অসুস্থ তিনজন হলেন মালতীনগর এলাকার বাসিন্দা খাদ্য বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল লতিফের স্ত্রী ফাতেমা খাতুন (৫০), তাঁদের ছেলে এস এম ফজলুল করিম ওরফে মানিক (৩৪) ও এস এম নুরুন্নবী ওরফে রতন (২৮)। এর মধ্যে ফজলুল উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়েছেন। নুরুন্নবী এসএসসি পাস করতে পারেননি।
গৃহকর্তা আবদুল লতিফ স্ত্রী ও তাঁর দুই ছেলের চিকিত্সা না করিয়ে ঘরে বন্দী করে রেখেছিলেন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
মালতীনগরের পৌর কাউন্সিলর শিপার আল বখতিয়ার বলেন, দুই ভাইয়ের খালা লাকি গতকাল তাঁকে জানান, আবদুল লতিফ মানসিকভাবে অসুস্থ তাঁর দুই ছেলেকে দীর্ঘদিন ধরে ঘরে আটকে রেখেছেন।
কাউন্সিলর শিপার বিষয়টি পুলিশ ও মানবাধিকারকর্মীদের জানান। পরে দুপুরে মালতীনগরের বাসা থেকে ফাতেমা ও তাঁর দুই ছেলেকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় গৃহবন্দী দুই ভাই ঘর থেকে বের হতে চাইছিলেন না। তাঁরা অপ্রকৃতিস্থ আচরণ করেন।
প্রতিবেশীরা বলেন, ওই বাড়ির লোকজন কারও সঙ্গে মেলামেশা করতেন না। সব সময় বাড়ির দরজা-জানালা বন্ধ থাকত।
দুই যুবকের খালা লাকি প্রথম আলোকে বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন দুই ভাই একেবারেই কথা বলেন না। হাতের নখ, চুল, দাড়ি, গোঁফ কাটেননি দীর্ঘদিন। জামাকাপড় পরতেন না। বাড়ির গ্রিলের ধারে এক খুপরিতে থাকতেন নুরুন্নবী। ফজলুল পাশের ঘরে। তাঁরা নিয়মিত খাবারও খান না। নুরুন্নবী কয়েক দিন পরপর পানীয় জাতীয় কিছু পান করেন। বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা বলতেন ইশারায়।
যোগাযোগ করা হলে আবদুল লতিফ সরকার বলেন, তাঁর স্ত্রী ফাতেমা ১৯৯৯ সাল থেকে মানসিকভাবে অসুস্থ। শত্রুরা ‘তাবিজ’ করায় ওই সময় থেকে ছোট ছেলে নুরুন্নবী অপ্রকৃতিস্থ হন। এরপর ছোট ভাইয়ের সেবা করতে গিয়ে বড় ভাই ফজলুলও অসুস্থ হয়ে পড়েন।
লতিফ স্বীকার করেন, পরিবারের তিন সদস্য দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ হলেও তিনি তাঁদের চিকিত্সার ব্যবস্থা করেননি।
ফাতেমা ও তাঁর দুই ছেলে বর্তমানে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মনোরোগ বিভাগে চিকিত্সাধীন। বিভাগের চিকিত্সক ফজলুল বারী বলেন, তাঁরা তিনজন সিজোফ্রেনিয়া রোগে আক্রান্ত। এ ধরনের রোগীরা একা ও আড়ালে থাকতে পছন্দ করেন। কাউকে দেখতে পারেন না। চিকিত্সা করালে তাঁরা সুস্থ হয়ে যাবেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম খালেকুজ্জামান বলেন, মা ও দুই ছেলেকে দীর্ঘদিন ঘরে আটকে রাখার বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। prothom-alo
0 comments:
Post a Comment