সদ্য ডিম ফুটে বের হওয়া কুমির ছানাগুলো
ছবি: প্রথম আলো
তবে এর মধ্যে দুটি ছানা মারা গেছে। ছানাগুলোকে ৩৬ ঘণ্টা নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে রাখা হয়েছে। আজ বুধবার তা কেন্দ্রের লালন-পালন প্যানে ছেড়ে দেওয়া হবে।
বন বিভাগ সূত্র জানায়, কুমির জুলিয়েট গত ১৪ মে প্রজননকেন্দ্রে ৪৪টি ডিম দেয়। এর মধ্যে ছয়টি ডিম ভেঙে যায়। ৩৮টি ডিম কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কুমির বিশেষজ্ঞ আ. রবের তত্ত্বাবধানে টানা ৮৭ দিন কেন্দ্রের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে রাখা হয়। এর মধ্যে ২৯টি ডিম থেকে ছানার জন্ম হয়। এর মধ্যে মারা যায় দুটি।
সূত্র জানায়, বর্তমানে এই প্রজননকেন্দ্রে ছোট-বড় মিলিয়ে মোট কুমিরের সংখ্যা ১১১টি। এর মধ্যে বড় কুমির পাঁচটি। চারটি নারী কুমির, একটি পুরুষ। নারী কুমিরের মধ্যে একটির নাম জুলিয়েট। আর একমাত্র পুরুষ কুমিরটির নাম রোমিও।
জুলিয়েটের বর্তমান বয়স ২২ বছর। গত সাত বছরে জুলিয়েটের ডিম থেকে মোট ১৭৫টি ছানা জন্মেছে। এর মধ্যে ২০০৫ সালে ১৯টি ডিমের মধ্যে ১৬টি, ২০০৬ সালে ৩৬টি ডিমের মধ্যে ২৬টি, ২০০৭ সালের ৪১টি ডিমের মধ্যে ২৯টি, ২০০৮ সালে ৪১টি ডিমের মধ্যে ৩০টি, ২০০৯ সালে ৪১টি ডিমের মধ্যে ২৭টি এবং ২০১০ সালে ৪২টি ডিমের মধ্যে ২০টি ছানার জন্ম হয়। আর গত সোম ও মঙ্গলবার ২৭টি ছানা জন্মে। জুলিয়েট আরও ৪০ বছর পর্যন্ত ডিম দিতে পারবে। এ প্রজাতির কুমির সাধারণত ৮০ থেকে ১০০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে।
বিলুপ্তপ্রায় লবণাক্ত পানির প্রজাতির কুমিরের প্রজনন বৃদ্ধি ও লালন-পালনের জন্য ২০০২ সালে পূর্ব সুন্দরবনের করমজল পর্যটনকেন্দ্রে বায়োডাইভার্সিটি কনজারভেশন প্রকল্পের আওতায় ৩২ লাখ টাকা অর্থায়নে আট একর জায়গার ওপর দেশের একমাত্র সরকারি এই কুমির প্রজননকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়।
কুমির বিশেষজ্ঞ আ. রব জানান, ভ্রূণের মৃত্যু ও তাপমাত্রার তারতম্যের কারণে এবার অন্য ডিমগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, বাচ্চা ফোটানোর জন্য প্রতিবছরই নতুন যন্ত্রপাতি লাগে। নতুন যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হলে প্রতিটি ডিম থেকেই বাচ্চা ফোটানো সম্ভব। আ. রব জানান, কেন্দ্রে কুমিরের খাদ্যের অভাব রয়েছে। বন বিভাগ থেকে যে বরাদ্দ পাওয়া যায়, তা প্রয়োজনের তুলনায় শতকরা মাত্র ৩০ ভাগ। কুমিরের চিকিৎসার জন্য আলাদা কোনো বরাদ্দও নেই।
বরাদ্দস্বল্পতার কথা স্বীকার করে সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মিহির কুমার দো প্রথম আলোকে বলেন, অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
সুমেল সারাফাত, সুন্দরবনের করমজল থেকে ফিরে প্রথম আলো
0 comments:
Post a Comment