রাহেলা বেগমকে গাছের ছাল খাওয়াচ্ছেন কথিত কবিরাজ সাইদুর রহমান
ছবি: প্রথম আলো
বাগমারা থানার পুলিশ খবর পেয়ে সাইদুরকে থানায় ডেকে পাঠায়। সাইদুর আর এ ধরনের কাজ করবেন না বলে পুলিশের কাছে তওবা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার তাহিরএকডালা গ্রামের আফাজ উদ্দিনের স্ত্রী রাহেলা বেগম (৭২) প্রায় তিন মাস আগে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হন। বিভিন্ন স্থানে চিকিৎ সা নিয়ে সুস্থ না হওয়ায় আফাজ একই উপজেলার গোপালপুরে কথিত কবিরাজ সাইদুরের কাছে পরামর্শ নিতে যান। আফাজ জানান, সাইদুর তাঁর স্ত্রীকে সুস্থ করে দেওয়ার শর্তে ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। এতে তিনি সম্মত হয়ে গতকাল সকালে স্ত্রীকে নিয়ে সাইদুরের বাড়িতে যান। সাইদুর তাঁর বাড়ির উঠানে গর্ত করে রাহেলাকে সকাল নয়টার দিকে সেখানে নামিয়ে দেন। মাটি দিয়ে রাহেলার কোমর-পর্যন্ত পুঁতে ফেলা হয়। সাইদুর মাঝেমধ্যে ঝাড়-ফুঁক ও কিছু গাছের ছাল খেতে দেন রাহেলাকে। এভাবে রাহেলাকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ওই গর্তে রাখা হয়। বেলা দুইটার দিকে গর্ত থেকে অসুস্থ অবস্থায় রাহেলাকে তুলে আনা হয়।
আফাজ জানান, সাইদুরকে পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছেন। রাহেলা সুস্থ হলে আরও পাঁচ হাজার টাকা দিতে হবে।
সাইদুর দাবি করেন, ‘এই চিকিৎ সায় রাহেলা সুস্থ হবেন।’ এর বিনিময়ে ১০ হাজার টাকা পাবেন বলেও স্বীকার করেন সাইদুর। তিনি দাবি করেন, ৩৪ বছর ধরে এই চিকিৎ সা দিয়ে আসছেন। ভারতের এক কবিরাজসহ তাঁর ৩২ জন ওস্তাদের কাছ থেকে এ চিকিৎ সা শিখেছেন।
পাঁচ ঘণ্টা ধরে চিকিৎ সার (!) পরও রাহেলা সুস্থ হলেন না কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সময় লাগবে। আরও চিকিৎ সা দিতে হবে।’
বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন শেখ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা কোনো চিকিৎ সা পদ্ধতি নয়। কথিত ওই কবিরাজের শাস্তি হওয়া উচিত।’ বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন-অর-রশিদ জানান, সাইদুর আর এমন কাজ করবেন না বলে তওবা করেছেন। তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
0 comments:
Post a Comment