
ব্যাকটেরিয়া এবং ডিএনএ সংশ্লেষের মাধ্যমে একপর্যায়ে জৈব কম্পিউটার তৈরিতে সফল হয়েছেন তাঁরা। গবেষকেরা জানিয়েছেন, জৈব কম্পিউটারে ডিএনএ চিপ ব্যবহার করা হয়েছে, যা উপযুক্ত ‘সফটওয়্যার’ ব্যবহারের মাধ্যমে তথ্য উদ্ধার করতে সক্ষম।
গবেষক দলের নেতৃত্বে ছিলেন ইহুদ কেইনান। কেইনান জানিয়েছেন, ডিএনএর ব্যবহার নতুন নয়। আগেও তথ্য উদ্ধার করতে ডিএনএ ব্যবহার করা হতো। তবে এবারই প্রথম কম্পিউটিং ব্যবস্থায় ডিএনএ পরীক্ষা করা হলো। ইলেকট্রনিক কম্পিউটারে ‘ইনপুট’, ‘আউটপুট’, ‘প্রসেসিং’ ও ‘স্টোরেজ’ নামে চারটি প্রাথমিক অংশ থাকে। ইলেকট্রনিক কম্পিউটারের মতো জৈব কম্পিউটারেও চারটি অংশ রয়েছে। এ চারটি অংশই হচ্ছে জৈব অণু।
জৈব কম্পিউটার তৈরির পদ্ধতি প্রসঙ্গে কেইনান জানিয়েছেন, গবেষকেরা জৈব কম্পিউটারটি তৈরি করেছেন একটি টিউবে রাখা দ্রবণের মধ্যে। ডিএনএ সংশ্লেষ করে পাওয়া বিভিন্ন অণুর সঙ্গে নির্দিষ্ট ডিএনএ এনজাইম ও অ্যাডিনোসিন ট্রাইফসফেট বা এটিপি নামের কো-এনজাইম দ্রবণে মিশিয়ে জৈব কম্পিউটার তৈরি করেছেন তাঁরা। এটিপি হচ্ছে জৈব কম্পিউটারের শক্তির উত্স। কোষে কো-এনজাইম হিসেবে এটিপি ব্যবহূত হয়। জৈব কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার হিসেবে কাজ করে জটিল অণু। পূর্বনির্ধারিত কোনো কাজ সম্পাদনে অণুগুলো পরস্পরকে সক্রিয় করে। ইনপুট হিসেবে অণু দেওয়া হলে নির্দিষ্ট এবং নির্ধারিত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে একটি নির্দিষ্ট নিয়ম (সফটওয়্যার) মেনে আউটপুট হিসেবে আরেকটি অণু তৈরি হয়।
জৈবিক পদ্ধতি নিয়ন্ত্রিত সব প্রাণসত্তাকেই জৈব কম্পিউটার হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন কেইনান। তাঁর মতে, মানুষও জৈব কম্পিউটার, একটি মেশিন। মানুষের ক্ষেত্রেও কম্পিউটারের মতো চারটি প্রাথমিক অংশের নিয়ম মানছে অণুগুলো। জৈব কম্পিউটার খালি চোখে দেখা সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছেন তিনি।
জৈব কম্পিউটার তৈরি করা হয়েছে ইংরেজ গণিতবিদ, যুক্তিবিদ, কম্পিউটার ও ক্রিপ্টোবিশেষজ্ঞ অ্যালান টুরিংয়ের ৭৫ বছরের পুরোনো তত্ত্ব ব্যবহার করে। উল্লেখ্য, অ্যালান টুরিংকে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জনক বলা হয়। prothom-alo
0 comments:
Post a Comment