশারির উৎপাদনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। প্রকল্পটি ঘুরে দেখেন আমন্ত্রিত অতিথিরা।
পরে এক সংবাদ সম্মেলনে সারিয়া সাদিক ও আশরাফুল হাসান জানান, আশ্চর্য মশারিটি বহুবার অর্থাৎ ২০ বার ধোয়ার পরও এর কার্যকারিতা সক্রিয় থাকবে। বড় একটি মশারির দাম পড়বে প্রায় ৬৫০ টাকা। সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, দুটি ইউনিটের মধ্যে স্বল্প পরিসরে একটি চালু হয়েছে। পুরোপুরি চালু না হওয়ায় এখন দেশি বাজার থেকে মশারির কাপড় কিনে প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে। এ বছরের মধ্যেই পুরোদমে কারখানা চালু হবে। এ ছাড়া বিএএসএফের অনুমোদন পেলে আগামী বছরই রপ্তানির জন্য দ্বিতীয় ইউনিট চালু করা হবে। prothom-alo
0 comments:
Post a Comment