অভিযোগ উঠেছে, অনুমতির অতিরিক্ত পণ্য ডিইপিজেড থেকে বের করতে সহযোগিতা করে সুমন এই অর্থ-সম্পদের মালিক হয়েছেন।
সুমনের বাড়ি বরিশাল জেলার বানাড়ীপাড়া উপজেলার সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের উত্তর সাতবাড়ীয়া গ্রামে। তাঁর বাবার নাম মোয়াজ্জেম হাওলাদার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বছর দশেক আগে এলাকার এক শুল্ক কর্মকর্তার মাধ্যমে সুমন ডিইপিজেড শুল্ক কার্যালয়ে কাজ পান। কাস্টমস অফিসে যোগ দেওয়ার কিছু দিনের মধ্যে সুমন বড় কর্তাদের কাছে বিশ্বস্ত হয়ে ওঠেন। এর পর অবৈধ পথে অর্থ উপার্জন করতে থাকেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডেন্ডাবর এলাকার কয়েক ব্যক্তি জানান, সুমন শূন্য হাতে আশুলিয়ায় আসেন। কিন্তু গত চার বছরে সুমন হঠাৎ করে বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক হন।
বানারীপাড়ার সৈয়দকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাতবাড়িয়া গ্রামের মোয়াজ্জেম হাওলাদার আমার পরিচিত। তাঁর পরিবার আর্থিকভাবে তেমন সচ্ছল ছিল না। শুনেছি, তাঁর দুই ছেলে সাভারে বড় চাকরি করেন। আড়াই বছর আগে সুমন গ্রামের বাড়িতে একটি দ্বিতল ভবন নির্মাণ করেন।’
কয়েকজন ঝুট ব্যবসায়ী বলেন, অসাধু কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে তল্লাশি ছাড়াই অনুমতির অতিরিক্ত রপ্তানিযোগ্য পণ্যসহ যেকোনো মালামাল ডিইপিজেড থেকে বের করা সম্ভব। সুমনসহ আরও কয়েকজন এ অপকর্মে সহযোগিতা করে প্রায় মাসেই জনপ্রতি দুই লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করছেন।
তবে ডিইপিজেড কাস্টমসের কর্মকর্তারা জানান, রপ্তানিযোগ্য মালামাল ডিইপিজেড থেকে বের করতে হলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের অনুমতি প্রয়োজন। অনুমতির অতিরিক্ত কোনো মালামাল কাস্টমস বন্ড এলাকার বাইরে নেওয়া যায় না। এ জন্য ডিইপিজেড ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সার্বক্ষণিক নজরদারির ব্যবস্থা আছে।
সুমনের যত সম্পদ: অনুসন্ধানে জানা যায়, বছর খানেক আগে আশুলিয়ার পলাশবাড়ী মৌজার কাঁঠালতলা এলাকায় পাঁচ শতাংশ জমি কেনেন সুমন। জমির মালিক ছিলেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা সাইফুল ইসলাম। তিনি জানান, প্রতি শতাংশ চার লাখ টাকা হিসেবে ২০ লাখ টাকায় তিনি ওই জমি সুমনের কাছে সাফ কবলা মূলে বিক্রি করেন।
তিন বছর আগে সুমন একই মৌজার ডেন্ডাবর নতুন পাড়া এলাকায় সাড়ে তিন শতাংশ জমিসহ একটি একতলা বাড়ি ক্রয় করেন। বর্তমানে এ বাড়িতে তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা বসবাস করছেন। জমিসহ ওই বাড়ির মালিক ছিলেন এলাকার আবদুল হাইয়ের স্ত্রী নুরজাহান বেগম। আবদুল হাই জানান, তাঁর স্ত্রী নুরজাহান ১৫ লাখ টাকায় সুমনের কাছে বাড়িটি বিক্রি করে দেন।
২০০৫ সালে আশুলিয়ার পবনারটেক এলাকায় সোয়া আট শতাংশ জমি ১৫ লাখ টাকায় ক্রয় করেন সুমন। এ ছাড়া বানাড়ীপাড়ায় একটি দ্বিতল বাড়ি নির্মাণ করেছেন তিনি। তাঁর রয়েছে একটি ব্যক্তিগত গাড়িও।
আশুলিয়ার তিন খণ্ড জমি ও বাড়িগাড়ি মিলিয়ে সুমনের সম্পদের বর্তমান দাম এক কোটি টাকারও বেশি হবে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
সুমন যা বলেন: এ ব্যাপারে সুমনের সঙ্গে কথা বলার জন্য একাধিকবার ডিইপিজেডে শুল্ক কার্যালয়ে গিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তাঁর সম্পদের ব্যাপারে কারও কাছে কৈফিয়ত দিতে রাজি নন বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
শুল্ক কর্মকর্তার বক্তব্য: ডিইপিজেড শুল্ক কার্যালয়ের রাজস্ব কর্মকর্তা মনসুর আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সুমন এই কার্যালয়ের স্থায়ী কোনো কর্মচারী নন। খুশি হয়ে যে যা দেন, তা-ই তিনি নেন। এ কার্যালয়ে দুর্নীতির কোনো সুযোগ নেই। প্রথম আলা
0 comments:
Post a Comment