সালমা আনোয়ার, দিনাজপুর।
পরামর্শ: কোনো কোনো সময় শিশু এমন করতে পারে। মাথায় হাত দিয়ে আঘাত করতে পারে। বুকের দুধ খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির সব রকম খাবার খাওয়াতে উৎসাহ দিন। জোর করে খাওয়াবেন না। মাথা যেন কখনো দেয়ালে আঘাত না করে। সেদিকে খেয়াল রাখবেন। যদি দেয়ালে আঘাত করার প্রবণতা দেখেন তবে শিশুবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
রোজিনা ইব্রাহীম
বারইয়ারহাট, মিরসরাই, চট্টগ্রাম।
পরামর্শ: বর্তমানে টাইফয়েড চিকিৎসার পরে শরীরে অন্য কোনো জটিলতা দেখা যায় না। রুচি হওয়ার জন্য এবং শরীর বৃদ্ধির জন্য কোনো ওষুধ নেই। বাড়ির হাঁড়ির ঘরের খাবার ডাল, ভাত, সবজি, মাছ, মাংস, ফলমুল ওর রুচিমতো খাওয়ার জন্য উৎসাহ দিন। খাওয়ার ব্যাপারে জোর করবেন না। এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে।
সুমি, শ্রীপুর, গাজীপুর।
পরামর্শ: সার্বিকভাবে আপনার শিশু সুস্থ আছে। বাচ্চা আট মাসে অর্থাৎ ৩৪ সপ্তাহে হয়ে থাকলে—ওজন হয়তো আনুমানিক দেড় কেজি ছিল। এখন ওজন তিন কেজি বলেছেন, ওজন ঠিক আছে। বুকের দুধ খাওয়া অব্যাহত রেখে ভালো করেছেন। নাভিজনিত সমস্যাটি Small umbilical hernia হতে পারে। এটি এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে।
শামীম আরা, নিকুঞ্জ-২, ঢাকা।
পরামর্শ: আপনার বাচ্চার ওজন ও পুষ্টি ঠিক আছে। খুব বেশি চিন্তার কিছু নেই। স্বাভাবিক অবস্থায়ও এ ধরনের পায়খানা হতে পারে। বাচ্চার যেহেতু গ্রোথ ঠিক আছে, একবার হয়তো পায়খানার কালচার করা যেতে পারে। কালচার রিপোর্ট অনুযায়ী যদি জিআরডিআর পাওয়া যায় তবে তার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করানো যেতে পারে।
মো. ফারুক হোসেন
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।
পরামর্শ: অপারেশনের পর তালু কাটা বা cleft palate অপারেশনে ঠিক হয়ে থাকলে আর করানোর দরকার নেই। যেহেতু প্রথম থেকেই সে কথা বলতে পারত না তাই কথা বলতে একটু সময় লাগবে। সাধারণত ১৩-১৪ মাস বয়সে বাচ্চারা বাবা-মা বলা শেখে। ওর যেহেতু সমস্যা ছিল তাই ওর সঙ্গে কথা বলতে হবে—ওকে সময় দিতে হবে। টেলিভিশন দেখলে এমনিতেও কথা বলতে দেরি হয়। এ বিষয়গুলো খেয়াল করুন। বাচ্চা আস্তে আস্তে কথা বলবে।
আমার ছেলের বেশির ভাগ সময় মাথা গরম থাকে। এটা এক মাস ধরে হচ্ছে। আর দু-তিন দিন ধরে মাঝেমধ্যে চোখ সামান্য লাল দেখাচ্ছে। ওর চোখ ধবধবে সাদা হয়নি এখনো।
ও এমনিতে অযথা কান্নাকাটি করে না। এবং খাওয়া, ঘুম সব ঠিক আছে। পায়খানা করে দিনে একবার। সাধারণত দু-এক দিন পরপর পায়খানা করে। ওর পায়খানা ও বায়ু ছাড়ায় খুব দুর্গন্ধ। মাঝেমধ্যে বমি করে। জন্মের ১৫ দিন পর ঘন ঘন পায়খানা ও বমি করত। তখন তাকে হোমিও ওষুধ খাওয়ানো হলে ভালো হয়ে যায়। ওর পিঠের নিচের দিকে নীল ছোপ ছোপ দাগ আছে। কয়েক দিন ধরে মুখ দিয়ে লালা পড়ছে। ও মাথায় কোনো আঘাত পায়নি। মাথার এ সমস্যার জন্য তাকে হোমিও ওষুধ খাওয়ানো হয়েছিল, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। শুয়ে থাকলে মাথার নিচে খুব ঘামে। আমার ছেলের এ সমস্যা নিয়ে আমি খুবই দুশ্চিন্তায় আছি।
শাহানা আক্তার, ঝিকরগাছা, যশোর।
পরামর্শ: আপনার ছেলে সার্বিকভাবে সুস্থ আছে। বৃদ্ধির সময় শিশুদের মাথা স্বাভাবিকভাবে গরম থাকে। দুশ্চিন্তা করবেন না, শুধু বুকের দুধ দেবেন আপনার শিশুকে। অন্য কিছু খাওয়াবেন না। পায়খানা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
সামিয়া, সিলেট।
পরামর্শ: মানুষের ডান দিকে জন্মগতভাবে স্বাভাবিকভাবেই হূৎপিণ্ড থাকতে পারে। একে বলে ডেস্কটোকার্ডিয়া। এ ধরনের মানুষ সুস্থ-স্বাভাবিক জীবন কাটাতে পারে। আপনার শিশুও পারবে। আপনার ছেলের ডান দিকে হার্ট হওয়াতে কোনো অসুবিধা হবে না। যে হিক্কা ওঠে বলেছেন তার সঙ্গে হার্টের কোনো সম্পর্ক নেই। ছেলেকে কাঁধের ওপর নিয়ে গ্যাস বের করার চেষ্টা করুন। এ ছাড়া সিরাপ ডমপিরিডন ১.৫ মিলি দিনে দুই থেকে তিন বার চার-পাঁচ দিন দেবেন। দুই বছর বয়স পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়াবেন। সঙ্গে স্বাভাবিক ঘরের খাবার দেবেন। আশা করি, আপনার বাচ্চার বৃদ্ধি ভালোভাবেই হবে। এবং ডান দিকের হার্ট নিয়ে সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে।
মলি, ব্রাহ্মপল্লী, ময়মনসিংহ।
পরামর্শ: নরম আলাদা গোটার মতো চামড়া বা ত্বক উঁচু হওয়াকে স্কিন ট্যাগ বলা হয়ে থাকে। এর জন্য কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। এর জন্য সাধারণত রক্তপাতও দেখা যায় না। তবে সাধারণত মলদ্বারে অ্যানাল ফিশার হলে রক্তপাত হতে পারে। তবে এ বয়সের বাচ্চাদের এটা না হওয়ারই কথা। স্কিন ট্যাগের জন্য কোনো ওষুুধের দরকার নেই। যদি মাঝেমধ্যে রক্তপাত হতেই থাকে তাহলে যে চিকিৎসককে দেখাচ্ছেন তাঁর সঙ্গে পরামর্শ করুন। অ্যানাল ফিশার কি না পরীক্ষা করান। চিকিৎসকের পরামর্শমতো ব্যবস্থা নিন।
মো. আবদুল্লাহ আল মামুন
কামারখন্দ, সিরাজগঞ্জ।
পরামর্শ: সাধারণত বেটা থ্যালাসেমিয়া মাইনরের কোনো চিকিৎসা নেই। হয়তো মা অথবা বাবা দুজনের একজনের বেটা থ্যালাসেমিয়া মাইনর বা ট্রেইট আছে। হিমোগ্লোবিন ইলেক্ট্রোফোরেসিস পরীক্ষা করলে এটা জানা যাবে। বাবার বা মায়ের একজনের যদি পজিটিভ হয় তাহলে সাধারণত শিশু তাতে আক্রান্ত হয় না। যদি দুজনের পজিটিভ হয় তবে এ ধরনের ক্ষেত্রে বেটা থ্যালাসেমিয়া ট্রেইট হওয়ার সম্ভাবনা প্রতি চারজনে একজন। আপনার ভাইয়ের ভবিষ্যতে যেন কোনো নিকটাত্মীয়ের সঙ্গে বিয়ে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা দরকার। মাঝেমধ্যে জ্বর এলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন। জ্বরের সঙ্গে এ রোগের কোনো সম্পর্ক নেই।
মো. মনিরুজ্জামান
কমলনগর, লক্ষ্মীপুর।
পরামর্শ: প্রস্রাব-পায়খানার পর ভালোভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে দেবেন। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখবেন। এতে করে আপনার মেয়ে সুস্থ না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। চিকিৎসক কোনো অ্যান্টিবায়োটিক অথবা মেট্রোনিডাজল সঙ্গে দিতে পারেন। খুশকির জন্য যে শ্যাম্পো পাওয়া যায় তা ব্যবহার করতে পারেন। বেশি খুশকি হলে ১% হাইড্রোকর্টিসন ক্রিম মাথায় লাগাবেন কিন্তু ঘষবেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, চট্টগ্রাম।
পরামর্শ: শিশুর বর্তমান ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম আছে। এটা স্বাভাবিক কি না তা নির্ভর করে ওর জন্মের ওজনের ওপর এবং বাবা-মায়ের উচ্চতার ওপর। যেহেতু আপনার শিশু স্বাভাবিক হাঁটে, দৌড়ায় তাই ওর বৃদ্ধির দিক থেকে বিশেষ কোনো চিন্তার কারণ নেই বলেই মনে হয়। শিশুদের বৃদ্ধি ঠিকভাবে হচ্ছে কি না সেটা মাপার এবং গ্রোথ চার্টের সঙ্গে বাবা-মায়ের গ্রোথ মিলিয়ে সঠিকভাবে বলা সম্ভব হবে। প্রয়োজনে একজন শিশুবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
রিপন মিয়া, মাধবপুর, হবিগঞ্জ।
পরামর্শ: আপনার শিশুকে Fluticason নাকের স্প্রে এক পাফ করে দুই নাকে রোজ একবার ব্যবহার করে দু সপ্তাহের মধ্যে উপকার পেলে চার সপ্তাহ ব্যবহার করুন। এতে ভালো না হলে কোনো নাক-কান গলা বিশেষজ্ঞ ও শিশুবিশেষজ্ঞের পরামর্শমতো ব্যবস্থা নিন।
বাসন্তী রানী
ভান্ডারি, রানীশংকৈল, ঠাকুরগাঁও।
পরামর্শ: সাধারণত Cyclical বমিতে এটা হতে পারে। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে কদাচিৎ পেটের নাড়ি-ভুঁড়ির ওলটপালট হলে (Malrotation of the gut) এমনটি হতে পারে। আপনি একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। আশা করি, অচিরেই এটি সমাধান হয়ে যাবে।
চিকিৎসার পর মোটামুটি ভালো হয়। এখন এই অবস্থায় আছে। ওর বয়স প্রায় ছয় বছর। কিন্তু এখনো যদি কোনো কারণে কান্না করে, তাহলে প্রায় এক মিনিট শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ থাকে।
ওর মন-মেজাজ খিটখিটে। ছয় বছর বয়সের একটা শিশু যে পরিমাণে বৃদ্ধি পায়, সে ওই পরিমাণে বেড়ে ওঠেনি।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে প্রত্যাশা, এ রোগের বিস্তারিত বর্ণনা দেবেন এবং কোন ধরনের বিশেষজ্ঞের কাছে রোগী দেখাব, তার পরামর্শ দেবেন। আমরা গ্রামে বাস করি। কীভাবে সহজে এ রোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারি?
মো. আবু তাহের
নতুন মুন্সির হাট, ফুলগাজী, ফেনী।
পরামর্শ: জ্বরের সঙ্গে খিঁচুনি শিশুদের একটি সচরাচর সমস্যা। এখন হয়তো আর হবে না। বয়স পার হয়ে গিয়েছে। তবে রাগ হলে, এর জন্য চিকিৎসা হলো ওকে না রাগানো। ওর মুখোমুখি না হওয়া, ওর সঙ্গে জেদ না করা। স্বাভাবিক আচরণ করুন, বাড়ির খাবার খেতে দিন। ফলমুল খেতে দিন, খেলাধুলা করতে দিন। এমনিতেই স্বাভাবিক বৃদ্ধি পাবে।
মো. আ. ওহাব , সেউজগাড়ী বগুড়া।
পরামর্শ: আপনার শিশু সুস্থ। যেহেতু সে শুধু বুকের দুধ খাচ্ছে এ কারণেও ঘনঘন পায়খানা হতে পারে। ওর ওজন যদি ঠিক থাকে তাহলে এ রকম পাতলা পায়খানাতে শরীরের কোনো ক্ষতি হয় না। গুঁড়ো দুধ খাওয়ার জন্য শিশুর পাতলা পায়খানা হতে পারে। সুতরাং গুঁড়ো দুধ খাওয়ানো পরিহার করে ভালো করেছেন। ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধু বুকের দুধ দেবেন। পানিও খাওয়াবেন না। ছয় মাস বয়স হলে বুকের দুধের পাশাপাশি বাড়ির হাঁড়ির খাবার দেবেন। এবং দুই বছর পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়াবেন। টিকার সঙ্গে ঘুম কম হওয়ার কোনো কারণ নেই। প্রথমবার টিকা দিলে বাচ্চা এমনিতেই একটু কান্নাকাটি করতে পারে। ঘুম কম হতে পারে। এটি ঠিক হয়ে যাবে।
0 comments:
Post a Comment