
স্বাস্থ্য বিভাগের সহায়তায় পরিচালিত এ গবেষণার মূলে রয়েছেন স্নায়ুবিজ্ঞান-বিষয়ক গবেষক স্টিফেন হিকস। এর মধ্যে মৌলিক গবেষণার কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে চশমার আদি নমুনা তৈরির কাজ।
গবেষকদের দাবি, ‘স্মার্ট চশমা’ বা ‘বায়োনিক চশমা’ বলে পরিচিত এমন চশমা তাঁরা উদ্ভাবন করছেন, যা খুদে ক্যামেরা ও পকেট কম্পিউটারের মাধ্যমে চশমাধারী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীকে সামনে থাকা বস্তু ও লোকজন সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য দেবে এবং সচেতন করবে।
স্টিফেন হিকস বলেন, এই চশমার স্বচ্ছ লেন্সে থাকবে লাইট-এমিটিং ডিওডস (এলইডি), যা আলোর কণিকার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর কাঠামো ফুটিয়ে তুলতে পারবে। চশমার ফ্রেমের দুপাশে পিনের মাথার মতো খুদে ক্যামেরা সামনে যা দেখবে, সেই তথ্য পাঠিয়ে দেবে পকেটে রাখা মোবাইল ফোনসেটের মতো খুদে কম্পিউটারে। সেই তথ্য থেকে কম্পিউটার অগণিত খুদে বিন্দুর মাধ্যমে দৃশ্যমান ব্যক্তি বা বস্তুর কাঠামো তৈরি করে পাঠাবে লেন্সে। লেন্সে বসানো এলইডি-ব্যবস্থা এই বিন্দুকে আলোকিত করে দৃশ্যমান জিনিস সম্পর্কে চশমাধারীকে তথ্য দেবে। যেমন আলোর কাঠামো নড়াচড়া করলে চশমাধারী বুঝে নেবে সামনে মানুষ আছে। আর তা যদি নিরেট কাঠামো হয়, তখন বুঝবে সামনে জড়বস্তু রয়েছে। যাদের এভাবে দেখতেও সমস্যা, তারা সে ক্ষেত্রে চশমার সঙ্গে থাকা শ্রবণযন্ত্রের সুবিধা পাবে।
গবেষকদের দাবি, এই চশমা পরে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা বিপণিকেন্দ্র ও ব্যস্ত রেলস্টেশনে চলাফেরা করতে পারবেন। পড়তে পারবেন বাসের নম্বর ও ক্যাশ যন্ত্রে কম্পিউটার-নিয়ন্ত্রিত হিসাব। চশমাটি যন্ত্রসংবলিত হলেও ওজনে হবে হালকা। কিনতে অর্থও বেশি লাগবে না। পরিকল্পনামতো কাজ এগোলে ২০১৪ সালে এটি বাজারে ছাড়া যাবে বলে আশা করছেন গবেষকেরা। এর মাধ্যমে যুক্তরাজ্যে বেশির ভাগ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীর দেখার সমস্যা দূর হবে বলে তাঁরা আশা করছেন। দেশটিতে এখন তিন লাখ নিবন্ধিত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী রয়েছেন। এর মধ্যে বয়স্ক প্রতিবন্ধীরা সুফল বেশি পাবেন।
এর আগেও বিজ্ঞানীরা এ ধরনের যান্ত্রিক চশমা উদ্ভাবনের চেষ্টা চালান। চেষ্টার ফলে যে চশমা পাওয়া যায়, তা ছিল জবরজং ক্যামেরা ও ভারী কম্পিউটারসহ একটি কালো চশমা। দিন দিন প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে এখন এ চশমাকে এমন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যাবে, সাধারণ অন্য সব চশমা থেকে এটিকে সহজে আলাদা করা যাবে না। যুক্তরাজ্যের রয়্যাল সোসাইটির সামার সায়েন্স এক্সিবিশনের তথ্য অনুযায়ী, এক হাজার পাউন্ডেরও কম মূল্যে কেনা যাবে এই চশমা।
গবেষক স্টিফেন হিকস বলেন, এটি চিন্তা করতেই মন ভরে যাচ্ছে যে আমরা এমন এক চশমা তৈরিতে সক্ষম হব, যা বেশির ভাগ লোকের কেনার সাধ্য থাকবে। এতে বেশির ভাগ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী উপকৃত হবে। ডেইলি মেইল অনলাইন।
0 comments:
Post a Comment