বিবাহ-বিচ্ছেদের দীর্ঘদিন পরও এক নারী স্বামীর পদবি ব্যবহার করে আসছিলেন। এ নিয়ে মামলা গড়ায় ভারতের সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত। ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি এই রায় দেন।
৩৪ বছর বয়সী নিশা বলেন, প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর ১৯৯৫ সালে তাঁকে বিয়ে করেন মুম্বাই পুলিশের সহকারী পরিদর্শক দীনেশ পাতিল। বিয়ের আট মাসের মাথায় পাতিল তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। ১৯৯৭ সালে তিনি (দীনেশ) বিবাহ-বিচ্ছেদের আবেদন করেন। ২০০৬ সালে একটি পারিবারিক আদালত বিবাহ-বিচ্ছেদ আবেদনের নিষ্পত্তি করেন।
দীনেশের অভিযোগ, আদালতে বিষয়টি নিষ্পত্তি হওয়ার পরও নিশা তাঁর পদবি (পাতিল) ব্যবহার করছিলেন। এমনকি বিভিন্ন জায়গায় তাঁর নামের অপব্যবহারও করে আসছিলেন। সাবেক স্ত্রীর এমন কর্মকাণ্ডের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ব্যবস্থা করতে তিনি নতুন করে প্রক্রিয়া শুরু করেন। পারিবারিক আদালত ২০০৯ সালে স্বামীর পদবি ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। রায়ে বলা হয়, বিবাহ-বিচ্ছেদের পরও স্বামীর পদবি ব্যবহার করলে লোকজন বিভ্রান্ত হতে পারেন। এরপর ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্টও পারিবারিক আদালতের রায়ের প্রতি সমর্থন জানান। এরপর হাইকোর্টের রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন নিশা। তিনি তাঁর আবেদনে উল্লেখ করেন, পদবি ব্যবহারের ক্ষেত্রে রায় দেওয়ার এখতিয়ার পারিবারিক আদালতের নেই। কিন্তু সম্প্রতি নিশার আবেদন খারিজ করে দিয়ে দীনেশ পাতিলের পক্ষে রায় দেন সুপ্রিম কোর্ট।
দীনেশের আইনজীবী আর টি লালওয়ানি বলেন, ‘এ বিষয়ে কোনো আইন ছিল না। এখন সুপ্রিম কোর্টের এই আদেশে একটি নজির তৈরি হলো যাতে যে কোনো পুরুষ বিচ্ছেদের পর তাঁর সাবেক স্ত্রীর পদবি ব্যবহার নিয়ে কথা বলতে পারবেন।’ তিনি বলেন, ‘একজন নারী বিয়ের কল্যাণে নতুন পদবীর অধিকারী হন। তাই বিয়ে ভেঙে গেলে, ওই পুরুষের অধিকার আছে সাবেক স্ত্রীকে তাঁর নাম ব্যবহার থেকে বিরত রাখার।’
তবে এই বছরই অপর একটি মামলায় ভারতের অতিরিক্ত সলিসিটার জেনারেল দারিউস খাম্বাটা আদালতে এই অভিমত দিয়েছিলেন যে বিচ্ছেদের পরেও সাবেক স্বামীর পদবী ব্যবহারের অধিকার আছে একজন নারীর। কারণ সংবিধান অনুযায়ী পদবী ব্যবহার যে কোনো নাগরিকের মৌলিক অধিকার। এর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের কোনো সম্পর্ক নেই। উৎস
0 comments:
Post a Comment